দিলীপ ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
মুকুল রায় তৃণমূলে ফিরে যাওয়ার পর থেকেই দোষারোপ শুরু হয়ে গিয়েছে। নির্বাচনী বিপর্যয় নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে দায়ী করছেন কেউ। কেউ আবার রাজ্য নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন। তার জেরে বিজেপি-র অন্দরে বিভাজন তৈরি হয়েছে বলে দলীয় সূত্রেই খবর। কিন্তু সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিলেন দিলেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। জানিয়ে দিলেন, যাঁরা কলহ করছেন, তাঁরা কেউ বিজেপি-র নন।
শুক্রবার বহরমপুরে দলে সাংগঠনিক সভায় যোগ দেন দিলীপ। সেখানেই দলের অন্দরে বিভাজনের অভিযোগ নিয়ে মুখ খোলেন তিনি। বলেন, ‘বিজেপি-তে কোনওরকম অন্তর্কলহ নেই। মতবিরোধ নেই কোনও কিছু নিয়ে। নির্বাচনে লড়াই করেছি আমরা। ভাল ফল করেছি। যাঁরা কলহ করছেন, তাঁরা কেউ বিজেপি-র লোক নন।’’
মুকুল-প্রস্থানের পর সম্প্রতি পদ্মশিবির থেকে একে একে অনেকেই মুখ খুলেছেন। বিশেষ করে ভোটের আগে তৃণমূল থেকে বিজেপি-তে আসা নেতারা, যার মধ্যে রয়েছেন বর্ধমান পূর্বের সাংসদ সুনীল মণ্ডলও। তৃণমূল থেকে আসা নেতাদের আগে বিজেপি হতে হবে বলে দিলীপ রায়ের মন্তব্য তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘‘‘‘তৃণমূল থেকে যাঁরা এসেছেন, তাঁদের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছে না বিজেপি। সহ্য করতে পারছে না।’’
শুধু তাই নয়, তৃণমূলে ফেরার প্রস্তাব পেলে ভেবে দেখবেন বলেও জানান সুনীল। তাঁর মন্তব্য নিয়ে বিজেপি-তে কাটাছেঁড়া শুরু হতেই, নিজের মন্তব্য থেকে সরে আসেন তিনি। দিলীপ যদিও সুনীলের নাম নেননি। তবে বিজেপি-র লোক নন বলে কাদের নিশানা করেছেন সুনীল, তা-ও খোলসা করেননি।
মুকুলের দলত্যাগ নিয়েও শুক্রবার মুখ খোলেন দিলীপ। এর আগে, দলত্যাগ বিরোধী আইনে মুকুলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে শুভেন্দু অধিকারী যখন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে শলা পরামর্শ করছেন, সেইসময় দিলীপ জানিয়েছিলেন, মুকুল বিবেচক মানুষ। তিনি নিশ্চয়ই সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন। কিন্তু বহরমপুরে দলত্যাগ বিরোধী আইনে মুকুলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপকে সমর্থন জানান তিনি। বলেন, ‘‘যাঁরা সুবিধার জন্য এসেছিলেন, অসুবিধা হতে চলে গিয়েছেন। রাজ্যসভার সাংসদ পদ ত্যাগ করে বিজেপি-তে এসেছিলেন মুকুল রায়। এখন তিনি দলত্যাগ করেছেন, তাই বিধায়ক পদও ত্যাগ করা উচিত। তাই অভিযোগ করা হয়েছে ওঁর বিরুদ্ধে। নিজে থেকে তা করেননি বলেই, অভিযোগ করা হয়েছে।’’
ভোটপরবর্তী হিংসার অভিযোগ নিয়ে এই মুহূর্তে উত্তাল রাজ্য। তা নিয়ে রিপোর্ট দিতেই রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের দিল্লি উড়ে গিয়েছেন বলে জল্পনা। তার মধ্যেই নন্দীগ্রাম-সহ আরও চার কেন্দ্রপে ভোটগণনায় কারচুপি হয়েছে বলে হাইকোর্টে দ্বারস্থ হয়েছে তৃণমূল। কিন্তু বিচারপতি কৌশিক চন্দের বেঞ্চে মামলার শুনানির তীব্র বিরোধিতা করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। বিচারপতি বিজেপি-ঘনিষ্ঠ বলে অভিযোগ তাঁদের। প্রমাণস্বরূপ দিলীপের সঙ্গে তাঁর একটি ছবিও সামনে এনেছেন তাঁরা। তাঁর বেঞ্চ থেকে মামলা সরাতে প্রধান বিচারপতিকে চিঠিও দিয়েছেন খোদ মমতা।
কিন্তু দিলীপের দাবি, ‘‘বিচারপতি বিচারপতিই। আমাদের বিচারপতি আবার কী! অনেক আইনজীবী রয়েছেন, যাঁরা একসময় তৃণমূলে ছিলেন। এখন তাঁরা বিচারপতি হয়েছেন। তাই বলে কি তাঁদেপ বিশ্বাস করবেন না মানুষ? এ সমস্ত কথা যাঁরা বলেন, তাঁরা মানুষকে ছোট করেন। কাজের মাধ্যমে নিরপেক্ষতা প্রমাণ করবেন বিচারপতি। তাঁর সঙ্গে কার ছবি রয়েছে, তার ভিত্তিতে নয়।’’
তবে রাজ্যপাল ভোটপরবর্তী হিংসার অভিযোগে সরব হলেও, দিলীপের বক্তব্য, ‘‘ভোটপরবর্তী হিংসা য়েছে। অনেক বিজেপি কর্মী বাড়িছাড়া ছিলেন। পুলিশ কিছুটা পদক্ষেপ করেছে। এখনও অনেককে ফেরানোর চেষ্টা চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy