—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
২০২৫ সালের মধ্যে দেশ থেকে যক্ষ্মা বা টিউবারকিউলোসিস (টিবি) নির্মূল করতে একশো দিনের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে বাড়ি-বাড়ি পৌঁছে গিয়ে যক্ষ্মা রোগীর সন্ধান করার পাশাপাশি সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে রোগী মৃত্যুহার কমানোই লক্ষ্য। সেই সঙ্গে যক্ষ্মা রোগ সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে বিশেষ প্রচার ও অভিযান চালানো হচ্ছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানানো হয়েছে। টানা একশো দিন ধরে চলা এই কর্মসূচিকে সফল করতে একাধিক দফতরের সঙ্গে যৌথ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। জেলার স্বাস্থ্য কর্তারা জানাচ্ছেন, যক্ষ্মায় আক্রান্ত হতে পারে এমন একাধিক বিপজ্জনক জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই বিশেষ ধরনের অভিযান চালানো হচ্ছে।
এখনও পর্যন্ত প্রতি বছর হাজার হাজার যক্ষ্মা রোগীর সন্ধান মেলে। কোনও ভাবেই যক্ষ্মা রোগ পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব না হওয়ায় এই বিশেষ অভিযান কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। ছ’টি ‘ভার্নারেবল পপুলেশন’ বা যাঁদের নিয়ে চিন্তা, তাঁদের চিহ্নিত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে যাঁদের নিয়ে চিন্তা, তাঁদের মধ্যেও এই অভিযান চালানো হচ্ছে। জেলার স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্র সরকারের তরফে ২০২৫ সালের মধ্যে গোটা দেশ যক্ষ্মা-মুক্ত করার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। সেই মতো গত বছর ৯ ডিসেম্বর থেকে গোটা দেশের পাশাপাশি নদিয়া জেলাতেও ‘হানড্রেড ডেজ ইনটেনসিফায়েড টিবি ক্যাম্পেন’ শুরু হয়েছে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে আশাকর্মীরা যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে, এমন মানুষজনকে চিহ্নিত করবেন। পাশাপাশি, তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর ব্যবস্থা করবেন। ধূমপায়ী, ডায়াবেটিক রোগী-সহ ছয় ধরনের মানুষের পাশাপাশি বৃদ্ধাশ্রম, ইটভাটা, খনি, বিড়ি ও বাস-লরি শ্রমিক-সহ একাধিক পেশার ব্যক্তিদের পরীক্ষা করা হবে। আশাকর্মীরা জেলায় বাড়ি-বাড়ি গিয়ে এই সমীক্ষা চালাচ্ছেন।
যদি কোনও ব্যক্তির শরীরে যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ দেখা যায়, তা হলে রোগীকে স্বাস্থ্য কেন্দ্র নিয়ে গিয়ে কফ ও বুকের এক্স-রে-এর মতো প্রয়োজনীয় নানা পরীক্ষা করা হচ্ছে। যাঁদের যক্ষ্মা রোগ ধরা পড়ছে, তাঁদের নামের তালিকা তৈরি করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শুরু করা হচ্ছে। যক্ষ্মা সংক্রান্ত ভ্রান্তি দূর করতে সচেতনতা মূলক কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। সে কাজে শিক্ষা, শ্রম, রেল, জাতীয় সড়ক, পরিবহণ-সহ বেশ কয়েকটি দফতরের সঙ্গে যৌথ কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে।
গত বছর নদিয়া জেলায় মোট ৩ হাজার ৫৬০ জন যক্ষ্মা রোগীর সন্ধান মিলেছিল। ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত সংখ্যাটা ছিল ৩ হাজার ৪০০-র মতো। তার পর থেকে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে সমীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে। এখনও পর্যন্ত এই অভিযানের মাধ্যমে প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার মানুষের যক্ষ্মা পরীক্ষা করা হয়েছে। যক্ষ্মা রোগীর সন্ধান মিলেছে প্রায় আড়ইশো জন।
জেলার কর্তদের দাবি, এই বিশেষ অভিযান না হলে এই যক্ষ্মা রোগীদের সন্ধান পাওয়া সম্ভব হত না। ফলে, তাঁদের চিকিৎসাও হত না। ওই অভিযান চলবে ২৪ মার্চ পর্যন্ত। জেলার যক্ষ্মা আধিকারিক পার্থপ্রতিম পাত্র বলেন, “আমাদের কর্মীরা তো বাড়ি-বাড়ি গিয়ে রোগীর সন্ধান করছেন। কিন্তু সব স্তরের মানুষকেই এগিয়ে আসতে হবে। কোনও ব্যক্তির মধ্যে যদি যক্ষ্মা রোগের লক্ষণ দেখা যায়, তাঁকে অবশ্যই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসুন। সবাই এগিয়ে না এলে এই বিশাল কর্মসূচি সফল করা কঠিন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy