বহরমপুরের একটি স্কুলের টিচার্স রুমে। নিজস্ব চিত্র।
কোভিড কালেও স্কুলে আসতে হয়েছে তাঁদের। তবে মাসে তিন থেকে চার দিন। কোথাও কোথাও আরও একটু বেশি হলেও সেটা কখনওই পনেরো দিন হয়নি। তবে সে ক্ষেত্রে বাঁধাধরা কোনও নিয়ম ছিল না। সরকারের নির্দেশে চলতি সপ্তাহের মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে স্কুল কলেজ। তবে আগের পুরনো বাঁধা ১০টা ৪০মিনিটে বদলে শিক্ষকদের স্কুলে আসতে হচ্ছে সকাল সাড়ে ন’টার আগে। নিয়ম মতো সকাল সাড়ে ন’টায় আসবে নবম ও একাদশ শ্রেনির পড়ুয়ারা। আর সাড়ে দশটার মধ্যে দশম ও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়ারা আসবে।
এদিকে জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের কড়া নির্দেশে সব স্কুলের সব শিক্ষককেই এখন হাজিরা দিতে হচ্ছে। এমনকি সাধারণ ছুটিতেও কোপ পড়েছে শিক্ষকদের। তবুও স্কুল শুরুর প্রথম দু’দিন কোথাও কোথাও অনুপস্থিতও ছিলেন শিক্ষকরা। খিদিরপুর কলোনি নেতাজী উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জয়দীপ দত্ত বলেন “আমার স্কুলের দুজন শিক্ষক অনুপস্থিত ছিলেন অসুস্থতার কারণে। সে কথা জানিয়ে দিয়েছি ডিআইকে।” অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে কলেজেও আসেননি দু’একজন শিক্ষক।
তবে অধিকাংশ শিক্ষকই পড়ি মরি করে সময়ে স্কুল ‘ধরতে’ বাড়ি থেকে রওনা দিয়েছেন সে কথা জেলার বিভিন্ন বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়। শহর থেকে ট্রেন পথে যেতে হয় যে সব শিক্ষককে তাঁদের অসুবিধা হয়েছে সব থেকে বেশি। লালগোলা এসএন গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষিকা শতাব্দী আঢ্য বলেন, “আগে ৮টা ২৬শের ট্রেন ধরে দশটার আগে স্কুলে পৌঁছতাম। ওই ট্রেন না থাকায় আমাকে এখন সাতটার ট্রেন ধরতে হয়েছে। সেই কারণে সকালে খালি পেটেই যেতে হচ্ছে।” তিনি ফিরছেন সন্ধ্যা ছ’টার পর। লালগোলা এমএন আকাদেমির শিক্ষক কৃষ্ণপ্রসাদ প্রামাণিকও স্নান না করেই প্রথমদিন স্কুল ছুটেছেন সাতটার ট্রেন ধরে। তিনি বলেন “খুব কষ্ট করে স্কুলে হাজিরা দিচ্ছি। স্কুলে ঢোকা বেরনো প্রায় ১১ ঘন্টা সময় কেটে যাচ্ছে। এভাবে প্রতিদিন যাওয়া খুব কষ্টকর।” মালদা রিজেন্ট পার্ক থেকে বাসে জঙ্গিপুর বাণীপুর এসইউএন উচ্চবিদ্যালয়ে পড়াতে আসেন রিষভ কুমার মণ্ডল। এখন ৬টা ৪০মিনিটে বাস ধরে আসতে হচ্ছে। তিনি বলেন “সময়ের উনিশ বিশ হয়ে গেলেই বাস ছেড়ে গেলে স্কুল পৌঁছতে দেরি হয়ে যাবে। আবার রাস্তায় বাসের কোনও সমস্যা হলেও একই অসুবিধা। সেই টেনশন নিয়ে আসা যাওয়া করতে হচ্ছে। আগে আরও দু’ঘন্টা হাতে সময় থাকত।”
শুধু শিক্ষক কেন? গণ পরিবহণের অপ্রতুলতার কারণে পড়ুয়ারাও স্কুলে আসতে পারছে না নির্দিষ্ট সময়ে। বেলডাঙা থেকে বহরমপুরের একটি স্কুলে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে অনির্বাণ মণ্ডল। অনির্বাণ বলেন, “সকাল দশটায় যে ট্রেন বহরমপুরে পৌঁছয় সেই ট্রেনে গেলে স্কুলে পৌঁছাতে দেরি হয়ে যাওয়ায় প্রথমদিন সময়ে স্কুল পৌঁছতে পারিনি।”
রেল সূত্রে জানা যায় চলতি সপ্তাহে লালগোলা শিয়ালদহ শাখায় নতুন কোনও ট্রেন চলবে না। আবার ট্রেন ছাড়াও যাঁরা বাসে চলাচল করেন, তাঁদেরও অসুবিধা হয়েছে সব রুটের বাস না থাকায়। ফলে আগামী কয়েক দিন সব শিক্ষক পড়ুয়া সময়ে স্কুলে উপস্থিত হতে পারবেন কি না তা নিয়ে সংশয় থেকেই গেল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy