প্রতীকী ছবি।
স্বামীকে না জানিয়ে ঋণ নিয়েছিলেন। গত সোমবার ছিল ঋণের কিস্তির টাকা জমা দেওয়ার দিন। সে জন্য স্বামীর কাছ থেকে টাকা চেয়েছিলেন সালারের স্বরমস্তিপুরের ফজলি বিবি (৫১)। অভিযোগ, সেই ‘অপরাধে’ তাঁকে পিটিয়ে খুন করল তাঁর স্বামী। এই ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
স্থানীয় এবং পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত ইসলাম শেখের সঙ্গে তার স্ত্রীর মাঝেমধ্যেই বচসা বাধত। সেই সময় প্রায়ই স্ত্রীকে ইসলাম মারধর করত বলে অভিযোগ। এরই মধ্যে, রমজান মাস শুরুর আগে স্বামীকে না জানিয়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠী থেকে বেশ কিছু টাকা ঋণ নিয়েছিলেন ফজলি। প্রতি সপ্তাহে সেই ঋণের কিস্তির টাকা জমা দিতে হত। গত সোমবার কিস্তির টাকা জমা দেবেন বলে স্বামীর কাছে পাঁতশো টাকা চান ওই প্রৌঢ়া। অভিযোগ, সে সময় মেজাজ হারিয়ে স্ত্রীকে মারতে শুরু করে ইসলাম। পরিবারের অন্য সদস্যদের মধ্যস্থতায় সাময়িক
বিবাদ মেটে।
পুলিশকে ওই দম্পতির ছেলে আনু শেখ জানিয়েছেন, রাতে ফের তাঁর বাবা-মার মধ্যে বচসা শুরু হয়। তাঁর কথায়, ‘‘আমি পাশের ঘরে শুয়ে ছিলাম। রাতে চেঁচামেচির শব্দ শুনতে পেয়ে ঘুম ভেঙে যায়। দেখি, মা’কে মারধর করছে বাবা। আমি বাধা দিতে গেলে বাবা আমাকেও গালিগালাজ করতে থাকেন।’’
এ দিকে, মঙ্গলবার সকাল হতেই গবাদি পশুর জন্য ঘাস কাটতে বেরিয়ে যায় ইসলাম। বেলা গড়িয়ে যাওয়ার পরেও ফজলি বিবির কোনও সাড়াশব্দ না পেয়ে তাঁর ঘরে যান আনুরা। দেখেন, সংজ্ঞাহীন অবস্থায় মাটিতে পড়ে রয়েছেন ওই প্রৌঢ়া। মামারবাড়িতে খবর দেন আনু। পরে তাঁরা ফজলি বিবিকে সালার গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা জানান, তিনি মৃত। দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠানো হয়েছে। তবে পুলিশকে আনু জানিয়েছেন, বাবার মারধরেই তাঁর মায়ের মৃত্যু হয়েছে।
আহত স্ত্রীকে হাসপাতালে না নিয়ে গিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় জামাইয়ের বিরুদ্ধে মেয়েকে পরিকল্পিত ভাবে খুনের অভিযোগ এনেছেন ফজলি বিবির মা রেজিনা বিবি। এদিন তিনি বলেন, ‘‘এরকম নিষ্ঠুরও মানুষ হতে পারে। স্ত্রী মেঝেয় পড়ে রয়েছে। আর ও (ইসলাম) কি না ঘুম থেকে উঠে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল। এ তো ঠান্ডা মাথায় একজনকে খুন করা। আমি ওর কড়া শাস্তি চাই।’’ নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগেও দু’টি বিয়ে করেছিল ইসলাম। দাম্পত্য কলহে তার প্রথম স্ত্রী বাপের বাড়ি চলে যান। আরেক স্ত্রীর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়।
জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, খুনের মামলা রুজু হয়েছে। কী ঘটেছিল জানতে ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy