Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
TMC

‘বহিরাগত’ প্রার্থী নিয়ে ক্ষোভ তৃণমূলের অন্দরেই

তৃণমূলের নতুন পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের সংখ্যাগরিষ্ঠ এবারও দলীয় বিধায়কের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে নেমে পড়েছেন সাগরদিঘিতে। তারা প্রকাশ্যেই দাবি তুলেছেন, ভূমিপুত্র প্রার্থী চাই সাগরদিঘিতে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

বিমান হাজরা
সাগরদিঘি শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২০ ০১:৩৫
Share: Save:

জোটের জটে ২০১৬ সালে সাগরদিঘিতে উতরে গিয়ে মুখ রক্ষা করেছিল তৃণমূল। জয়ী হয়েছিলেন সুব্রত সাহা। কংগ্রেস ও সিপিএম বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াই করতে যাওয়ার ফল পেয়েছিল হাতে নাতে। জোটের দুই দলের সম্মিলিত ভোট ৭৮৯৮৮উঠলেও মাত্র ৪৪৮১৭ ভোট পেয়ে সাগরদিঘি দখল করেছিলেন সুব্রত। সেবারও তৃণমূলের তৎকালীন পঞ্চায়েত সমিতি ও প্রধানেরা প্রকাশ্যে সুব্রতবাবুর বিরোধিতা করেছিলেন তাই নয়, নির্দলীয় প্রার্থী দাঁড় করিয়েছিলেন দলেরই এক পঞ্চায়েত প্রধানকে। ভোট কেটেছিলেন তিনি ঠিকই, কিন্তু সে ভোটের পুরোটাই সুব্রতবাবুর স্বপক্ষে যুক্ত হলেও জোটের ভোট টপকাতে পারতেন না তিনি। বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াইয়ের খেসারত দিতে হয়েছিল জোটকে।

এবার সাগরদিঘিতে বিরোধী কংগ্রেস ও সিপিএম জোট অনেকটাই সংযত। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জ্যোতিরূপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, “ এবারে জোটের প্রার্থী হবেন একজন। দুই দলের নেতৃত্ব একমত হয়ে যাকে প্রার্থী করবেন তাকেই মেনে নেব আমরা। বন্ধুত্বপূর্ণ লড়াইয়ের পুনরাবৃত্তি এবার আর হবে না।”

কিন্তু তৃণমূলের অন্দরের রাজনৈতিক পরিস্থিতির এ বারেও বদল ঘটেনি এক চুলও। তৃণমূলের নতুন পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের সংখ্যাগরিষ্ঠ এবারও দলীয় বিধায়কের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে নেমে পড়েছেন সাগরদিঘিতে। তারা প্রকাশ্যেই দাবি তুলেছেন, ভূমিপুত্র প্রার্থী চাই সাগরদিঘিতে। কোনও রাখ ঢাক না রেখেই সাগরদিঘি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বেরাজুল ইসলাম বলছেন, “আমরা দলের বর্তমান বহিরাগত বিধায়ককে মেনে নেব না। ৮০ শতাংশ পঞ্চায়েত সদস্য একজোট হয়ে দাবি করেছি সাগরদিঘির বাসিন্দা যাকে খুশি প্রার্থী করুক তৃণমূল। কিন্তু কোনওমতেই সাগরদিঘির বাইরের কাউকে মেনে নেব না আমরা।”

সুব্রতবাবুকে দল ফের প্রার্থী করলে কি করবেন ? সপাটে উত্তর বেরাজুলের, “মানব না। আলাদা প্রার্থী দেব কি না, ঠিক নেই। তবে দলের বর্তমান বিধায়ককে হারাবার জন্য যতদূর যেতে হয় যাব।”

চার দশকেরও বেশি সময় ধরে মুর্শিদাবাদে রাজনীতি করছেন সুব্রত সাহা। এক সময় গনিখান চৌধুরীর অত্যন্ত স্নেহধন্য ছিলেন সুব্রত।

তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে অতীশ সিংহের মৃত্যু হলে দলের জেলা সভাপতি করা হয় সুব্রতকে। সেই সূত্রেই ২০১১ সালে সাগরদিঘিতে তৃণমূল প্রার্থী হয়ে কংগ্রেসের মধ্যে বড়সড় ভাঙন ধরিয়ে জেলায় দলের একমাত্র বিধায়ক হন তিনি। কপাল ফেরে তাঁর। দায়িত্ব পান প্রতিমন্ত্রীর।

তারপরের ইতিহাস সকলেরই জানা। মন্ত্রিত্ব হারানো, দলের মধ্যে তাঁকে ঘিরে চলতে থাকা ঘরোয়া কোন্দল। যার পরিণতিই তাকে বার বার কঠিন চ্যালেঞ্জের মধ্যে ফেলেছে সাগরদিঘিতে।

বিধায়ক হিসেবে সুব্রতবাবুর বিরুদ্ধে আর যাই অভিযোগ থাক সাগরদিঘিতে তার জনসংযোগের ঘাটতির অভিযোগ কেউ তুলতে পারবেন না। তার অনুগত ব্লক সভাপতি নুরজামাল শেখের বিরুদ্ধেও কোনও দুর্নীতি ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগ শোনা যায়নি।

এবারে তিনি “হারবেন” রব তুলে বিরোধী ও অন্তর্দলীয় রাজনীতি যখন প্রস্তুতি নিচ্ছে তখন সাগরদিঘিতে দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে এসেও সুব্রতবাবু অকপটে বলছেন, “সাগরদিঘি তৃণমূলের আছে, তৃণমূলেরই থাকবে। মিলিয়ে নেবেন।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy