দিদিমনি পড়িয়ে চলেছেন— অ-আ। কিন্তু কচিকাঁচার কানে তা যাচ্ছে কই। বৈশাখের সকালে দরদর করে ঘামছে তারা।
জেলার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলির এটাই চেনা ছবি। বড়দের স্কুলে থাকলেও একেবারে কচিকাঁচাদের অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে আর পাখা কোথায়? থাকবেই বা কী করে। কোথাও কোথাও ঘর যদিও বা জোটে বিদ্যুৎ কই। আর ঘর থাকলেই বা বিদ্যুতের বিল মেটাবেই বা কে? এত প্রশ্নের উত্তর মেলাবার দিকে নজর দিয়েছে প্রশাসন।
উপায় ছিল না অগত্যা তাই এই অবস্থাই মেনে নিতে হয়েছিল অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মী থেকে শিশুদের। কিন্তু এবার সেই চিত্র পরিবর্তণের কথা ভাবতে শুরু করেছে নদিয়া ও মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন। তারা জেলার পাঁচটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রকে বেছে নিয়ে পরীক্ষামূলক ভাবে ‘সোলার প্লান্ট’ বসিয়ে আলো ও পাখার ব্যবস্থা করতে শুরু করেছে। মুর্শিদাবাদ জেলা প্রশাসন জানিয়েছে যে সব অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র নতুন হচ্ছে। সেখানে আলো-পাখা সবই থাকবে।
নদিয়া প্রশাসন জানিয়েছে, জেলা প্রশাসন ও জেলা পরিষদের যৌথ উদ্যোগে ধাপে ধাপে জেলার প্রতিটি কেন্দ্রে সোলার প্লান্ট বসানো হবে। সেই মতো রাজ্যের আইসিডিএস দফতরের পাশাপাশি বিএডিপি বা সীমান্ত এলাকা উন্নয়ন প্রকল্প ও সংখ্যালঘু উন্নয়ন দফতরের কাছে অর্থ সাহাজ্য চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
এই মুহুর্তে গোটা নদিয়া জেলায় ৬ হাজার ৬২০টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র রয়েছে। শিশুদের সংখ্যা ৪ লক্ষ ২৪ হাজার। এর মধ্যে যে সব কেন্দ্র গুলির নিজস্ব বাড়ি রয়েছে, কেবল মাত্র তাদেরকেই এই সুবিধা দেওয়া হবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। সেসংখ্যাটা প্রায় দু’হাজার। সংখ্যাটি প্রায় একই মুর্শিদাবাদেও।
নদিয়া জেলার অঙ্গনওয়াড়ি ওয়ার্কার্স অ্যান্ড হেল্পার অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান জয়ন্তী রায় দত্ত বলছেন, “যাদের সরকারি ভবনে বা স্কুলবাড়িতে কেন্দ্র বসে তাদের কোন সমস্যা হয় না। কারণ, তারা সেখানকার আলো পাখা ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু যাদের নিজস্ব বাড়ি নেই, গরমে তাদের অবস্থা কাহিল হয়ে পড়ে।’’ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে এই মুহুর্তে নদিয়া জেলায় কৃষ্ণনগর-১ ও রানাঘাট ১ ব্লক, চাপড়া, নাকাশিপাড়া, চাকদহ ব্লকে পাঁচটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে সোলার প্লান্ট বসানো হয়েছে। খরচ পড়েছে প্রায় ২০ হাজার টাকা করে। আর সেই খরচ বহন করেছে নদিয়া জেলা পরিষদ। সেই প্লান্টের মাধ্যমে কেন্দ্রগুলিতে একটি করে পাখা ও আলো জ্বালানো যাবে। নদিয়ার অতিরিক্ত জেলা শাসক (জেলা পরিষদ) শেখর সেন বলেন, “আমরা দেখতে চাইছি রক্ষণাবেক্ষণটা ঠিক কি ভাবে করা সম্ভব কিনা।’’
মুর্শিদাবাদে মোট অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের সংখ্যা ৮৬৬১টি। জেলা প্রশাশনের এক কর্তা জানান, তার মধ্যে ৩৭০০ কেন্দ্রের নিজস্ব বাড়়ি রয়েছে। বাকি কেন্দ্রগুলি সরকারি বাড়ি, ক্লাব ঘর, বা স্থানীয় কোনও বাসিন্দার বাড়িতে চলে। নতুন করে আরও ২০০ কেন্দ্রের বাড়ি তৈরি হচ্ছে। সেই কেন্দ্রগুলিতে আলো-পাখা থাকবে। তবে সেখানে সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা থাকবে কিনা তা জানা যায়নি। কিন্তু পুরনো কেন্দ্র, যাদের নিজস্ব বাড়ি রয়েছে, তাদের কী হবে? জেলা প্রশাসনের ওই কর্তা বলেন, পুরনো কেন্দ্রগুলিকে নিয়ে আরও আলোচনা চলছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy