তিন দিন আগেও যেখানে রাস্তায় অপ্রয়োজনে বেরোনো মানুষকে ঘরে ফেরাতে পুলিশকে লাঠি চালাতে হয়েছিল সেখানে শুক্রবার সকালে কৃষ্ণনগরের নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া রাস্তায় প্রায় কাউকেই দেখা যায়নি। কল্যাণী থেকে করিমপুর, এ দিন সর্বত্রই চোখে পড়লো সচেতনতার ছবি। পুলিশ সে ভাবে চোখে না পড়লেও মানুষ সরকারি নির্দেশ মেনে শুক্রবার বাড়িতেই ছিলেন।
সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ পোস্ট অফিস মোড়ে দেখা গেল, একটি বেঞ্চে মাস্ক পরে দু’জন সিভিক ভলান্টিয়ার বসে আছেন। পাশে রাখা ছোট বক্সে মুখ্যমন্ত্রীর কথা ও সুরে রচিত ইন্দ্রনীল সেনের গলায় গাওয়া গান বাজছে,—" ভিড় থেকে সব্বাই দূরে থাকো, করোনা কে ছুঁতে দেব না"। কোথাও প্রশাসন আবার কোথাও কিছু মানুষ ব্যক্তিগত ভাবে উদ্যোগী হয়ে রেশন দোকান, মুদির দোকান, ওষুধের দোকানের সামনে লাইন দেওয়ার জন্য এক মিটার ব্যবধানে খড়ি দিয়ে গোল গোল দাগ এঁকে দিয়েছেন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মানুষ সেই নিয়ম মানার চেষ্টা করছেন। মানুষ ক্রমশ এই পরিস্থিতির সঙ্গে অভ্যস্থ হচ্ছেন এবং নিয়ম মানা অনুশীলন করছেন সচেতন ভাবে। অনেক জায়গায় দাগ না থাকলেও ক্রেতারা নিজেরাই দূরত্ব রেখে দাঁড়াচ্ছেন। কৃষ্ণনগর পোস্ট অফিস মোড়ের এক ওষুধের দোকানের সামনে দেখা গেল, ক্রেতারা যথেষ্ট দূরত্ব রেখেই লাইন দিয়েছেন। তবে ব্যতিক্রমও আছে। ঠিক উল্টো দিকের এক ওষুধের দোকানের সামনে দেখা গেল, ওষুধ নেওয়ার জন্য ঠেলাঠেলি, কথা কাটাকাটি চলছে।
বেশির ভাগ বাজারে সকালের দিকে বেশ ভিড় ছিল। বেলা এগারোটাতেও কৃষ্ণনগর পাত্রবাজার ছিল লোকে লোকারণ্য। এক মহিলা এসেছেন বাচ্চা কোলে। বললেন, ‘‘বাড়িতে থাকতে চাইছে না। এত বায়না করছে যে, সঙ্গে আনতে হল।’’ সব থেকে খারাপ অবস্থা ঘূর্ণি বেলতলা বাজারে। আনাজ বিক্রেতারা প্রায় গা ঘেঁষাঘেঁষি করে বসে বিক্রি করছেন। মাছ বাজারেও ছিল বেশ ভিড়। নিরাপদ দূরত্বের বালাই নেই।
তেহট্টের হাউলিয়া বাজার, করিমপুর, কালীগঞ্জ , নবদ্বীপেও বাজার এলাকায় পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন সারাদিন প্রচার চালিয়েছেন, নজরদারি চালিয়েছেন যাতে জিনিসের দাম না বাড়ে। রানাঘাট, চাকদার বিভিন্ন বাজারে প্রশাসন থেকে মাইকিং করা হয়েছে যাতে পরিবার পিছু এক জন সদস্য বাজারে যান। তাতেও সকালের বাজারের ভিড় এড়ানো যাচ্ছে না।
শক্তিনগর জেলা হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক কৌশিক ভট্টাচার্যের কথায়, ‘‘নিজেদের ও সমাজকে বাঁচাতে আমাদের সবাইকে ভিড় এড়িয়ে পরস্পরের থেকে কম করে ১ মিটার দূরত্ব বজায় রাখার কাজটা করতেই হবে।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy