খাবার বিলি। নিজস্ব চিত্র
গত সাত দিন ধরে নদিয়ার করোনা-পরিস্থিতি তুলনায় অনেকটা আশাব্যঞ্জক। হোম কোয়রান্টিনে থাকা মানুষের সংখ্যা ২৮ হাজার থেকে কমে শুক্রবার ৭ হাজার হয়েছে। কোয়রান্টিন সেন্টারেও মানুষের সংখ্যা বাড়েনি। শুধু তাই নয়, দু’দিন আগেও যেখানে জেলার দুই হাসপাতালে আইসোলেশন সেন্টারে ১৫ জন ভর্তি ছিলেন শুক্রবার সেই সংখ্যা কমে হয়েছে মাত্র দু’জন। যদিও যে কোনও মুহূর্তে এই পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে মনে করছেন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা, এবং সেই কারণে নজরদারিতে কোনও খামতি রাখা হচ্ছে না।
যদিও ইতিমধ্যে বিভিন্ন মহলে অনেকেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন, প্রশাসনের রিপোর্টে জেলার সঠিক পরিস্থিতি কি আদৌ উঠে আসছে, নাকি ঠিক ভাবে পরীক্ষা হচ্ছে না বলে অনেক সত্যিকারের রোগী অধরা থেকে যাচ্ছে? আরএসপি-র জেলা সম্পাদক শঙ্কর সরকারের দাবি, “গোটা দেশের মতো এই জেলাতেও প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম পরীক্ষা হচ্ছে। ফলে ঠিক তথ্য উঠে আসছে না।” বিজেপি-র নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার মিডিয়া কনভেনর সন্দীপ মজুমদার আবার এক পা এগিয়ে দাবি করেন, “গোটা রাজ্যের মতো নদিয়াতেও প্রকৃত তথ্য চাপা দেওয়া হচ্ছে। যেটা একেবারেই কাম্য নয়।” মানবাধিকার কর্মী তাপস চক্রবর্তীর দাবি, “শুধু হোম কোয়রান্টিন করলেই হবে না। প্রয়োজন পর্যাপ্ত পরীক্ষা। তবেই বোঝা যাবে, এখানেও গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে কিনা।”
এই অভিযোগ মানতে নারাজ জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। তাঁদের মতে, এখন যা পরিস্থিতি তাতে কোনও তথ্য চাপা মুশকিল। শহর তো বটেই, গ্রামাঞ্চলেও মানুষ এতটাই আতঙ্কিত হয়ে আছেন যে, কারও সামান্য সর্দিজ্বর হলে প্রতিবেশীরাই স্বাস্থ্য দফতরে বা পুলিশে ফোন করতে শুরু করছেন। তার উপর সংবাদ মাধ্যম তো আছেই।
জেলার তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, নদিয়ায় এখনও পর্যন্ত সন্দেহভাজন হিসাবে ৫৯ জনকে আইসোলেশনে নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে ২৭ জনের লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। এর মধ্যে দিল্লি ছুঁয়ে আসা বার্নিয়ার পাঁচ জন ছাড়া আর কারও করোনা ধরা পড়েনি। তাঁদের সংস্পর্শে আসা কারও রিপোর্ট পজ়েটিভ আসেনি। আইসোলেশনে থাকা কার কার লালারস পরীক্ষা করে হবে তা স্বাস্থ্য দফতরের সর্বোচ্চ স্তর থেকে ঠিক হয়। যাঁদের পরীক্ষা হয়েছে, তাঁরা ছাড়া আইসোলেশনে থাকা অন্য কারও দেহেও পরে রোগ ধরা পড়েনি। এই সব কিছু পরিস্থিতি ভাল দিকে যাওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে বলে স্বাস্থ্যকর্তাদের ধারণা।
বৃহস্পতিবার দিল্লি থেকে আসা এক বৃদ্ধের মৃতদেহ নিয়ে আসাননগরে কিছু সমস্যা তৈরি হয়। ওই বৃদ্ধের করোনাভাইরাসের কোনও লক্ষণ ছিল না বলে জানার পরেও তাঁর পরিবারের ন’জন ও মৃতদেহ বহনকারী অ্যাম্বুল্যান্সের চালক ও সহকারীকে কোয়রান্টিন সেন্টারে রাখা হয়েছে। এ ব্যাপারে বারবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
রাতে জেলাশাসক বিভু গোয়েল বলেন, “এখনও পর্যন্ত যত রোগীর দেহে প্রাথমিক লক্ষণ দেখা গিয়েছে, তাঁদের সকলেরই পরীক্ষা করা হয়েছে। এমন কেউ নেই যাঁর মধ্যে রোগের লক্ষণ দেখা গিয়েছে, অথচ পরীক্ষা হয়নি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy