প্রতীকী ছবি।
মুর্শিদাবাদ জেলায় ৯৬৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আগামী বছর থেকে চালু হচ্ছে পঞ্চম শ্রেণি।
জেলাওয়াড়ি বিস্তারিত তালিকা ইতিমধ্যেই এসে পৌঁছেছে জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদে। কিন্তু তালিকায় যে সমস্ত বিদ্যালয়ের নাম রয়েছে তাদের অনেকেরই কোনও পরিকাঠামো নেই। আবার পরিকাঠামো রয়েছে এমন স্কুলগুলির নাম নেই ওই তালিকায়। এমন স্কুলের নামও রয়েছে তালিকায়, যেগুলি চলে হাইস্কুল ভবনে। স্বভাবতই তালিকা দেখে অস্বস্তিতে পড়েছেন খোদ শাসক দলের শিক্ষক সংগঠনও। এবিপিটিএ’র জেলা সম্পাদক নবেন্দু সরকারের অভিযোগ, ‘‘কার সঙ্গে আলোচনা করে স্কুল বাছাই হল। কেউ জানে না জেলায়। জেলা শিক্ষা দফতরের কর্তারাও কিছু জানেন না। শিল্পমন্দির, কাশীশ্বরী, এই সব প্রাথমিক স্কুলগুলিতে ঘরের অভাব নেই। পঞ্চম শ্রেণি চালু হচ্ছে না সেখানে। আবার বহরমপুর শহরে ছাত্র কম এমন ১৬টি প্রাথমিকে পঞ্চম শ্রেণি চালু করা হচ্ছে।’’ ওই শিক্ষক সংগঠনের প্রশ্ন— শহরে বহু নামী মাধ্যমিক স্কুল থাকতে পঞ্চম শ্রেণিতে ছাত্ররা সেখানে ভর্তি হবে কেন? এক বছর সময় নিয়ে পরিকাঠামো তৈরির পর প্রাথমিকে পঞ্চম শ্রেণি চালু করলে কি এমন মহাভারত অশুদ্ধ হত?
শাসকদল তৃণমূলের প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি শুভজিৎ সিংহ বলছেন, “পঞ্চম শ্রেণি চালুর এই তালিকা নিয়ে গোটা জেলা জুড়েই নানা প্রশ্ন উঠেছে। আমাদেরও এ নিয়ে জিজ্ঞাসা রয়েছে। স্কুলগুলি থেকে জমা পড়া তথ্য দেখে রাজ্যস্তরের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। এই তালিকা এটাই বলা হয়েছে আমাদের। যে সব স্কুলে ছাত্র সংখ্যা খুব কম এ বছর সেগুলিতে পঞ্চম শ্রেণি দেওয়া হয়েছে যাতে স্কুলগুলিতে ছাত্র সংখ্যা কিছুটা বাড়ানো যায়। কিন্তু ছাত্র সংখ্যা আদৌ বাড়বে কি? পরিকাঠামোহীন প্রাথমিকে কোনও অভিভাবক ছাত্রকে ভর্তি করবে?’’ জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক নৃপেন কুমার সিংহও তালিকা নিয়ে দায় এড়িয়েছেন। তাঁর কথায়, “আমি নতুন এসেছি। তাই জানা নেই কিভাবে এই তালিকা হয়েছে।’’
তিনি জানান, রঘুনাথগঞ্জের গনকর, সেন্ডা, রাজানগর প্রাথমিকে পরিকাঠামো যথেষ্ট ভাল। কিন্তু তালিকায় নাম নেই। রয়েছে মথুরাপুর প্রাথমিক স্কুলের নাম। যেখানে ১০০ ছাত্র, ৩ জন শিক্ষক। ৬টি ক্লাস চলবে কি করে? শিক্ষকও মিলবে না । কারণ শ্রেণি ভিত্তিক শিক্ষক এখন নিয়োগ হয় না প্রাথমিকে। শিক্ষক নিয়োগ হচ্ছে এখন ছাত্রছাত্রীর অনুপাত দেখে। সে ক্ষেত্রে মথুরাপুর স্কুলে ১০০ জন ছাত্রের জন্য বাড়তি শিক্ষক মিলবে না। ফরাক্কার ব্রাহ্মণগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়, স্কুলে ৩৩৫ জন ছাত্রছাত্রী। ঘর রয়েছে ১০টি। স্থায়ী শিক্ষক ৩ জন। এক জন পার্শ্ব শিক্ষক। তালিকায় নাম নেই তাঁর।
ফরাক্কার বেনিয়াগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত ৫টি শ্রেণিতে ৪৯৩ জন ছাত্রছাত্রী। ৬ জন শিক্ষক। ৮টি ঘর। পঞ্চম শ্রেণি হয়নি সেখানেও। অথচ ছাত্র, শিক্ষক কম থাকা সত্বেও পঞ্চম শ্রেণি চালুর তালিকায় রয়েছে চন্ডীপুর প্রাথমিক, এনপি সিসি প্রাথমিক, খেজুরিয়া প্রাথমিকের নাম। এনপিসি বাংলা, হিন্দি ও উচ্চ প্রাথমিক তিনটি স্কুলই গা লাগোয়া। ছাত্রও কম। পঞ্চম চালুর তালিকায় নাম রয়েছে ৩টিরই।রঘুনাথগঞ্জের কিশলয় প্রাথমিক বিদ্যালয় চলে হাইস্কুলের ক্যাম্পাসে সকালে। ঘরের অভাব নেই। শিক্ষক ৫ জন। ছাত্র ২৩৩ জন। একই ক্যাম্পাসে হাইস্কুল। নাম নেই তার।
খোসালপুর প্রাথমিক ছাত্র ৭০, শিক্ষক ৩, জেঠিয়া প্রাথমিক ছাত্র ৯৯, শিক্ষক ৩, সোনাটিকুরি কলোনির ২ ছাত্র ৪২, শিক্ষক ৩, বৈধপুর প্রাথমিক ১০৪ জন ছাত্র, শিক্ষক ২ জন হয়েও জায়গা পেয়েছে পঞ্চমের তালিকায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy