ছবিটা নতুন নয়। আওয়াজগুলোও চেনা। তবুও রাতের জমাট কুয়াশার সঙ্গে সঙ্গেই বদলে যায় সীমান্তের পথ। তখন বিএসএফ জওয়ানের ভারী বুট নয়, রাত গাঢ় হলে বাড়ে গবাদি পশুর পায়ের শব্দ। তবে সেই শব্দের মেয়াদ কয়েক ঘণ্টা। ভোর হওয়ার আগেই মিলিয়ে যায় সেই শব্দ।
ডোমকলের সীমান্তের এই চেনা ছবির ব্যতিক্রম হয়নি এ বারেও। জাঁকিয়ে শীত পড়ছে। দোসর হয়েছে ঘন কুয়াশা। আর এমন আবহাওয়া যে পাচারকারীদের কাছে সোনায় সোহাগা সে কথা সবচেয়ে ভাল জানে সীমান্ত। আর এমন আবহাওয়াকে হাতিয়ার করে মাঠে নেমেছে পাচারকারীরা। সীমান্তের বাসিন্দাদের দাবি, শীত মানেই পাচারকারীদের পৌষ মাস। আর তাঁদের সর্বনাশ। পাচার শুরু হলেই সীমান্তের মাঠে ফসল নষ্ট শুরু হয়। রানিনগর সীমান্তের বাসিন্দা সোলেমান হক বলেছেন, ‘‘শীত এলেই আতঙ্কে থাকি আমরা। রাতের ঘুম মাটি হয়ে যায়। কারণ, ভোরে মাঠে গিয়ে জমির ফসল আস্ত দেখতে পাব কি না তা নিয়েই চিন্তায় থাকি আমরা।’’
একটা সময় সীমান্তে চোরাচালানই ছিল চেনা রোজনামচা। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বদলেছে সীমান্ত। এখন সারা বছর সেই কারবারের রমরমা নেই। কিন্তু বর্ষার পাটের মরসুম ও শীতের সময় এলেই কারবারের রমরমা বাড়ে। অনেক সময় ফসলের জমি চড়া দামে চাষিদের থেকে কিনে নিয়েও চলে কারবার। জলঙ্গির এক চাষি বলেছেন, ‘‘পাচারকারীদের দৌরাত্ম্যে বছরের পর বছর ফসল নষ্ট হওয়ার পরে চাষিও বর্তমানে অতিষ্ঠ হয়ে আপস করছে পাচারকারীদের সঙ্গে। ফলে এখন অনেকেই টাকা নিয়ে ফসলের জমি ছেড়ে দিচ্ছে পাচারকারীদের।’’
কিন্তু কুয়াশার এই মরসুমে পাচারের বাড়বাড়ন্ত কেন? সীমান্তের বাসিন্দাদের দাবি, এই সময়ে ঘন কুয়াশায় জন্য খুব কাছের জিনিসও দেখা যায় না। ফলে বিএসএফের একটি আউটপোস্ট থেকে অন্যটির যে দূরত্ব তার ফাঁক গলে অনায়াসেই পাচারের গবাদি পশু চলে যায়। এক বিএসএফ কর্তার কথায়, ‘‘উন্নত নাইটভিশন ক্যামেরা গলে পাচার করা খুব কঠিন কাজ। কিন্তু কুয়াশার কাছে হার মানতে হয় আমাদের। কুয়াশার কাছে যাবতীয় অত্যাধুনিক প্রযুক্তিও হার মানে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy