Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Khalilur Rahman

Khalilur-Mamata: নেত্রীর ফোনে ভোটে ভরসা খলিলুরই

নির্বাচন ঘোষণার পরপরই শনিবারই সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোন করেন তাঁকে।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

বিমান হাজরা
জঙ্গিপুর শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৮:০৬
Share: Save:

খলিলুর রহমানকে ফোন করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শমসেরগঞ্জ ও জঙ্গিপুর বিধানসভা নির্বাচনের দায়িত্ব তুলে দিলেন তাঁর হাতে। দলনেত্রীর এই ফোন পেয়ে আপ্লুত খলিলুর রহমান বলছেন, “দিদি আমার উপর আস্থা রেখেছেন। ভাল লাগছে। আমিও দিদিকে কথা দিয়েছি দুটি আসনেই রেকর্ড ভোটের ব্যবধানে জয়লাভের।”

নির্বাচন ঘোষণার পরপরই শনিবারই সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোন করেন তাঁকে। মিনিট তিনেক কথা হয় তাদের মধ্যে। কথা হয়েছে শুধুমাত্র জঙ্গিপুর ও শমসেরগঞ্জের নির্বাচন নিয়েই। সাংসদ খলিলুর দলের জঙ্গিপুর জেলা কমিটির সভাপতি। তিনি বলেন, “এই নির্বাচনে কোনও পৃথক কমিটি করা হচ্ছে না। যে যেখানে দায়িত্বে আছেন তিনি সেখানেই ভোট করবেন। ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোনও বড় প্রকাশ্য সভাও করা যাবে না। বিরোধী দলের সঙ্গে গোলমালে যেতে বারণ করা হয়েছে কর্মীদের। জয় যেখানে নিশ্চিত, সেখানে মাথা ঠান্ডা রেখে সকলকে কাজ করতে হবে।”

খলিলুরের উপর এই বাড়তি দায়িত্ব থেকে পরিষ্কার স্বচ্ছ ভাবমূর্তিতেই আস্থা রাখল দল। তিন বছরেই সাংসদ থেকে দলের শীর্ষে খলিলুর রহমান। দলনেত্রীর সেই ভরসা টিকিয়ে রাখাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ তাঁর কাছে। কংগ্রেস ঘরানার মানুষ হলেও মূলত বিড়ি ব্যবসায়ী হিসেবেই প্রতিষ্ঠা তার। বাবা নুর মহম্মদ একসময় নির্বাচনে লড়লেও জয়ী হতে পারেননি। তাই পরবর্তীতে তাঁর চার ছেলের কেউই আর রাজনীতির ছায়া মাড়াননি কখনও। কংগ্রেস থেকে বার বার চেষ্টা হয়েছে তাঁকে নির্বাচনে দাঁড় করানোর। কিন্তু কখনই রাজি হননি। এমনকি ২০১৬ সালে বিধানসভা নির্বাচনের আগে তার বাড়িতে দু দিন ধরে অবস্থান বিক্ষোভ করে শমসেরগঞ্জের কয়েকশো মানুষ। দাবি ছিল নির্বাচনে প্রার্থী হতে হবে খলিলুর রহমানকে। তখন সদ্য বাইপাস সার্জারি করে আসার কারণ দেখিয়ে হিতাকাঙ্ক্ষীদের ফিরিয়ে দেন তিনি।


রাজনীতিতে বিমুখ সেই খলিলুর রহমানকেই ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঠিক আগে ফরাক্কায় তৃণমূলের দলীয় মঞ্চে তুলে এনে রাজনীতিতে হাতেখড়ি দেন তৎকালীন তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী।

সেই শুরু ৫৮ বছর বয়েসি বিড়ি ব্যবসায়ী খলিলুর রহমানের রাজনৈতিক জীবন। ৬ মাসের মধ্যেই জঙ্গিপুরের সাংসদ। আর ফিরে তাকাতে হয়নি পিছনে। কখনও দলের অবিভক্ত মুর্শিদাবাদের কোঅর্ডিনেটর, কখনও স্টিয়ারিং কমিটির চেয়ারম্যান। সদ্য ঘোষিত তৃণমূলের জঙ্গিপুর জেলা কমিটির সভাপতি। রাজনৈতিক নেতা খলিলুর গত তিন বছরে মুর্শিদাবাদ চষে বেরিয়েছেন। তৃণমূলের গোষ্ঠী রাজনীতির কথা ভাল জানেন তিনি। তাই সে সবে মাথা না গলিয়ে যে যখন তাদের সভায় ডেকেছেন, সেখানেই গিয়েছেন। ফলে সকলের কাছেই তাঁর গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে। শাসক দলের মধ্যে রাজনৈতিক ভিড়ে অনেকটাই ব্যতিক্রমী হয়ে নজর কেড়ে নিতে পেরেছেন খলিলুর।

তৃণমূলের জাকির ঘনিষ্ট ব্লক সভাপতি গৌতম ঘোষ। সিপিএমের নিচুতলা থেকে উঠে আসা গৌতম বলছেন, “সাধারণ মানুষের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক রেখে চলার মানুষ তিনি। ধীর স্থির ও ঠান্ডা প্রকৃতির। গোটা জেলার সর্বোচ্চ পদে থেকে কখনও কোনও উত্তেজনা, কুবাক্য, বিতর্কিত মন্তব্য শোনা যায়নি তাঁর মুখ থেকে। কেউ তাঁর বাড়িতে গেলে তাঁকে ফিরিয়ে না দিয়ে তাঁর কথা শুনেছেন, তাকে ভরসা দিয়েছেন। তাই দলের সকলের কাছের মানুষ হয়ে উঠতে পেরেছেন তিনি। দলনেত্রী তাই তাঁর উপর ভরসা করে দায়িত্ব দিয়েছেন।”

১৯৯৮ সালের প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে রয়েছেন দলের মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি শেখ ফুরকান। যতদিন গিয়েছে দলের মধ্যে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন তাই নয়, দলে কখনও কোনও ওজনদার পদও পাননি তিনি। বিরোধী দল থেকে আসা নবাগতদের ভিড়ে হারিয়েছে তার সাংগঠনিক পরিচয়ও।

ফুরকান বলছেন, “আসলে এখন সব সাংসদ ও বিধায়ক ভিত্তিক রাজনীতি। তবু বলতে বাধা নেই রাজ্যে যত জন দলীয় সাংসদ রয়েছেন তাদের মধ্যে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির মানুষ খলিলুর রহমান। সকলকে নিয়ে চলার মানসিকতা তাঁর আছে। তাই দলনেত্রীর সবচেয়ে বিশ্বাসভাজন হয়ে উঠতে পেরেছেন এত দ্রুত। নেত্রীও এটা বিশ্বাস করেন বলেই তাকে দায়িত্ব দিয়েছেন।” প্রাক্তন মন্ত্রী জাকির বলছেন, “উনি আমার অভিভাবকের মত। সকলের ভরসার পাত্র, আমারও।”

অন্য বিষয়গুলি:

Khalilur Rahman Mamata Banerjee Jangipur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy