ফাইল চিত্র।
গরমের দাপটে প্রায় তিন সপ্তাহ এগিয়ে আনা হয়েছে রাজ্যের সরকারি এবং সরকার পোষিত স্কুলের গরমের ছুটি। কিন্তু আগামী ২ মে থেকে কত দিন পর্যন্ত ছুটি চলবে, তা সরকারি নির্দেশিকায় জানানো হয়নি। তবে বলা হয়েছে, এই আগাম ছুটির কারণে পড়ুয়াদের যে ক্ষতি হবে তা পূরণের জন্য স্কুল খোলার পর অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা করতে হবে।
শিক্ষাবর্ষের শুরুতে সারা বছরের ছুটির যে তালিকা প্রকাশিত হয়েছিল তা এগিয়ে এ বছর ২৪ মে থেকে ৪ জুন গ্রীষ্মের ছুটি নির্ধারিত ছিল। ২ মে ছুটি শুরু হয়ে যাওয়ায় ২২ দিন এগিয়ে এল ছুটি। যে হেতু কতদিন ছুটি থাকবে সে বিষয়ে কিছু বলা নেই, তাই শিক্ষা মহলের একাংশের অনুমান, স্কুল খুলবে সেই ৪ জুন। লম্বা ছুটি নিয়ে যথারীতি সরব হয়েছেন অভিভাবক এবং বিরোধীরা। মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, একাদশ এবং স্কুলের নিজস্ব মূল্যায়নের কারণে স্কুলের পঠনপাঠন ব্যাহত হয়েছে গত প্রায় দু'মাস ধরে। বছর শেষের নানা উৎসবের জন্য দফায় দফায় ছুটি চলছে।
এক অভিভাবক রাজেন্দ্র মল্লিকের কথায়, “এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে মে মাসে ছুটি পড়ার আগে পর্যন্ত প্রায় মাস দেড়েক ধরে একটানা স্কুল হওয়ার কথা। তখনই ছুটি ঘোষণা করা হল। এই দীর্ঘ ছুটিতে যে ক্ষতি হবে তা কোনও ভাবেই পূরণ হবে না। গত বছর একই ঘটনা ঘটেছিল। ছুটি শুরু হওয়ার পর বৃষ্টি এসে আবহাওয়া ঠান্ডা হলেও স্কুল কিন্ত খোলেনি।”
একই ক্ষোভ বেশির ভাগ অভিভাবকের গলায়। শিক্ষকদের একটা বড় অংশও এই ভাবে ছুটির বিরোধী। নিখিলবঙ্গ শিক্ষক সমিতির নদিয়া জেলা সম্পাদক সৌমেন পালের মতে, “এই ভাবে অহেতুক ছুটি দেওয়ার কোনও মানেই হয় না। দীর্ঘ সময় ধরে পড়াশোনা বন্ধ থাকবে। মিড-ডে মিল পাবে না পড়ুয়ারা।" তিনি যোগ করেন, "গরম আমাদের দেশে নতুন কিছু নয়। একটু বৃষ্টি হলেই তাপমাত্রা নেমে যায়। তেমন হলে সকালে স্কুল করা হচ্ছে না কেন? এভাবে পড়ুয়াদের পড়াশুনো থেকে সরিয়ে রাখা হচ্ছে। আমরা জেলা শিক্ষা দফতরে আগাম ছুটির বদলে সকালে স্কুলের দাবি জানিয়ে আবেদন করছি।”
বিজেপির শিক্ষক সেলের নদিয়া জেলার আহ্বায়ক অমিত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা এই অবিবেচনাপ্রসূত ছুটির তীব্র বিরোধিতা করছি। করোনার দু'বছরে পড়ুয়াদের যে ক্ষতি হয়েছে, এখনও তার ঘা দগদগ করছে। তার মধ্যে কেন এভাবে ছুটি দেওয়া হচ্ছে? সকালে স্কুল করে পড়ুয়াদের ধারাবাহিক স্কুলশিক্ষার সঙ্গে যুক্ত রাখা যেত না? গরমের দেশ বলেই চিরকাল এখানে সকালে স্কুল হয়ে এসেছে।” পশ্চিমবঙ্গ তৃণমুল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির নদিয়া জেলা সভাপতি রমেন ঘোষ বলেন, অন্যদিকে এপ্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমুল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির নদিয়া জেলা সভাপতি রমেন ঘোষ অবশ্য দাবি করছেন, “অনেকেই অনেক কথা বলতে পারেন। কিন্তু এই অস্বাভাবিক গরমে পড়ুয়াদের কিছু হলে তার দায় শেষ পর্যন্ত বর্তাবে আমাদের উপরেই।" তাঁর মতে, "চৈত্র মাসে ৪২ ডিগ্রি ছুঁই-ছুঁই তাপমাত্রায় স্কুল করতে বলা এক ধরনের শাস্তি।” সকালে স্কুল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “অনেক স্কুল আছে যেখানে একই ক্যাম্পাসে সকাল এবং দুপুরে স্কুল হয়। তারা পারবে না। দূরের মাস্টারমশাইরাও সময় মতো আসতে পারবেন না। সিদ্ধান্ত ঠিকই নেওয়া হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy