ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র ।
রাজ্যে আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ১ মার্চ হুগলির আরামবাগের পর ২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী সভা করবেন নদিয়ায় কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজের মাঠে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক সভা ছাড়াও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির সভা হয়েছে ওই মাঠে। নিরাপত্তা এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক ব্যবস্থা-সহ ওই মাঠের সর্বোচ্চ লোকধারণের ক্ষমতা ৮০ হাজারের আশপাশে। তবে বিজেপি সূত্রে খবর, মোদীর সভার দিন নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ মিলিয়ে পাঁচটি লোকসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের ন্যূনতম এক লক্ষ ৮০ হাজার মানুষের জমায়েতের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কিন্তু সেই লক্ষ্যপূরণে সন্দিহান দুই জেলার নিচু স্তরের নেতারা! কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন, বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা এবং পর্যবেক্ষকদের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে, আশি হাজার কর্মী-সমর্থকদের জায়গা হবে সভাস্থলে। কিন্তু বাকি এক লক্ষের ঠাঁই হবে কোথায়?
আরামবাগ এবং কৃষ্ণনগর— দু’জায়গাতেই প্রধানমন্ত্রীর সরকারি কিছু প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন করার কথা। ফলে দু’জায়গার মাঠেই দুটো করে মঞ্চ তৈরি করতে হবে। একটি প্রশাসনিক এবং অন্যটি রাজনৈতিক মঞ্চ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার বিজেপির এক মণ্ডল সভাপতির কথায়, ‘‘মাত্র চার দিন হল লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে। বুথের নেতৃত্ব নিয়ে এখনও বৈঠকই শেষ করে উঠতে পারিনি। এ ভাবে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিলেই তো সব কিছু হয়ে যায় না! আমার মণ্ডল থেকে আটটি বাসে করে লোক নিয়ে যেতে বলা হয়েছে। প্রত্যেক বুথে বুথে ভাগ করেও যা দাঁড়াচ্ছে, তাতে এখনও অবধি চারটে বাস ভর্তি হবে। বাকি চারটে বাসে কী হবে এখনও বুঝতে পারছি না।’’
বিজেপি সূত্রে খবর, কৃষ্ণনগর লোকসভাকে এ বার পাখির চোখ করতে চাইছে বিজেপি। কৃষ্ণনগরের সভাস্থল ছাপিয়ে গোটা শহর বিজেপি কর্মী-সমর্থকে ভরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে। রেলস্টেশন থেকে বাসস্ট্যান্ড, ফেরিঘাট থেকে সড়ক— কৃষ্ণনগর শহর ও শহরতলির আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলিতে ভিড় বাড়াতে চাইছেন বিজেপির নেতারা। নদিয়ার দু’টি লোকসভা কেন্দ্র কৃষ্ণনগর ও রানাঘাট ছাড়াও পার্শ্ববর্তী জেলার তিনটি লোকসভা কেন্দ্র মুর্শিদাবাদ, বহরমপুর এবং জঙ্গিপুরের সাংগঠনিক জমায়েতের আলাদা আলাদা লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক ও কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে। সূত্রের খবর, কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার জন্য ৪৫ হাজার, রানাঘাট সাংগঠনিক জেলার জন্য ৫৫ হাজার, মুর্শিদাবাদের জন্য ২০ হাজার, জঙ্গিপুরের জন্য ১০ হাজার, বহরমপুর লোকসভা কেন্দ্রের জন্য ৩০ হাজার এবং এ ছাড়াও বেশ কয়েকটি সহযোগী সংগঠনকে আলাদা করে ৩০ হাজার মানুষের জমায়েত করার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে।
বিজেপি সূত্রে খবর, মোদীর সভায় লোক আনতে আলাদা আলাদা সাংগঠনিক জেলার জন্য ভিন্ন ভিন্ন পরিবহণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। জঙ্গিপুর ও মুর্শিদাবাদের সমর্থকদের সভাস্থলে আনতে যাত্রিবাহী বাস ও ছোট গাড়ির উপর জোর দেওয়া হয়েছে। রানাঘাট ও বহরমপুর সাংগঠনিক জেলার ক্ষেত্রে কর্মী-সমর্থকদের ট্রেনে করে আনার পরিকল্পনা হয়েছে। কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার জন্য প্রতিটি মণ্ডলের জন্য চার-পাঁচটি করে বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এত প্রস্তুতি সত্ত্বেও মণ্ডল স্তরে বেঁধে দেওয়া জমায়েতের লক্ষ্যপূরণ কী ভাবে হবে, তা নিয়ে নদিয়া এবং মুর্শিদাবাদের তৃণমূল স্তরের নেতা-কর্মীরা চিন্তায় পড়েছেন বলে সূত্রের খবর। বিজেপির অন্দরের খবর, প্রাথমিক ভাবে জমায়েতের লক্ষ্যপূরণে অসুবিধার কথা জানিয়েছিলেন বেশ কয়েক জন সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্ব। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় নেতাদের যুক্তি ছিল, পাঁচটি লোকসভা কেন্দ্রে সমর্থক মিলিয়ে বিজেপির লক্ষ্য পাঁচ লক্ষের কাছাকাছি। তাই যে কোনও উপায়ে এই এক লক্ষ ৮০ হাজারের লক্ষ্যপূরণ করতেই হবে।
প্রধানমন্ত্রীর সভায় জমায়েতের লক্ষ্যপূরণ হবে কি না, তা নিয়ে বিজেপির মণ্ডল সভাপতিরা সন্দেহ প্রকাশ করলেও লক্ষ্যপূরণের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী জেলা সভাপতিরা। কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অর্জুন বিশ্বাসের কথায়, ‘‘আমাদের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে ৪৫ হাজার। ৬০ হাজার জমায়েত হবে বলে আশা করছি। শুধুমাত্র কর্মী-সমর্থক নন, সাধারণ মানুষেরাও নিজের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রীর সভাস্থলে আসবেন। তাই মোট জমায়েত সংখ্যা ২ লক্ষ ছাপিয়ে যাবে।’’
মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শাখারভ সরকার বলেন, ‘‘মোদীজির সভা ঘিরে যে উন্মাদনা তৈরি হয়েছে, তাতে জমায়েতের লক্ষ্যপূরণ কোনও ব্যাপার না। ভাবছি যানজটে নদিয়ায় ঢুকতে পারব কি না!।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy