Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
নোট-২

টাকা নেই, বন্ধ বাড়ি গড়া

ট্যাঁকে টাকা নেই। তাই সাধের দালানকোঠাও উঠছে না। ইট-বালি-সিমেন্ট কিনতে লোকে হিমশিম। তার উপরে রাজমিস্ত্রি আর তার হেল্পারের মজুরি আছে, রয়েছে মালপত্র টেনে আনার গাড়িভাড়া।

সামসুদ্দিন বিশ্বাস ও সুজাউদ্দিন
কৃষ্ণনগর ও ডোমকল শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৬ ০০:৪০
Share: Save:

ট্যাঁকে টাকা নেই। তাই সাধের দালানকোঠাও উঠছে না।

ইট-বালি-সিমেন্ট কিনতে লোকে হিমশিম। তার উপরে রাজমিস্ত্রি আর তার হেল্পারের মজুরি আছে, রয়েছে মালপত্র টেনে আনার গাড়িভাড়া।

কে দেবে?

খাতায়-কলমে, সেভিংস ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে সপ্তাহে ২৪ হাজার আর কারেন্ট অ্যাকাউন্ট থেকে ৫০ হাজার টাকা সম্বল। তা-ও মিলছে না ঠিক মতো সব জায়গায়। যদিও বা মেলে, তা তুলতে মাথার ঘাম পায়ে। ফলে বেশির ভাগ জায়গাতেই নির্মাণ কাজ বন্ধ, দু’এক জায়গায় যা-ও বা চলছে তা-ও টিমটিমে। শুধু নদিয়া জেলাতেই সরকার নথিভুক্ত লাখ চারেক নির্মাণকর্মী আছেন। মুর্শিদাবাদ জেলায় আরও বেশি। তাঁর পড়ে গিয়েছেন বিপাকে।

কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজে ৩০ লক্ষ টাকার নির্মাণ কাজের বরাত পেয়েছে শহরেরই একটি ঠিকাদার সংস্থা। সেটির এক কর্মকর্তা অমিত ঘোষ বলেন, “পর্যাপ্ত টাকা পাচ্ছি না। আমাদের যেখানে রোজ ২০-২৫ জন শ্রমিকের প্রয়োজ, নগদ টাকার অভাবে মাত্র চার-পাঁচ জনকে কাজ করানো যাচ্ছে।’’ ধুবুলিয়ার শ্রমিক সরবরাহের ঠিকাদার শুকচাঁদ মল্লিক বলেন, “ঠিকাদার ও বাড়ির মালিকরা আমাদের নগদ টাকা দিতে পারছেন না। ফলে আমরাও শ্রমিকদের টাকা দিতে পারছিনা। ঠিকঠাক পারিশ্রমিক না পেয়ে অনেকেই কাজে আসতে চাইছে না।”

ধুবুলিয়ার বটতলার একটি বাড়ির মালিক নগদ টাকা দিতে না পারায় মাঝপথে কাজ বন্ধ হয়েছে। বাড়ির মালিক সাবদার শেখ বলেন, “ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে কাজ করাচ্ছিলাম। এখন যা হাতে পাচ্ছি, তা দিয়ে কাজ চালানো সম্ভব নয়।” ডোমকলের রাজমিস্ত্রি মোক্তার হোসেনও বলেন, “টাকার অভাবে অনেক মালিক বাড়ি তৈরির কাজ মাঝপথে বন্ধ করে দিয়েছেন। যে কয়েকটা বাড়িতে কাজ চলছে সেখানে নগদ টাকার অভাব।” কুপিলার রাজমিস্ত্রি আনারুল ইসলাম বলেন, “টাকা না পাওয়ায় দু’টো বাড়িতে কাজে যাচ্ছি না। ”

ধুবুলিয়া বাহাদুরপুরের নির্মাণকর্মী প্রহ্লাদ ঘোষ বলেন, ‘‘নোট বাতিলের জেরে পারিশ্রমিক দিতে পারছে না ঠিকাদার। ধারে কাজ করতে হচ্ছে। কিন্তু পারিশ্রমিক না পাওয়ার ফলে আমাদের খুব সমস্যা হচ্ছে।’’ নারিকেলবাগানের সঞ্জয় সরকার বা তাহেরপুরের সমীর বৈদ্যেরাও একই কথা জানান।

কী আর করা যাবে? ঘড়ায় ঠনঠনে মোহর নেই, কে আর তাজমহল গড়বে?

অন্য বিষয়গুলি:

Construction industry Demonetisation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE