এর আগে কখনও বাড়ির বাইরে থেকে এত দূরে যাননি ওঁরা। বাড়ির এক মাত্র ছেলে খুন হওয়ায় তাঁদেরই যেতে হল রাইসিনা হিলস।
চাকদহের বছর তেইশের যুবক সন্তু ঘোষ কেন গুলি খেয়ে মারা গেলেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। পুলিশ সোমবার পর্যন্ত যা পেয়েছে, তাতে এর মধ্যে রাজনীতি থাকার সম্পর্ক কম। কিন্তু সন্তু ইদানীং তৃণমূল ছেড়ে বিজেপির দিকে ঝুঁকেছিলেন। তাই তৃণমূলের লোকজনই তাঁকে খুন করেছে দাবি করে পথে নামে বিজেপি। দফায় দফায় চাকদহ থানা, জাতীয় সড়ক ও বিভিন্ন রেলস্টেশনে অবরোধ করা হয়।
শেষে ‘শহিদ পরিবার’ হিসেবে গত বৃহস্পতিবার নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে ডাক দেওয়া সন্তুর পরিজনদের। সন্তুর বাবা সাধু ঘোষ ও ছোড়দি মণি কর্মকার আমন্ত্রণ রক্ষা করেছেন। বুধবার দুপুরে তাঁরা দিল্লির উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন। দু’দিন কাটিয়ে শনিবার বিকালে ফিরে এসেছেন চাকদহের বাড়িতে।
কেমন হল দিল্লি সফর?
সন্তুর বাবা-দিদি জানাচ্ছেন, বুধবার বিকেলে রাজধানী এক্সপ্রেস ধরে তাঁরা পরের দিন সকালে দিল্লিতে পৌঁছন। কালীবাড়িতে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা হয়েছিল। স্নান-খাওয়া সেরে বিকালে তাঁরা বিজেপির পার্টি অফিসে যান। সেখান থেকে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে নিয়ে যাওয়া হয়। মূল অনুষ্ঠানস্থল থেকে খানিক দূরে একটি ঘরে সব নিহতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে কথা বলার সুযোগ হয়নি। কালীবাড়িতে রাত কাটিয়ে পরের দিন বিকালে তাঁরা ফেরার ট্রেন ধরেন। তার আগে দুপুরে মুকুল রায় এসে খোঁজ নিয়ে গিয়েছেন, তাঁদের অসুবিধা হয়েছে কি না।
সোমবার চাকদহের বাড়িতে বসে সাধু ঘোষ বলেন, ‘‘হাওড়াতেই অন্য সব পরিবারের লোকেদের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। আমাদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করেছেন বিজেপি নেতারা। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে নিয়ে যাবে, আমরা তো ভাবতেই পারিনি। গোটা সফরের সময়ে বারবার ছেলের মুখটা চোখের সামনে ভেসে উঠেছে।”
গত ২৪ মে, শুক্রবার রাতে বন্ধুর ফোন পেয়ে বাড়ি থেকে বেরোন সন্তু। বাড়ি থেকে খানিক দূরে মাঠে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। প্রায় একশো মিটার দৌড়ে রাস্তায় এসে তিনি হুমড়ি খেয়ে পড়েন। চাকদহ স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাকে ‘মৃত’ বলে ঘোষণা করা হয়। এই ঘটনায় পুলিশ এখনও পর্যন্ত সন্তুরই পাড়ার তিন বন্ধুকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ হেফাজতে নিয়ে তাদের জেরা করা হচ্ছে।
পুলিশের দাবি, ধৃতেরা জেরায় বলেছে: গোপাল দে নামে ওই পাড়ারই এক জন তাদের আগ্নেয়াস্ত্রটি রাখতে দিয়েছিল। তা ঘাঁটাঘাঁটি করতে গেলে গুলি ছিটকে সন্তুর গলার পাশে লাগে। সন্তু ইদানীং বিজেপি করলেও এর সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই। সাধু বলেন, ‘‘আমার ছেলের খুনিরা শাস্তি না পেলে আমি শান্তি পাব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy