Advertisement
৩১ জানুয়ারি ২০২৫
Maha Kumbh Stampede 2025

বারবার তীর্থে, সেখানেই গেল প্রাণ

মহাকুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে বছর পঁচাত্তরের ঊর্মিলার। বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনির গোদাপিয়াশালের ভুঁইয়াপাড়ায়। এক ছেলে, দুই মেয়ে।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

বরুণ দে
শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:৫৭
Share: Save:

বয়স হয়েছিল, তবে তীর্থযাত্রায় না ছিল না। সেই তীর্থে গিয়েই প্রাণ হারালেন শালবনির বৃদ্ধা ঊর্মিলা ভুঁইয়া।

মহাকুম্ভে পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে বছর পঁচাত্তরের ঊর্মিলার। বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনির গোদাপিয়াশালের ভুঁইয়াপাড়ায়। এক ছেলে, দুই মেয়ে। ঊর্মিলা মহাকুম্ভে গিয়েছিলেন দুই মেয়ে রিতা ও অঞ্জনার পরিবারের সঙ্গে। মোট ৮ জনের দল ছিল তাঁদের।

ঊর্মিলার ছেলে দুলাল বলেন, ‘‘মা এর আগে বহু তীর্থ ঘুরে এসেছেন। গঙ্গাসাগর গিয়েছেন। নবদ্বীপ, মায়াপুর, উত্তর ভারত গিয়েছেন। পুরী একাধিকবার গিয়েছেন।’’ মহাকুম্ভ থেকে ফিরে কিছু দিন পরে বেলুড় যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। দুলালের আক্ষেপ, ‘‘মায়ের খুব ইচ্ছা ছিল বেলুড়ে যাওয়ার। দক্ষিণেশ্বর দেখে এসেছেন। আমার বড় ছেলে ভিডিয়োকলে মাকে বেলুড়ের সন্ধ্যারতি দেখিয়েছিল। ভেবেছিলাম, মাকে নিয়ে বেলুড় যাব। দক্ষিণেশ্বরও আরেকবার নিয়ে যাব। সেটা আর হল না!’’

ঊর্মিলারা সোমবার খড়্গপুর থেকে রওনা দিয়েছিলেন ট্রেনে। প্রয়াগরাজে পৌঁছন মঙ্গলবার। ওই রাতেই দুর্ঘটনা ঘটে। মৌনী অমাবস্যায় বহু পুণ্যার্থী হাজির হয়েছিলেন মহাকুম্ভে। সঙ্গমস্থলের কাছে বিপুল জনস্রোতে হুড়োহুড়ি, ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায়। ভিড়ের মাঝে পড়ে যান উর্মিলা।

পুজোআচ্চার মন ছিল বৃদ্ধার। তাঁর বৌমা অম্বিকা বলছেন, ‘‘মা বারব্রত রাখতেন। জন্মাষ্টমী করতেন। সকালে ফুল তুলতে যেতেন। কোথা থেকে যে কী হয়ে গেল!’’ ঊর্মিলার এক নাতি শৌভিকের কথায়, ‘‘আমাকে ছোট থেকে দিদাই মানুষ করেছে। এখানে থেকেই পড়েছি। কারখানায় চাকরি পেয়েছি। মামা সহায়তা করেছে। দিদাই আমাকে এখানে জায়গা দিয়েছে, বাড়ি করে দিয়েছে।’’ দুলালের ছোট ছেলে মনোময় এ বার মাধ্যমিক দেবে। পরীক্ষার আগে ঠাকুমার মৃত্যুসংবাদে শোকাহত সে।

দুলাল জানালেন, মাস তিন- চারেক আগেই মহাকুম্ভে যাওয়ার কথা ঠিক হয়েছিল। অম্বিকা বলছেন, ‘‘গেল কার্তিক মাসে ভাইফোঁটার সময়ে দিদিরা (ননদরা) সব এসেছিল। তখনই কুম্ভে যাওয়া নিয়ে কথা হয়। পরে টিকিট কাটা হয়েছিল।’’

ঊর্মিলার এক প্রতিবেশী বলেন, ‘‘আমরা অনেক করে বারণ করেছিলাম জেঠিমাকে। বলেছিলাম, ‘তোমার বয়স হয়েছে। এত দূরে যাওয়ার দরকার নেই।’ জেঠিমা বলেছিল, ‘পুন্যি করতে যাচ্ছি। মৃত্যু হয় তো ওখানেই হবে।’ কথাটা ফলে যাবে স্বপ্নেও ভাবিনি।’’

অম্বিকা জানালেন, ‘‘ওঁদের ফেরার ট্রেন ছিল বৃহস্পতিবার সকাল সাতটায়।’’ তবে ফিরছে ঊর্মিলার দেহ, অ্যাম্বুল্যান্সে। বৃহস্পতিবার দুপুরে বৃদ্ধা বাড়িতে আসেন বিধায়ক সুজয় হাজরা। তাঁর কথায়, ‘‘খারাপ লাগছে। দু’মাস আগে (উপনির্বাচনের সময়) যখন এসেছিলাম, ঊর্মিলাদেবীর আশীর্বাদ পেয়েছিলাম। এ বার উনি চলে গেলেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Salbani
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy