Advertisement
২৪ নভেম্বর ২০২৪
CPIM

CPIM: সাফল্যে চাঙ্গা, পুর নির্বাচনের চিন্তা সিপিএমে

শান্তিপুরের উপনির্বাচনে উল্লেখযোগ্য ভোটবৃদ্ধি অক্সিজেন দিয়েছে বাম শিবিরকে। এ বার সামনেই পুরভোট আসছে ধরে নিয়ে সেটিকেই নিশানা করছে তারা।

ভোটের ফলাফলের দিন সৌমেন মাহাতো।

ভোটের ফলাফলের দিন সৌমেন মাহাতো। ফাইল চিত্র।

সম্রাট চন্দ
শান্তিপুর শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০২১ ০৫:৫৫
Share: Save:

গত কয়েকটি নির্বাচন থেকেই ক্রমশ ভোট কমছিল বামেদের তথা সিপিএমের। তবে সম্প্রতি শান্তিপুরের উপনির্বাচনে উল্লেখযোগ্য ভোটবৃদ্ধি অক্সিজেন দিয়েছে বাম শিবিরকে। এ বার সামনেই পুরভোট আসছে ধরে নিয়ে সেটিকেই নিশানা করছে তারা।

সাম্প্রতিক একাধিক নির্বাচনের নিরিখে নদিয়া জেলা জুড়ে ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু হয়েছে বামেদের শক্তি। তৃণমূলের পরেই দ্বিতীয় শক্তি হিসাবে উত্থান হয়েছে বিজেপির। বামেদের ভোট যতটা কমেছে, ততটাই ভোট বেড়েছে বিজেপির। কাজেই বাম ভোট যে গেরুয়া শিবিরের দিকেই চলে গিয়েছে তা স্পষ্ট রাজনৈতিক মহলের কাছেও। তবে শান্তিপুর উপনির্বাচনে বামেরা একজোট হয়ে ঝাঁপিয়েছিল। নিজেদের ভোট ঘরে ফিরিয়ে আনার তাগিদও ছিল। তাতে বিজেপির পরে তৃতীয় স্থানেই শেষ করেছেন সিপিএম প্রার্থী। তবে এবার একাকী লড়াইয়ে তাদের ভোট বৃদ্ধি হয়েছে অনেকটাই।

২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটে বাম-কংগ্রেস জোটের হয়ে শান্তিপুরে প্রার্থী দেয় কংগ্রেস। সে বার ৫১.৭৫ শতাংশ ভোট পেয়ে জেতেন কংগ্রেস প্রার্থী। তৃণমূলের ভোট ছিল ৪২.০২ শতাংশ, বিজেপির ৩.৭৫ শতাংশ। তিন বছর পরের লোকসভা ভোটে বাম ও কংগ্রেস আলাদা লড়াই করে। শান্তিপুর বিধানসভা কেন্দ্র এলাকায় সিপিএম প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোট ছিল ৫.৫৫ শতাংশ। আর কংগ্রেস প্রার্থী পান ১.৬৬ শতাংশ ভোট। আর বিজেপির ভোট বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৫৩.৭৩ শতাংশ। তৃণমূল প্রায় ৩৭.০৩ শতাংশ ভোট পায়। এ বার বিধানসভা ভোটে শান্তিপুরে বিজেপি প্রার্থী পান ৪৯.৯৪ শতাংশ ভোট। মোর্চা সমর্থিত কংগ্রেস প্রার্থী পান ৪.৪৮ শতাংশ আর তৃণমূল পায় ৪২.৭২ শতাংশ।

এই পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট ছিল, বামেদের ভোট হ্রাস হয়েছে যেমন, তেমনই বৃদ্ধি হয়েছে বিজেপির ভোট। তবে উপনির্বাচনে সেই ছবি বদলেছে অনেকটাই। বিপুল ভোট বৃদ্ধি করে জয় পেয়েছে তৃণমূল। তাদের ভোট দাড়িয়েছে প্রায় ৫৫.৪০ শতাংশে। বিজেপির ভোট কমে হয়েছে ২৩.৪৩ শতাংশ। আর একা লড়াই করলেও বাম প্রার্থীর ভোট ১৯.৭৫ শতাংশ। কংগ্রেস পেয়েছে ১.৪২ শতাংশ ভোট।

শুধু যএ বামেদের ভোট বেড়েছে, তা নয়। শান্তিপুর শহরে তৃণমূলে সঙ্গে মূলত লড়াই হয়েছে সিপিএম প্রার্থীর। সার্বিক ভাবে প্রাপ্ত ভোটের নিরিখে শান্তিপুর শহরে বামেরা দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। একটি ওয়ার্ডে তৃণমূলকে পিছনে ফেলে প্রথম স্থানে রয়েছে তারা। পাশাপাশি, শহরের ২৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৯টিতে দ্বিতীয় স্থানে আছে বামেরা। এই ফল তাদের কর্মিদের উজ্জীবিত করবে বলেই মনে করছেন বাম নেতারা। তবে এই ভোট ধরে রাখাটাও যে চ্যালেঞ্জ, তা-ও মানছেন তারা।

শান্তিপুর কেন্দ্র দীর্ঘদিন বামেদের হাতছাড়া। তবে এক সময়ে সেখানে বামেদেরও দাপট ছিল। শাসক দলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অন্তত শহরাঞ্চলে প্রধান বিরোধী হিসাবে ঘুরে দাঁড়ানো শুধু নয়, নিজেদের হারানো জমি ফেরানোটাও লড়াই তাদের কাছে। পথে নেমে আন্দোলনের পাশাপাশি সংগঠনকে আরও মজবুত করা এবং মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়াকে গুরুত্ব দিয়েই এগোতে চাইছে তারা।

সিপিএমের জেলা সম্পাদক তথা নদিয়া জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক সুমিত দে-র দাবি, “মানুষ বুঝতে পেরেছে যে বিকল্প শক্তি বিজেপি নয়, বিকল্প বামেরা। এই ফল ধরে রাখার জন্যই আমাদের ঝাঁপাতে হবে।”

সিপিএমের এই পুনরুত্থানের অন্যতম কান্ডারি দলের শান্তিপুর এরিয়া কমিটির সম্পাদক তথা এ বারের প্রার্থী সৌমেন মাহাতোর। এর আগে তিন বার তিনি কাউন্সিলর ছিলেন। ২০০৮ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ছিলেন পুরসভায় বিরোধী দলনেতা। তার পরের দফায় ২০২০ পর্যন্ত তিনি একাই ছিলেন পুরসভায় দলের শিবরাত্রির সলতে। সৌমেন বলছেন, “মানুষের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত বিষয়গুলো, পুরসভার নাগরিক পরিষেবার সমস্যা, অনুন্নয়ন, দুর্নীতি নিয়ে আরও বেশি করে পথে নামব আমরা। পুরবাসীর নানা দাবিকে গুরুত্ব দিয়ে তা আদায়ের জন্য লড়াই আন্দোলনের পথেই এগোতে হবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

CPIM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy