প্রতীকী চিত্র
জুন মাসের প্রথম দিকে কৃষি সংক্রান্ত তিনটি অধ্যাদেশ জারি করেছিল কেন্দ্র সরকার। সংসদের অধিবেশন শুরু হতে লোকসভার সেই সব বিল পাশ করিয়েছে বিজেপির নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকার। আর তা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। এ নিয়ে পঞ্জাব ও হরিয়ানার চাষিরা ইতিমধ্যেই রাস্তায় নেমেছেন। বিরোধীদের দাবি, প্রস্তাবিত এই আইন আসলে কৃষি ক্ষেত্রে বৃহৎ পুঁজির অনু্প্রবেশ নিশ্চিত করছে। এর ফলে এক সময় ফসলের মূল্য নির্ধারণের ক্ষমতা আর চাষির হাতে থাকবে না। বড় পুঁজির মালিকেরা একচেটিয়া কৃষি পণ্যের দাম নির্ধারণ করবেন। চাষিরা দাম-না পেয়ে বড় সমস্যায় পড়বেন। তবে, জেলার চাষিরা এ নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত। এক দলের মতে, সরাসরি বড় কোনও গোষ্ঠীকে ফসল বিক্রি করতে পারলে আখেরে তাঁদের লাভই হবে। কেন না এখন কৃষিজ বিপণন দফতরের অধীনে থাকা রেগুলেটেড মার্কেটগুলিতে মাল বিক্রি করতে হয় আসলে মধ্যস্বত্বভোগীদের। এর ফলে চাষি অনেক ক্ষেত্রেই কম দাম পান। অন্যরা জানাচ্চেন, শুরুতে অনেক দাম দিয়ে কিনলেও পরে দাম কমিয়ে কিনতে পারে কর্পোরেট গোষ্ঠী। ফসলের গুণমান কোনও কারণে খারাপ হলে চুক্তি অনুযায়ী দাম নাও পেতে পারেন চাষিরা।
জেলার চাষিরা এখন মূলত তিন রকম পন্থায় উৎপাদিত ফসল বিক্রি করেন। এক, চাষি সরাসরি গ্রামের হাটে বা বাজারে সরাসরি আনাজ নিয়ে গিয়ে বিক্রি করেন। দুই, জেলার রেগুলেটেড মার্কেট কমিটির অধীনে রয়েছে তিনটি বড় বড় বাজার। কল্যাণী, বেথুয়াডহরি ও করিমপুরের রেগুলেটেড মার্কেটে গিয়েও চাষি ফসল বিক্রি করেন। সেখানে ক্রেতা সরাসরি হাজির থাকেন। মধ্যস্বত্বভোগী ওই ক্রেতারা ক্রয়ের উপর লেভি দিয়ে মাল কেনেন। এ ছাড়াও কৃষিজ বিপণন দফতরের অধীনে থাকা একাধিক চেক পোস্টেও লেভি সংগ্রহ করা হয়। তিন, কেন্দ্র বেশ কিছু ফসলের উপর ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বেঁধে দিয়েছে। চাষিরা সেই সহায়ক মূল্যেও সরকারকে সরাসরি মাল দিতে পারেন। তবে সহায়ক মূল্য মাত্র কয়েকটি ফসলই কেনা হয়। কৃষি দফতরের এক কর্তা জানাচ্ছেন, এখনও পর্যন্ত আইনের পুরো বিষয়টা পরিষ্কার নয়। তবে লেভি সংগ্রহের ক্ষেত্রে তাঁদের ক্ষমতা অনেকটাই খর্ব করা হবে। চাষি যেন কর্পোরেট সংস্থাগুলির সঙ্গে যৌথ ভাবে চাষ করেন এবং উৎপাদিত ফসল বিক্রি করেন সে দিকেই ঝুঁকছে। হরিণঘাটার মোল্লাবেলিয়ার চাষি আইজুল মণ্ডল বলছেন, ‘‘বড় বড় সংস্থাগুলি প্রথমে চাষিকে বেশি টাকা দিয়ে মাল কিনবে। পরে দাম এক ধাক্কায় অনেকটাই কমিয়ে দিয়ে চাষির সর্বনাশ হবে। এক আগে এমনটা মহারাষ্ট্রে হয়েছে।’’
বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞানের অধ্যাপক শুভদীপ দাশগুপ্ত জানাচ্ছেন, নতুন আইনে ফসল কেনার সঙ্গে রসিদ-সহ দাম মেটানোর কথা উল্লেখ থাকলেও চুক্তিভিত্তিক চাষে অতীতে চাষিরা পূর্ব নির্ধারিত দাম পেতে সমস্যায় পড়েছেন। আবহাওয়াজনিত কারণে ফসল উৎপাদন কম বা ফসলের গুণমান ভাল না-হলে চুক্তি অনুযায়ী চাষিরা আগে অনেক ক্ষেত্রেই দাম পাননি। এই আইনে ছোট জমি বা ভূমিহীন ভাগচাষিরা বঞ্চনার শিকার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি এবং তাঁদের আইনি সুরক্ষা দেওয়ার জায়গাও এই আইনে স্পষ্ট নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy