Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Higher Secondary Examination 2023

স্ত্রীর শিক্ষায় বাধা, অ্যাডমিট কার্ড লুকোলেন স্বামী, নাটকীয় ভাবে ফরাক্কার তরুণী পৌঁছলেন পরীক্ষাকেন্দ্রে

স্থানীয় সূত্রে খবর, এক বছর আগে ফরাক্কার বিন্দুগ্রাম এলাকায় বিয়ে হয় সুলতানার। তিনি স্থানীয় তিলডাঙ্গা হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। মঙ্গলবার থেকে তাঁর উচ্চ মাধ্যমিক শুরু হয়েছে।

Husband hide wife’s higher secondary admit in Farakka, police helps to seat in the examination

সুলতানার উচ্চ মাধ্যমিকের সিট পড়েছিল নিউ ফারাক্কা হাইস্কুলে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ফরাক্কা শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৩ ১৭:১৯
Share: Save:

উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় আপত্তি রয়েছে স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির বাকি সদস্যদের। তাই স্ত্রীর পরীক্ষা দেওয়া রুখতে অ্যাডমিট কার্ড লুকিয়ে রেখেছিলেন স্বামী। সাহায্যে এগিয়ে এল পুলিশ। পুলিশের সাহায্যে উচ্চ মাধ্যমিকের ইংরাজি পরীক্ষা দিলেন ফরাক্কার তিলডাঙ্গার বাসিন্দা সুলতানা খাতুন।

স্থানীয় সূত্রে খবর, এক বছর আগে ফরাক্কা থানার বিন্দুগ্রাম এলাকায় বিয়ে হয় সুলতানার। তিনি স্থানীয় তিলডাঙ্গা হাইস্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। মঙ্গলবার থেকে তাঁর উচ্চ মাধ্যমিক শুরু হয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়া নিয়ে প্রথম থেকেই আপত্তির কথা জানিয়েছিলেন স্বামী। কিন্তু সুলতানা রাজি হননি। তাঁর উচ্চ মাধ্যমিকের সিট পড়েছিল নিউ ফারাক্কা হাইস্কুলে। মঙ্গলবার সেখানেই বাংলা পরীক্ষা দিয়েছিলেন।

বৃহস্পতিবার সকাল দশটা থেকে উচ্চ মাধ্যমিকের ইংরেজি পরীক্ষা ছিল। সময়মতো সব প্রস্তুতি সেরে পরীক্ষা দিতে বেরোনোর সময় তিনি দেখেন পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড যথাস্থানে নেই। জায়গায় নেই স্কুলের ব্যাগ এবং পোশাকও। তন্ন তন্ন করে খুঁজেও পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড পাননি সুলতানা। শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের কাছে সাহায্য চাইলে তাঁকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়, সুলতানার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দেওয়ায় আপত্তি রয়েছে স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ির। আর সেই কারণে তাঁর স্বামীই অ্যাডমিট কার্ড লুকিয়ে দিয়েছেন। পরীক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্তে অটল থাকায় তাঁকে একটি কামরায় রেখে দরজাও আটকে দেওয়া হয়। কিন্তু এত করেও তাঁকে দমানো যায়নি। প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় তালা ভেঙে কোনও রকমে ফারাক্কা থানায় হাজির হন সুলতানা। দ্বারস্থ হন পুলিশের। পুলিশকে সমস্ত ঘটনা খুলে বলার পর সুলতানার পাশে এসে দাঁড়ায় ফরাক্কা থানার পুলিশ। সুলতানাকে নিয়ে তাঁর বাড়িতে যান ফরাক্কা থানার আইসি দেবব্রত চক্রবর্তী। সঙ্গে ছিলেন মহিলা পুলিশ আধিকারিকরাও। পুলিশ দেখে, বাড়িতে তালা মেরে চম্পট দিয়েছেন সুলতানার স্বামী। তবে বাড়ির বাগান থেকে সুলতানার অ্যাডমিট কার্ড উদ্ধার হয়। এর পর পুলিশের গাড়িতেই তিনি পরীক্ষা কেন্দ্রে আসেন।

পরীক্ষা শেষে যুদ্ধ জয়ের হাসি সুলতানার চোখেমুখে। তিনি বলেন, ‘‘আমি শুধু পড়তে চাই। তার জন্য যতদূর লড়তে হয় লড়ব। প্রয়োজনে শ্বশুরবাড়ি ছাড়ব, কিন্তু পড়াশোনা ছাড়ব না।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy