Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
প্রতারণার মামলা দায়ের

কড়ি ফেলে ভুয়ো ডিগ্রি

অভিযোগ কার্যত স্বীকার করেছেন শাহনাজ আলম। তিনি বলেন, ‘‘পশ্চিম মেদিনীপুরের বাসিন্দা সুদীপ মাইতির পাল্লায় পড়ে বিএডের করতে ইচ্ছুক এমন ৬২ জন ছাত্রছাত্রী প্রতারিত হয়েছেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:১০
Share: Save:

মোটা টাকার বিনিময়ে প্রায় ৬০ জনকে বিএডের ভুয়ো শংসাপত্র ও ভুয়ো মার্কশিট দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে লালগোলা কলেজের আংশিক সময়ের শিক্ষক তথা অস্থায়ী গ্রন্থগারিক শাহনাজ আলমের বিরুদ্ধে। ওই অভিযোগ জানিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে মুর্শিদাবাদ জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতেও মামলা দায়ের করেছেন প্রতারিত ছাত্রছাত্রীদের কয়েকজন। এ ছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে ১৮ জুলাই লালগোলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন বিএড প্রশিক্ষণ নিতে গিয়ে প্রতারিত হওয়া ছাত্রী মেহেরুন্নেসা খাতুন। পুলিশ জানায়, অভিযোগের তদন্ত চলছে। অন্য দিকে, প্রতারিতদের আইনজীবী শুভাঞ্জন সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘বিএডের ভুয়ো শংসাপত্র ও ভুয়ো মার্কশিট দেওয়ায় জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে শাহনাজ আলমের বিরুদ্ধে প্রতারিতদের কয়েকজন মামলা দায়ের করেছেন। দিন কয়েকের মধ্যে মামলাগুলির শুনানি শুরু হবে।’’

অভিযোগ কার্যত স্বীকার করেছেন শাহনাজ আলম। তিনি বলেন, ‘‘পশ্চিম মেদিনীপুরের বাসিন্দা সুদীপ মাইতির পাল্লায় পড়ে বিএডের করতে ইচ্ছুক এমন ৬২ জন ছাত্রছাত্রী প্রতারিত হয়েছেন। আমিও তাঁদের মধ্যে একজন। ছাত্র-ছাত্রীদের শতকরা ৭০ ভাগ ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। কিন্তু তা না মেনে ওঁরা আমার বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে করেছেন ও ক্রেতা সুরক্ষা আদালতে মামলা করেছেন।’’

তিনি বলেন, ‘‘ভুয়ো শংসাপত্র ও ভুয়ো মার্কশিট দেওয়ায় সুদীপ মাইতির বিরুদ্ধে দিন সাতেক আগে লালবাগ আদালতে প্রতারণার মামলা করেছি।’’ সুদীপ মাইতির মোবাইল নম্বরও দেন শাহনাজ আলম। বহু চেষ্টাতেও ওই নম্বরে যোগযোগ করা সম্ভব হয়নি। তাঁর মোবাইল বন্ধ ছিল।

বছর তিনেক আগে লালগোলা কলেজের অদূরে ‘সোনার তরী এডুকেশন সেন্টার’ নামে একটি ‘কোচিং সেন্টার’ খোলেন শাহনাজ আলম। সেখানে একাদশ শ্রেণি থেকে শুরু করে স্নাতক স্তর পর্যন্ত ‘কোচিং ক্লাস’ নেওয়া হয়। ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষের পর থেকে বিএড ট্রেনিং- এর মেয়াদ এক বছরের বদলে দু’বছর করা হয়। দিনমজুর পরিবারে মেয়ে মেহেরুন্নেসা খাতুন বলেন, ‘‘এ কারণে ২০১৪-২০১৫ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী হিসাবে বিএড ট্রেনিং- এর জন্য কয়েক দফায় ৭৫ হাজার টাকা নিয়েছেন শাহনাজ আলম। এ রকম আরও ৬০-৬২ জনের কাছ থেকে তিনি টাকা আদায় করেছেন।’’ তাঁর দাবি, অন্ধ্রপ্রদেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁদের ভর্তি করানো হয়েছে জানিয়ে রসিদ দেন শাহনাজ। তারপর সপ্তাহে দু’দিন ‘সোনার তরী এডুকেশন সেন্টারে’ তাঁদের ক্লাস নেওয়া হয়। ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে তাঁদের অন্ধ্রপ্রদেশে নিয়ে যান শাহনাজ। সেখানে একটি হোটেলে পরীক্ষা নেওয়া হয়। তখনই খটকা লাগে তাঁর।

গত বছর শংসাপত্র ও মার্কশিট মেলে। সেগুলো আসল কি না তা যাচাই করার জন্য ‘আরটিআই’ করা হয়। তাতেই ধরা পড়ে সে সব ভুয়ো। এরপর ছাত্রছাত্রীরা টাকা ফেরতের দাবি তোলেন। মেহেরুন্নেসা বলেন, ‘‘টাকা ফেরত না পেয়ে বাধ্য হয়ে প্রতারণা ও জালিয়াতির মামলা দায়ের করেছি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Fake Degree Fraud লালগোলা
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE