বাড়ির চালে পড়ল বিদ্যুৎবাহী তারের খুঁটি। জলঙ্গিতে। নিজস্ব চিত্র
আশঙ্কা সত্যি করে মধ্যরাতের ঝড়ে ক্ষতি করে দিল আম-লিচুর। লকডাউনের প্রভাবে জেলার অর্থনীতি ইতিমধ্যেই ধাক্কা খেয়েছে। আশা ছিল, আম-লিচু বিক্রি করে অর্থনীতির হাল কিছুটা হলেও ফিরবে। এই জেলার এই দুই ফলের বাজারের খুবই নাম রয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঝড়ের ফলে তাতেও প্রভাব পড়ায় চিন্তা বেড়েছে। এমনিতেই এ বার আমের ফলন কম হয়েছে। তার উপরে ঝড়ের পরে অনেক জায়গাতেই চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে।
বুধবার ভোর থেকে নাগাড়ে বৃষ্টির পাশাপাশি ঝোড়ো হাওয়া বইছিল। দিন গড়িয়ে রাত যত এগিয়েছে, হাওয়ার গতিও ততই বেড়েছে। বুধবার গভীর রাতে ঘূর্ণিঝড়ের দাপট দেখা দেয় জেলাজুড়ে। যার জেরে আম-লিচুর ক্ষতি হয়েছে। মুর্শিদাবাদের আম-লিচু চাষিরা জানিয়েছেন, এবছর মুকুল ধরার সময় থেকে একাধিকবার ঝড়বৃষ্টিতে আম-লিচু চাষে ক্ষতি হয়েছে। তার উপরে লকডাউনের বাজারে লিচুর দাম গত বছরের অর্ধেক হয়ে গিয়েছে। বুধবার রাতে ঘূর্ণিঝড় ‘আমপানে’র জেরে গাছ থেকে আম লিচু ঝরে পড়েছে। ভেঙে পড়েছে আম-লিচুর গাছও। জেলা উদ্যান পালন দফতর সূত্রের খবর জেলায় আম-লিচু, কলা, পেঁপে-সহ সব মিলিয়ে ফলের বাগানের চাষ রয়েছে ৩৫ হাজার হেক্টর। উদ্যান পালন দফতরের প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী জেলায় ১৬-১৭ হাজার হেক্টর ফলের জমিতে ঝড়ের প্রভাব পড়েছে।
জেলা উদ্যান পালন দফতরের উপ অধিকর্তা প্রভাস মণ্ডল বলেন, ‘‘ঝড়ে জেলা জুড়ে আম-লিচুর ক্ষতি হয়েছে বলে আমাদের কাছে খবর এসেছে। তবে কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা দেখা হচ্ছে।’’ জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর জেলা জুড়ে ঝড়বৃষ্টি হয়েছে। তবে অপেক্ষাকৃত ভাবে জঙ্গিপুর মহকুমায় ঝড়ের দাপট কম ছিল।
ইসলামপুরের বালুমাটির লিচু চাষি আমজাদ হোসেন বলেন, ‘‘বুধবার রাতের ঝড়ে তিন ভাগের একভাগ লিচু ঝরে পড়েছে। সেই সঙ্গে ঝড়ের জেরে লিচু-ডালে ঘর্ষণ লাগার ফলে রোদ উঠলেই সেই সব লিচু শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যাবে।’’
তাঁর দাবি, ‘‘লকডাউনের জেরে এমনিতেই লিচু ভিন্ রাজ্যে যাচ্ছে না। ফলে গত বারের অর্ধেক দামে তা বিক্রি করতে হচ্ছে। এবারের ঝড় আরও ক্ষতি করে দিল।’’ লালগোলার অমরকুণ্ডার মহম্মদ রফিকুল ইসলামের নিজস্ব ১৫ বিঘা আমের বাগান রয়েছে। এ ছাড়া, তিনি ১৫ বিঘা লিচু বাগান লিজে নিয়েছেন।
রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘‘লিচু সবে পাকতে শুরু করেছিল। কম দামেই স্থানীয় বাজারে তা বিক্রি করছিলাম। কিন্তু ঝড়ের দাপটে তা পড়ে গেল। গাছ থেকে ২৫-৩০ শতাংশ আমও ঝরে পড়েছে।’’
জেলা উদ্যান পালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে মুর্শিদাবাদ জেলায় ৩ হাজার ৮০০হেক্টর জমিতে লিচুর বাগান রয়েছে। ২১ হাজার হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। এ বছর লিচু ভাল ধরলেও কয়েক দফার ঝড়ে তা ক্ষতি হয়েছিল। বুধবারের ঘূর্ণিঝড়ে আরও ক্ষতি করে দিল।
এ বছর আমের মুকুল কম এসেছিল। তা নিয়ে এমনিতেই চিন্তা ছিল চাষিদের। সেই চিন্তা বাড়ল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy