দিলীপ ঘোষ
নিজেদের শক্ত ঘাঁটিতে সভা করতে এসে পুরনো কর্মীদের ক্ষোভের আঁচ টের পেলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ও অন্য নেতারা।
বৃহস্পতিবার দুপুর ১টা। রানাঘাট নজরুল মঞ্চে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে কর্মশালা চলছে। হঠাৎ পিছন দিকে চিৎকার-চেঁচামেচি। দেখা গেল, কয়েক জন চিৎকার করতে-করতে হল থেকে বেরিয়ে আসছেন। তাঁদের আটকানোর চেষ্টা করছেন কয়েক জন। তবে তাতে কাজ হয়নি।
এক যুবক চিৎকার করে বলতে থাকেন, ‘‘বোনের বিয়ের আগের রাতে পুলিশ আমায় ধরে নিয়ে যায়। দলের কেউ এসে পাশে দাঁড়ায়নি। যাঁর গাড়ি চালাই, সেই মালিক ১৫ হাজার টাকা দিয়ে আমায় জামিনে ছাড়িয়ে আনেন। এ সব সত্ত্বেও দলের কাজ করে চলেছি।’’ আর এক জন বলতে থাকেন, ‘‘জীবন বাজি রেখে মাজদিয়া কলেজ দখল করেছিলাম। যাদের দল আজ গুরুত্ব দিচ্ছে, তারা সে দিন কোথায় ছিল? আমরা জনা দশেক ছেলে হাত তুলে নিলে, কলেজ দখলে রাখা সম্ভব হবে না। কোনও নেতা কিছু করতে পারবে না।’’
খনিকটা দূরে দাঁড়িয়ে ছিলেন এক যুবক। দৌড়ে এসে তিনি বলেন, ‘‘আমাদের অনেক ছেলের বিরুদ্ধেই দু’তিনটে করে মামলা ঝুলছে। বেশির ভাগই দুঃস্থ। কোনও রকমে দিন কাটে। তাদের কারও পক্ষে মোটা টাকা দিয়ে জামিন নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। অথচ সেই সব কর্মীদের আজ দল থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে!’’
ওই যুবকেরা প্রায় সকলেই কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ৩৪, ৩৫ ও ৩৭ নম্বর মণ্ডলের কর্মী। ওই তিন মণ্ডলের সভাপতি পরিবর্তন নিয়ে কৃষ্ণগঞ্জে ইতিমধ্যেই ব্যাপক ক্ষোভ রয়েছে। যুবকদের অভিযোগ, যাদের কোথাও কোনও গুরুত্ব নেই, যারা বিভিন্ন দল থেকে হালে এসেছে, তাদেরই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কাউকে কিছু না জানিয়ে, স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা না করে মণ্ডল সভাপতিদের সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা তাঁরা মানতে পারছেন না। রাজ্য সভাপতি ও উচ্চস্তরের নেতারা এ দিন উপস্থিত রয়েছেন বলেই তাঁদের কাছে বিষয়টি জানাতে এসেছেন।
এ দিন সাতটি সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্ব এই কর্মশালায় হাজির ছিলেন। দিলীপ ছাড়াও ছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিবপ্রকাশ। দলের দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা নেতারা সকলেই ছিলেন। পরিস্থিতি এমন ঘোরালো হয়ে ওঠে যে মঞ্চ ছেড়ে নেমে আসতে হয় সাংসদ জগন্নাথ সরকারকে । তিনি গিয়ে ওই যুবকদের সঙ্গে কথা বলেন। ঘটনাচক্রে, চার মণ্ডল সভাপতিকে সরিয়ে তিনিই নিজের ঘনিষ্ঠদের পদে বসানোর জন্য কলকাঠি নেড়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। কৃষ্ণগঞ্জের যুবকদের নিরস্ত করার পরে তিনি বলেন, “মণ্ডল সভাপতি পরিবর্তন সব নিয়ম মেনেই করা হয়েছে। তবু কয়েক জনের এ নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। দলের নেতৃত্ব প্রয়োজনে তাদের নিয়ে আলোচনায় বসবে।” পরে সাংবাদিক সম্মেলনে দিলীপ দাবি করেন, “মণ্ডল সভাপতি পরিবর্তন নিয়ে কোনও গণ্ডগোল নেই। সব ঠিক হয়ে যাবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy