প্রতীকী ছবি।
হুগলির উত্তরপাড়া হোম থেকে মায়ের সঙ্গে ফিরতে রাজি হল না বাড়ি থেকে পালানো কিশোরী। মুর্শিদাবাদের সমশেরগঞ্জ ব্লকের মহিষাস্থলী থেকে ওই কিশোরীর মা, দিদিমা সোমবার উত্তরপাড়ার হোমে গিয়ে দু’ঘন্টা ধরে কথা বলেন তার সঙ্গে । কিন্তু তাদের মুখের উপরই কিশোরী জানিয়ে দেয়, মায়ের সঙ্গে বাড়িতে আর ফিরবে না সে। মেয়ের এই কথা শুনে হোমেই কান্নায় ভেঙে পড়েন মা ও দিদিমা।
ওই কিশোরীর মা বলছেন, “রাগের মাথায় মেয়েকে বকাবকি করে চড় মেরেছি। তা বলে এ ভাবে বাড়ি ছেড়ে চলে আসতে হয়? এত বড় করলাম, সেই ভালবাসার কোনও দাম নেই? অন্য তিন ছেলে-মেয়ের চেয়ে এই বড় মেয়েকে কি আমি কম ভালবাসি?”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে বছর চোদ্দর ওই কিশোরীকে উদ্ধার করে রেল পুলিশ চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেয়। কিশোরীটি দাবি করে ছোটবেলায় তার মা মারা গেলে বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সৎমায়ের চার সন্তান। সৎ মা তাকে গরম শিকের ছ্যাঁকা দেয়। খেতে দেয় না। নিয়মিত স্কুলে যেতেও দেয় না। বাধ্য হয়ে পেট চালানোর জন্য তাকে বিড়ি বাঁধতে হয়।
বাধ্য হয়ে শুক্রবার সকালে জমানো হাজার দশেক টাকা এবং আধার কার্ড নিয়ে সে ঘর ছেড়েছে। কিশোরীর দাবি, বিড়ি বেঁধে দিনে শ’খানেক টাকা উপার্জন হয়। বাড়ি ছাড়ার আগে জমানো সেই টাকাই নিয়ে এসেছে সে। কিশোরীর সব দাবিই খতিয়ে দেখছে চাইল্ড লাইন ও জিআরপির কর্তারা।
ওই কিশোরীর দিদিমা বলছেন, “ক্লাশ নাইনে পড়ে মেয়ে। অভাবের সংসারে সেও বিড়ি বাঁধে। কোন সংসারে অশান্তি হয় না। মা হয়ে মেয়েকে শাসনও করতে পারবে না?’’
চোখের জল মুছে মা বলছেন, “ এখন বুঝছি, মেয়ে বড় হয়েছে। এভাবে মারধর করাটা উচিৎ হয় নি। মার খেয়ে বড় অভিমান হয়েছে মেয়ের। তাতেই নিজের মাকে সৎ মা বলে পরিচয় দিয়েছে পুলিশের কাছে।’’ তিনি মনে করেন, রাগ পড়লেই মেয়ে ঠিক বাড়ি ফিরবে। ইতিমধ্যেই ওই কিশোরীর বাবাকে পুরো ঘটনা জানানো হয়েছে। তিনি কেরলে রাজমিস্ত্রির কাজে গিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy