Advertisement
০১ অক্টোবর ২০২৪

তরুণীর মৃত্যু, অভিযুক্ত স্বামী

ঋতুর মা মালতী মণ্ডল বহরমপুর থানায় তিন জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করেছেন। ঋতুর স্বামী বিদ্যুৎ পেশায় জিআরপির কনস্টেবল। জিআরপির বহরমপুর থানার ওসি সুরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘শুক্রবার সন্ধ্যায় বেলডাঙা থেকে বিদ্যুতের ট্রেনে টহলদারি করার কথা ছিল। কিন্ত ওই সন্ধ্যা থেকেই তিনি গরহাজির।’’ পুলিশ জানিয়েছে, তিন জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।

শোকার্ত পরিজন: নিজস্ব চিত্র

শোকার্ত পরিজন: নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০১৯ ০৫:৫৯
Share: Save:

পণ না পেয়ে এক তরুণীকে খুনের অভিযোগ উঠল তাঁর স্বামী, শ্বশুর ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে। শুক্রবার সন্ধ্যায় বহরমপুরের বিবেকানন্দপল্লির ঘটনা। পুলিশ ঋতু মণ্ডলের (২৬) দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে। ওই তরুণীর দাদা সমিত মণ্ডল কাশ্মীর সীমান্তে সেনা বিভাগে কর্মরত। টেলিফোনে তাঁর অভিযোগ, ‘‘অতিরিক্ত পণের জন্য বছর সাতেক ধরে লাগাতার শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করার পরে শুক্রবার সন্ধ্যায় শ্বাসরোধ করে বোনকে খুন করে সিলিং ফ্যানে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।’’

ঋতুর মা মালতী মণ্ডল বহরমপুর থানায় তিন জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করেছেন। ঋতুর স্বামী বিদ্যুৎ পেশায় জিআরপির কনস্টেবল। জিআরপির বহরমপুর থানার ওসি সুরেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘শুক্রবার সন্ধ্যায় বেলডাঙা থেকে বিদ্যুতের ট্রেনে টহলদারি করার কথা ছিল। কিন্ত ওই সন্ধ্যা থেকেই তিনি গরহাজির।’’ পুলিশ জানিয়েছে, তিন জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করা হয়েছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।

অভিযুক্তের এক দাদা মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে জানতে পারেন, ঋতু আর বেঁচে নেই। তাঁর দাবি, ‘‘পারিবারিক বিবাদের জেরে ঘরের ভিতর থেকে খিল দিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে সিলিং ফ্যান থেকে ঋতু ঝুলে পড়েছিল বলে ভাই আমাকে জানিয়েছে। তার পর থেকে ভাই ও বাবা-মায়ের খবর আমার জানা নেই।’’

বিবেকান্দপল্লির এক বাসিন্দা, ঋতুদের পড়শি অমলচন্দ্র বি‌শ্বাস বলেন, ‘‘শুক্রবার সন্ধ্যা সোয়া সাতটা নাগাদ বিদ্যুতদের বাড়ির তিন তলার ঘরে থেকে চিৎকার শুনে ছেলেকে পাঠায়। ফিরে এসে ছেলে জানায়, ঋতু মারা গিয়েছে।’’ তখন বাড়িতে ছিলেন মৃতের স্বামী, শ্বশুর, শ্বাশুড়ি ও ঋতুর বছর ছয়েকের ছেলে। ঋতুর পিসি অপর্ণা কবিরাজ বলেন, ‘‘রাতে অচেনা ফোন থেকে আমাদের বলা হয়, ঋতু গলায় দড়ি দিয়েছে। ঘণ্টা খানেকের মধ্যে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে গিয়ে দেখি সব শেষ।’’

বেলডাঙার রেলবাজারে ঋতুর বাবার বাড়ি। জিআরপির কনস্টেবল বিদ্যুতের সঙ্গে ২০১১ সালে বিয়ে হয় এমএ, বিএড উত্তীর্ণ ঋতুর। ঋতুর মা মালতী মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘১২ ভরি সোনার গয়না, নগদ দেড় লক্ষ টাকা, মোটরবাইক ও যাবতীয় আসবাবপত্র দিয়ে বিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের কিছু দিন পর থেকে আরও টাকার দাবি করে মেয়ের স্বামী, শ্বশুর, শ্বাশুড়ি মিলিত ভাবে ঋতুর উপর শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাতে থাকে।’’

সমিতের অভিযোগ, ‘‘বিয়ের পর বিদ্যুতকে কয়েক কিস্তিতে আরও তিন লক্ষ টাকা দিয়েছি। তার পরে আরও টাকার জন্য মারধর করত। শেষ পর্যন্ত বোনকে মেরেই ফেলল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Death Crime Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE