প্রতীকী ছবি।
লকডাউনের কারণে কর্মসূত্রে দুবাইয়ে যাওয়া বাঙালিরা বিভিন্ন জায়গায় আটকে রয়েছেন। গত ৭ মে থেকে দেশের কয়েকটি বিমান সেখানে থাকা ভারতীয়দের নিয়ে এলেও কলকাতায় এখনও কোনও বিমান আসেনি। ফলে, তাঁদের অনেকেই বাড়ি ফিরতে পারছেন না বলে অভিযোগ। তাঁরা এখন কী ভাবে নিজের রাজ্যে ফিরবেন, তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন।
করিমপুরের বাসিন্দা বিভাস ধর কয়েক বছর আগে থেকেই কর্মসূত্রে নিয়মিত দুবাইয়ে যাতায়াত করেন। বর্তমানে দুবাইয়ের হোটেলে ঘরবন্দি বিভাস ফোনে জানাচ্ছেন, টানা চার সপ্তাহ কাজের পরে তিনি দুবাই থেকে বাড়ি ফেরেন। আবার চার সপ্তাহ বাড়িতে ছুটি কাটিয়ে দুবাইয়ে গিয়ে কাজে যোগ দেন। কিন্তু এ বার গত ১৭ মার্চ দুবাই থেকে বাড়ি ফেরার বিমানের টিকিট থাকলেও লকডাউনের কারণে সেই টিকিট বাতিল হয়ে যায়।
তিনি আরও জানিয়েছেন, করোনা সংক্রমণের কারণে সেই সময়ে প্রথমে তাঁদের কাজের জায়গায় চোদ্দো দিন কোয়রান্টিনে থাকতে হয়েছে। এর পর কোভিড ১৯ পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ এলে কোম্পানির খরচেই কাজের জায়গা থেকে তাঁদের নিয়ে এসে দুবাইয়ের একটি হোটেলে রাখা হয়। সেখানেও তাঁদেররে আরেক দফা কোয়রান্টিনে থাকতে হয়। বর্তমানে একই হোটেলে টানা প্রায় তিরিশ দিন ঘরবন্দি রয়েছেন তিনি।
বিভাসের কথায়, “কলকাতায় ফেরার জন্য দুবাই দূতাবাসে নাম নথিভুক্ত করেছি। কিন্তু জানানো হচ্ছে, কলকাতায় সরাসরি কোনও বিমান যাচ্ছে না। ফলে, দেশের অন্য শহরে গিয়ে সেখান থেকে আবার কলকাতায় ফেরা কঠিন হবে। যে কারণে আমাদের মতো অনেক বাঙালি এই সমস্যায় ভুগছি।” ওই একই হোটেলে রয়েছেন আর এক জন বাঙালি বারাসাতের বাসিন্দা বৈষ্ণব কবিরাজ। তিনিও ফোনে জানান, আগে জানানো হয়েছিল ১৭ মে-র পর বিমান পরিষেবা চালু হতে পারে। কিন্তু এখন সে ব্যাপারেও কোনও খবর কেউ দিতে পারছেন না। বৈষ্ণব বলেন, ‘‘পরিবারকে ছেড়ে আর কত দিন এ ভাবে বাইরের দেশে হোটেলে কাটাতে হবে, বুঝতে পারছি না। রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার যদি আমাদের ফেরানোর ব্যবস্থা করে তা হলে উপকৃত হব।’’
একই ভাবে লকডাউনে স্বামী দুবাই থেকে না ফিরতে পারায় চরম সমস্যায় পড়েছেন ব্রেন-টিউমার আক্রান্ত অসুস্থ মৌসুমি ধর। তিনি এ দিন কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “আমি নিজে অসুস্থ। বাড়িতে ছিয়াশি বছরের বৃদ্ধ শ্বশুর ও বৃদ্ধা শাশুড়ি রয়েছেন। সবাই খুব দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছি। ওর ঘরে ফেরার অপেক্ষায় আছি।”
দুবাইয়ে নির্মাণ সংস্থায় দিনমজুরের কাজে গিয়েও আটকে রয়েছেন রাজ্যের তথা নদিয়া জেলার অনেক মানুষ। তাঁদের ফেরানোর কী হবে, সে বিষয়ে সংশয়ে ওই সব নির্মাণকর্মীর পরিবার। যেমন, করিমপুর ২ ব্লকের বিধান বিশ্বাস। নির্মাণ সংস্থার কাজে দুবাইয়ে গিয়ে আটকে রয়েছেন। তিনি বাড়িতে ফোন করে জানিয়েছেন, দুবাইয়ে বেশ কিছু দিন কাজকর্ম বন্ধ থাকার পরে পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রেখে এখন আবার কাজ শুরু হয়েছে। বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হলে তার পরেই তিনি বাড়ি ফিরবেন।
যদিও বাড়িতে তাঁর স্ত্রী নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না। তাঁদের একটাই দাবি— ঘরের মানুষ ঘরে ফিরুক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy