প্রতীকী ছবি।
গুজরাত থেকে ট্রেনে দীর্ঘ সফর করে ফেরা পরিযায়ী শ্রমিকেরা খাবারটুকু পেলেন না চাকদহের এক কোয়রান্টিন সেন্টারে। উল্টে তাঁদের বাড়ির লোকদের খাবার দিয়ে যেতে বলা হয়েছে বলে অভিযোগ ওই শ্রমিকদের।
গুজরাত থেকে ফেরা শ্রমিকদের নিয়ে একটি ট্রেন রবিবার দুপুরে ঢোকে বর্ধমানে। সেখান থেকে রাতে তাঁরা বাসে আসেন কৃষ্ণনগরে। ওই শ্রমিকদের মধ্যে চারজন ছিলেন চাকদহের আদিবাসীপাড়ার বাসিন্দা। তাঁদেরই একজন শ্যামল সোরেন অভিযোগ করেন, বাস থেকে নামার পর জল আর সামান্য কিছু খাবার মিলেছিল। ব্যস, ওই টুকুই তারপর আর কিছু খেতে দেওয়া হয়নি ওই ক্ষুধার্ত শ্রমিকদের। ভোরে চাকদহের দুর্গানগরে বিপিনবিহারী বিদ্যাপীঠে কোয়রান্টিন সেন্টারে পাঠানো হয় তাঁদের। সেখানেও খাবার মেলেনি। উল্টে, বাড়ি থেকে খাবার আনিয়ে নিতে বলা হয় তাঁদের।
এরপর নিজেদের দুর্দশার কথা জানিয়ে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন শ্যামলরা। ভিডিয়োয় শ্যামল বলেন, ‘‘আমরা যে কোনও জায়গায় থাকতে রাজি। কিন্তু আমাদের খাবারটুকু তো দিতে হবে। পেটে খাবার না পড়লে, থাকব কী করে!’’ তিনি জানান, তাঁর বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা-মা রয়েছেন। তাঁদের পক্ষে দু’কিলোমিটারের বেশি পথ অতিক্রম করে খাবার দিতে যাওয়া সম্ভব নয়। এ নিয়ে চাকদহ পুরসভার সেনেটারি ইনস্পেক্টর সুপ্রকাশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘এই শ্রমিকরা যে আসবেন তা আমাদের জানা ছিল না। কত জন আসবেন আমরা জানতাম না। সে জন্য খাবারের ব্যবস্থা ছিল না। তাই বাড়ি থেকে একবেলা খাবার আনতে বলা হয়েছিল। কিন্তু রাতের খাবারের ব্যবস্থা করেছি।’’
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সকালে গণনার সময় দেখা যায় আদিবাসীপাড়ার ওই শ্রমিকরা কোয়রান্টিন সেন্টারে নেই। পরে তাঁদের বাড়িতে পাওয়া যায়। সেখান থেকে ফের কোয়রান্টিন সেন্টারে ফিরিয়ে আনা হয়।
সুপ্রকাশ বিশ্বাস বলেন, “ওদের এই সেন্টারেই থাকার কথা ছিল। এখানে কাঁচড়াপাড়ার কয়েকজন বাসিন্দা এসেছিলেন। তাঁদের বাড়ি যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু ভুল বুঝে আদিবাসিপাড়ার যুবকরা বাড়ি চলে যান। পরে ওঁদের ফিরিয়ে আনা হয়।’’ ওই শ্রমিকদের পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, খাবার না পেয়ে দু’মুঠো মুখে দিতেই বাড়ি গিয়েছিলেন তাঁরা। শ্যামলের বাবা বাবলু সোরেন বলেন, “ছেলেটা বাড়িতে বেশি সময় বসতে পারেনি। ওদের নিয়ে গিয়েছে।” শ্যামল ছাড়া বাকি তিন শ্রমিক হলেন গোপাল সোরেন, ভিকু সোরেন, এবং বাপি মান্ডি। অন্য দিকে, ওই শ্রমিকরা কোয়রান্টিন সেন্টার থেকে বাড়ি চলে আসায় কিছুটা আশঙ্কিত প্রতিবেশীরা। এ দিন দুপুরে গ্রামে প্রবেশ করা মাত্র দেখা যায় বিভিন্ন জায়গায় জটলা। সকলেই ওই সব শ্রমিকদের বাড়ি ফেরার বিষয় নিয়ে আলোচনা করছেন। স্থানীয় বাসিন্দা পানু সোরেন বলেন, “ওরা বাড়িতে না এসে সরাসরি কোয়রান্টিন সেন্টারে গেলে ভাল হত। ওদের জন্য খুব ভয় লাগছে। জানি না, কী হবে।”
তবে শ্যামল, ভিকুদের পরিবারের বক্তব্য, খাবারটুকু জুটলে তাঁদের বাড়ি আসতে হত না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy