নিজস্ব চিত্র
বর্ষায় ক্রমেই ফেঁপে উঠেছে পদ্মা। আর তার সৌজন্যে আঙুল ফুলে কলাগাছ পাচারকারীদের!
নিছক কথার কথা নয়, কলা গাছের ভেলায় চড়ে ইসলামপুর রানিনগর সীমান্তের পদ্মা পাড়ি দিচ্ছে হাজার হাজার গবাদি পশু।
পাট খেতের আড়ালে মাইলের পর মাইল পাড়ি দিয়ে চরে এসে ডেরা বাঁধছে গরুর পাল। তার পর, রাতের অন্ধকারে আঁধার পদ্মায় তাদের গলায় কলার ভেলা বেঁধে ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে নদীতে। কেউ যাচ্ছে ভেসে তবে সে সংখ্যা হাতে গোনা, অধিকাংশই দুলে-হেলে ভেসে ভেসে উঠছে ও পাড়ের বাংলাদেশের ঘাটে। এই চেনা চিত্রে এ বার নতুন সংযোজন গরুর গলায় বাঁধা সকেট বোমা!
বৃহস্পতিবার তা নিয়েই দিনভর হইচই হারুডাঙা সীমান্তে। বিএসএফের জওয়ানেরা সকেট বোমা সম্পর্কে তেমন ওয়াকিবহাল নন। গরুর গলায় বোমা ধরনের কিছু দেখে তাঁদের সন্দেহ হতেই তলব হয় স্থানীয় পুলিশের। রানিনগর থানার পুলিশ অবশ্য দেখেই চিনতে পারে। গরু আটক করে সেই ‘সকেট বোমা’ খুলেই দেখা যায়, দেখতে অনেকটা সকেট বোমার মতো হলেও আদতে তা একটি পাইপে লিউকোপ্লাস্ট জড়ানো।
পুলিশের দাবি, বিএসএফ-কে ভয় দেখানোর জন্যই পাচারকারীরা এমন করছে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, ‘‘গরুর গলায় বোমা আটকানো রয়েছে। না ঘাঁটানোই ভাল, এই ভয়ে বিএসএফ পিছু হটবে ভেবেই এমন নকল সকেট বোমা লাগিয়েছে পাচারকারীরা।’’ সকেট বোমার জুজু’তে বিএসএফ-কে বিচলিত করার ওই ফাঁদ যে নতুন মেনে নিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার মুকেশ কুমার। তিনি বলছেন, ‘‘বিএসএফের জওয়ানদের ভয় দেখাতেই এমন কাণ্ড করেছে পাচারকারীরা। সকেট দেখে যাতে গরুর গায়ে তারা হাত না দেন, তার জন্যই এই অভিনব কৌশল। তবে পুলিশ নজরদারি বাড়িয়েছে, পদ্মা নদীতে চলছে জোর তল্লাশি।’’
জল বাড়ছে পদ্মায়, পাল্লা দিয়ে জল ঢুকছে পদ্মার শাখা নদীগুলিতেও। আর সে নদীর স্রোতকে কাজে লাগিয়ে কলার ভেলা ভাসিয়ে শুরু হয়েছে পাচার। ভেলা ভাসতে দেখলেই নৌকা ছুটিয়ে মাঝ পদ্মায় ছুটছে বিএসএফের লঞ্চ। বৃহস্পতিবারও তেমনই একটি ভেলার পিছনে ছুটে ছিল রানিনগর এলাকার হারুডাঙা বিওপির জওয়ানেরা। ভেলা থেকে মিলেছিল একটি গরু। বিএসএফ, পুলিশ বা পদ্মা পাড়ের সাধারণ মানুষের কাছে এই ভেলায় গরু ভাসানো নতুন কোনও ঘটনা নয়, কিন্তু এ দিন যে ঘটনা ঘটল তা একেবারে অভিনব।
ভেলা টেনে গরুকে পাড়ে তুলতেই চক্ষু চড়কগাছ বিএসএফের। গলায় বাঁধা সকেট বোমা। যা দেখে হাত কয়েক ছিটকে আসেন বিএসএফের জওয়ানরা, পাড়ে দাঁড়িয়ে থাকা কিছু স্থানীয় বাসিন্দা দেখতে পান ঘটনাটি। খবর পেয়ে রানিনগর থানার পুলিশ ছুটে যায় সেখানে। শেষ পর্যন্ত অবশ্য গরুর গলা থেকে সেটা খুলে পরীক্ষা করতেই বেরিয়ে পড়ে আদতে সকেটের ভেতরে কিছু নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy