All you need to know about Manish Kothari, CA of Birbhum’s TMC leader Anubrata Mondal and how he got involved in cattle smuggling case dgtld
Manish Kothari
কেষ্টর হিসাবরক্ষক হতেই উত্থান! কী ভাবে মণীশের প্রতিপত্তির হাসি বদলে গেল কান্নায়?
অনুব্রতের সঙ্গে মণীশের বিশেষ দহরম-মহরমের কারণ অনুব্রতের যাবতীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির খতিয়ান থাকত তাঁরই হাতে। কিন্তু কী ভাবে এক জন সাধারণ সিএ মণীশ এলেন অনুব্রতের ছত্রছায়ায়?
নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতাশেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৩ ১৩:২৫
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৯
বুধবার রাউস অ্যাভিনিউ আদালত থেকে বেরোচ্ছিলেন কান্নাভেজা চোখে। বেরিয়ে স্ত্রীকে দেখে সেই কান্না পরিণত হল বিলাপে। অঝোরে কাঁদতে দেখা গেল তাঁর স্ত্রীকেও। তিনি মণীশ কোঠারি। তাঁর পরিচয়, তিনি গরু পাচার মামলায় অভিযুক্ত এবং ধৃত তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের হিসাবরক্ষক। গরু পাচারের টাকা নয়ছয় করার অভিযোগে তাঁকেও ইডি গ্রেফতার করেছে। যদিও মণীশের দাবি, তিনি কোনও ভুল করেননি।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
০২১৯
মণীশের কথায়, ‘‘আমি কিচ্ছু করিনি। কোনও ভুল করিনি। আমার একমাত্র ভুল চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট (সিএ) হওয়া।’’ মণীশ অবশ্য যে-সে সিএ ছিলেনও না। তিনি ছিলেন বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ তৃণমূল নেতা তথা তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল ওরফে কেষ্ট মণ্ডলের সিএ। ইডির অভিযোগ, গরু পাচারের যাবতীয় টাকা মণীশই কালো থেকে সাদা করে এসেছেন দীর্ঘ দিন ধরে।
ফাইল চিত্র।
০৩১৯
স্থানীয় সূত্রে খবর, বীরভূমে ‘অনুব্রতরাজ’ চলার পাশাপাশি ছোটখাট রাজত্ব চালাতেন তাঁর আশপাশে থাকা ঘনিষ্ঠরাও। স্থানীয়দের কথায়, বীরভূমের বুকে সেই ঘনিষ্ঠদের প্রভাবও কিছু কম ছিল না। মণীশ ছিলেন তেমনই এক এবং অন্যতম কেষ্ট-ঘনিষ্ঠ।
ফাইল চিত্র।
০৪১৯
অনুব্রতের সঙ্গে মণীশের বিশেষ দহরম-মহরমের কারণ অনুব্রতের যাবতীয় স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির খতিয়ান থাকত তাঁরই হাতে। কিন্তু কী ভাবে এক জন সাধারণ সিএ মণীশ এলেন অনুব্রতের ছত্রছায়ায়?
ফাইল চিত্র।
০৫১৯
স্থানীয় সূত্রে খবর, শ্রীনিকেতন রোডে মণীশের পারিবারিক বাড়ি। সেখানেই তাঁর জন্ম এবং বড় হয়ে ওঠা। ওই রাস্তার ধারেই একটি মনিহারি দোকান ছিল তাঁদের। বাবার মৃত্যুর পর সেই দোকান সামলাতেন মণীশের দাদা।
প্রতীকী ছবি।
০৬১৯
মণীশের অবশ্য বাবার ব্যবসার প্রতি কোনও দিনই ঝোঁক ছিল না। সেই কারণেই কঠোর পরিশ্রম করে তিনি সিএ-র পড়াশোনা শেষ করেন। কাজও শুরু করেন বীরভূমে। অপর চাটার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট বিদ্যুৎ মজুমদারের সহকারী হিসাবে।
ফাইল চিত্র।
০৭১৯
বিদ্যুৎ সেই সময়ে বীরভূমের অন্যতম পরিচিত নাম। কারণ, মণীশের আগে তিনিই অনুব্রতের যাবতীয় সম্পত্তির হিসাবরক্ষার দায়িত্বে ছিলেন। বিদ্যুতের সূত্রেই ২০১১ নাগাদ অনুব্রতের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন মণীশ। চিনতেন অবশ্য তারও আগে থেকে।
ফাইল চিত্র।
০৮১৯
২০১৫ সাল নাগাদ বিদ্যুৎ মারা যান। অনুব্রতের টাকাপয়সার হিসাব রাখার যাবতীয় দায়িত্ব এসে পড়ে মণীশের কাঁধে। সেখান থেকেই রকেটগতিতে মণীশের উত্থান শুরু। ২০১৬ সাল থেকেই বীরভূমের ‘প্রভাবশালী’দের তালিকায় নাম ওঠে তাঁর।
ফাইল চিত্র।
০৯১৯
কেষ্টর প্রধান হিসাবরক্ষক হওয়ার পর থেকেই একে একে সম্পত্তি বাড়তে থাকে মণীশের। প্রোমোটারি এবং হোটেল ব্যবসাতেও হাত পাকাতে শুরু করেন তিনি। বাড়তে থাকে বা়ড়ি-গাড়ির সংখ্যাও।
প্রতীকী ছবি।
১০১৯
বোলপুরের রূপপুরেও নাকি ন’বিঘা জমি রয়েছে মণীশের। অনেকের অভিযোগ, ওই জমি জোর করে হাতানো। অনুব্রতের প্রভাব খাটিয়ে মণীশ এই জমি নিজের নামে করেছিলেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। যদিও সে সবই তদন্তসাপেক্ষ।
প্রতীকী ছবি।
১১১৯
সূত্রের খবর, শুধু অনুব্রত নয়, তাঁর কন্যা সুকন্যা মণ্ডল, দেহরক্ষী সহগল হোসেন, কেষ্ট ‘ঘনিষ্ঠ’ ব্যবসায়ী মলয় পিট, গরু পাচারকাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত আবদুল লতিফেরও টাকাপয়সার লেনদেনের হিসাব মণীশের কাছে থাকত।
ফাইল চিত্র।
১২১৯
এ ছাড়া বীরভূমের বড় বড় ব্যবসায়ীদের অর্থের হিসাবও মণীশের কাছে থাকত বলে সূত্রের দাবি। যদিও তা প্রমাণসাপেক্ষ। সেই ব্যবসায়িক বৃত্তের সঙ্গে মণীশের যোগাযোগও নাকি তৈরি হয়েছিল অনুব্রতের হিসাবরক্ষক হওয়ার সুবাদেই।
ফাইল চিত্র।
১৩১৯
সেই ‘প্রভাবশালী’ মণীশকেই বুধবার রাউস অ্যাভিনিউ থেকে বেরিয়ে হাউহাউ করে কাঁদতে দেখা গেল। তাঁর প্রভাব-প্রতিপত্তি চুপসে গিয়েছে। বরং তাঁর চোখেমুখে সমাজের বড় মাথাদের হিসাবরক্ষা করার দায়িত্ব নেওয়ার আফসোস।
ফাইল চিত্র।
১৪১৯
গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে অনুব্রত গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকদের নজরে ছিলেন মণীশ। তদন্তকারীদের কাছে বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতির হিসাবরক্ষক হিসাবে নাম উঠে আসার পর তাঁকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়।
ফাইল চিত্র।
১৫১৯
গ্রেফতারের আগে মণীশকে দু’দফায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-র আধিকারিকরাও।
ফাইল চিত্র।
১৬১৯
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে ইডির সদর দফতরে দিনভর জিজ্ঞাসাবাদের পরে গ্রেফতার করা হয় মণীশকে। আপাতত রবিবার পর্যন্ত তিনি থাকবেন ইডি হেফাজতেই। ইডির আইনজীবী নীতেশ রাণা বুধবার রাউস অ্যাভিনিউ আদালতে দাবি করেছেন, অনুব্রত নাকি জিজ্ঞাসাবাদের সময় জানিয়েছেন, তাঁর টাকা এবং সম্পত্তি কোথায় কী ভাবে কাজে লাগানো হয়েছে, সবই জানেন মণীশ।
ফাইল চিত্র।
১৭১৯
মণীশই গরু পাচারের টাকা নিয়ে আর্থিক নয়ছয় করেছেন বলেও নাকি ইডিকে জানিয়েছেন অনুব্রত। তবে ইডি আনুষ্ঠানিক ভাবে সে কথা জানায়নি। ইডি সূত্রে খবর, কালো টাকা সাদা করার জন্য দু’টি ভুয়ো সংস্থা খুলেছিলেন মণীশ। সেই সংস্থাগুলির কাগজেকলমে ডিরেক্টর করা হয়েছিল বাড়ির পরিচারক এবং কর্মীদের।
ফাইল চিত্র।
১৮১৯
মণীশের আইনজীবী রাজা চট্টোপাধ্যায় এবং সঞ্জীব দাঁর অবশ্য দাবি, তদন্তকারী সংস্থার তরফে মণীশকে যত বার ডাকা হয়েছে, তত বারই তিনি মুখোমুখি হয়েছেন তদন্তকারীদের। মণীশ শুধু হিসাবরক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন। গরু পাচারকারীদের সঙ্গে মণীশের কোনও সম্পর্ক নেই।
ফাইল চিত্র।
১৯১৯
ইডি সূত্রে খবর, তদন্তকারী আধিকারিকদের কাছে বার বার মণীশের নাম নিচ্ছেন অনুব্রত। প্রশ্ন উঠছে, কেন তাঁর উপরেই সব দোষ চাপিয়ে দিতে চাইছেন কেষ্ট? মণীশ অবশ্য নীরবই থেকেছেন।