পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি সিপিএম কর্মীদের। চলল ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা। তেহট্ট মহকুমাশাসকের দফতর সংলগ্ন এলাকায়। বৃহস্পতিবার বিকেলে। ছবি: সাগর হালদার sagarhaldar741160@gmail.com
কয়েক দিন আগেই সিপিএমের যুব ও ছাত্রদের নদিয়া জেলা পরিষদ অভিযানে অশান্ত হয়েছিল কৃষ্ণনগর। বৃহস্পতিবার আবার তেহট্ট মহকুমাশাসক অফিস অভিযানে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি হল সিপিএম নেতাকর্মীদের।
সিপিএমের দাবি, অন্তত হাজার পাঁচেক লোকের জমায়েত হয়েছিল। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা সুজন চক্রবর্তীর উপস্থিতিতে ব্যারিকেড ভেঙে ঢোকার চেষ্টা হল। পুলিশকে লক্ষ করে ছোড়া হল ইট। প্রায় ত্রিশ মিনিট ধরে চলে এই গোলমাল। অনেকক্ষণের চেষ্টায় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে মহকুমাশাসকের দফতর সংলগ্ন কালীতলা পাড়ায় এই অভিযানের কথা আগেই ঘোষণা করেছিল সিপিএম। এ দিন তেহট্ট হাউলিয়া পার্ক মোড়ে পথসভার পরে একটি মিছিল করে মহকুমাশাসকের অফিসের দিকে রওনা দেয়। তাতে শামিল হন তেহট্ট ও পলাশিপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রের সিপিএম নেতাকর্মীরা। সুজন দাবি করেন, “তৃণমূলের পা-চাটা মনোভাব নিয়ে চলতে গিয়ে মানুষের সর্বনাশ হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে এই অভিযান।”
এ দিন সকালেই মহকুমাশাসকের দফতরের দুই দিকে ব্যারিকেডের ব্যবস্থা করে পুলিশ প্রশাসন। চাতরপাড়ার দিকে লোহার রড দিয়ে উঁচু ব্যারিকেড করে তার পিছনে বাঁশ দিয়ে ঘেরা হয়। অন্য দিকে লোহার ব্যারিকেড বসানো হয়। দুপুর গড়াতেই দফতরের সামনে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়ন হয়। মিছিল যে দিক দিয়ে ঢোকার কথা, সেই রাস্তার দিকে তাক করে লাগানো ছিল জলকামান। বিদ্যুৎ খুঁটিতে লাগানো হয়েছিল সিসি ক্যামেরা।
এ দিন পথসভার শেষে সওয়া ৫টা নাগাদ হাউলিয়া পার্ক মোড় থেকে শুরু হওয়া মিছিল জিতপুর মোড় থেকে বাজার হয়ে চাতরপাড়া পার করে মহকুমাশাসকের দফতরের দিকে এগোয়। সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ সেই মিছিল দফতরের কাছে আসতেই উত্তেজনা তৈরি হয়। সিপিএম কর্মীরা এসে ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন। কেউ কেউ ব্যারিকেড বেয়ে উঠে পেরনোর চেষ্টাও করেন। কিন্তু পুলিশ তৎপর থাকায় ব্যারিকেড ভাঙা যায়নি। কিছুক্ষণের মধ্যেই হট্টগোলের মধ্যে মিছিল থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে উড়ে আসতে থাকে ইট। প্রবল বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। ব্যারিকেডের পাশে থাকা দু’টি বাড়ির ছাদ থেকেও ইট ছোড়া হতে থাকে। তবে কোনও পুলিশকর্মী জখম হননি বলেই জানা গিয়েছে। কিন্তু পুলিশ লাঠি বা জলকামানও চালায়নি।
ইটবৃষ্টি শুরু হওয়ার পর পুলিশ মাইকে সিপিএম নেতৃত্বকে সচেতন করতে থাকে। খানিক পরে সিপিএম নেতা সুজন, দলের তেহট্ট দক্ষিণ এরিয়া কমিটির সম্পাদক সুবোধ বিশ্বাস, প্রাক্তন বিধায়ক রনজিৎ মণ্ডল কর্মীদের বুঝিয়ে-সুজিয়ে ব্যারিকেড চত্বর থেকে সরিয়ে নিয়ে যায়। এর পরেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূলের অন্যতম শীর্ষ নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘নবজোয়ার’ প্রসঙ্গে সুজনের কটাক্ষ, “ওটা গণখোঁয়াড়, যেখানে তিনশো কোটি খরচ করা হচ্ছে। পঞ্চায়েত ভোট লুট করার মহড়া চলছে।”
আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে আইএসএফ-এর সঙ্গে সিপিএমের জোটের সম্ভাবনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তৃণমূল-বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে সবাইকে এক জোট হতে হবে। তবে আগে ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণা হোক, তার পর মানুষের স্বার্থে আমাদের কর্মসূচি তৈরি করব।”
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(গ্রামীণ) কৃশানু রায় বলেন, “ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা হয়েছে, পুলিশকে লক্ষ্য করে কিছু ছোড়া হয়েছে। সব কিছু বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy