Advertisement
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
Midnapore Bombing Incident

শাসক-নেতাদের জামিন, প্রশ্ন উঠছে কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্তে

সম্প্রতি রেশন দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন খাদ্য মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে প্রাক্তন তৃণমূলের যুব নেতা কুন্তল বন্দোপাধ্যায় জামিন পেয়েছেন।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:৫৯
Share: Save:

জেলার গুরুত্বপূর্ণ একটি বিস্ফোরণের মামলার তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ। ওই ঘটনার অন্যতম অভিযুক্তরা হলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এক দিন আগে হাই কোর্ট দুই অভিযুক্ত তথা তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি বলাই চরণ মাইতি এবং বুথ সভাপতি মনোব্রত জানাকে শর্ত সাপেক্ষে জামিন দিয়েছে। এতেই সরব বামেরা। এত দিন নির্বাচনের সময় তৃণমূল রাম-বাম জোট নিয়ে কটাক্ষ করে এসেছে। তবে রাজ্যে যে সব অপরাধের মামলার তদন্তভার নিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা, সেই সব মামলায় তৃণমূলের প্রাক্তন মন্ত্রী ও নেতাদের জামিনে এখন বামেদের প্রশ্ন, ‘বিজেপি-তৃণমূল’ কি তাহলে ‘সমঝোতা’ করেছে?

আইনজীবী সূত্রের খবর, বিস্ফোরণ-কাণ্ডে ধৃত ওই তৃণমূল নেতার জামিনের আবেদনের তীব্র বিরোধিতা করেন তদন্তকারী সংস্থার আইনজীবী। এনআইয়ের তরফে দাবি করা হয়, বলাইয়ের ফোন কথোপকথনে যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। তিনি বিস্ফোরণে মৃত তিনজনের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছিলেন। রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র করেই ওই বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছিল বলে তার প্রমাণ রয়েছে। মামলায় মোট ৭৮ জন সাক্ষী রয়েছেন। ঘটনার তদন্ত শেষ হয়ে গিয়েছে। সাক্ষীদের বয়ান মুখবন্ধ খামে হাই কোর্টে জমা দিয়েছেন তদন্তকারীরা। যদিও তদন্তকারী সংস্থা বলাই এবং মনোব্রতর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করতে পারেনি। তাই মামলায় বিচার প্রক্রিয়া কবে শুরু হবে, সে ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করেন তৃণমূল নেতাদের আইনজীবী মিলন মুখোপাধ্যায়। এর পরেই ধৃত বলাই এবং মনোব্রতর জামিনের নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট।

সম্প্রতি রেশন দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন খাদ্য মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে প্রাক্তন তৃণমূলের যুব নেতা কুন্তল বন্দোপাধ্যায় জামিন পেয়েছেন। জামিন পেয়েছেন বীরভূমের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডলও। এখন ভূপতিনগরের নাড়ুয়াবিলা বিস্ফোরণ কাণ্ডে বলাই এবং মনোব্রত জামিন পেলেন। তাঁদের বিরুদ্ধে এনআইএ চার্জ গঠন করতে পারেনি। ওই দু’জনের আপাতত কলকাতার নিউটাউনে থাকার কথা। যে মামলার তদন্ত করতে গিয়ে গত বছর ৬ এপ্রিল তৃণমূলের বাধার মুখে পড়তে হয়েছিল এনআইএ আধিকারিকদের। তাঁদের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। সেই ঘটনার তদন্ত শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও কেন তদন্তকারী সংস্থার চার্জ গঠনে বিলম্ব করেছে, নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।

শুধু এই মামলা নয়, ২০২১ সালের মার্চে উত্তর কাঁথি বিধানসভা এলাকার বিজেপি কর্মী জন্মেজয় দলুই খুনের ঘটনার তদন্ত ধীর গতিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। ওই মামলার তদন্ত করছে সিবিআই। অভিযুক্তদের জামিনের আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার পরেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। জেলার একাধিক মামলার তদন্তে এনআইএ এবং সিবিআই— দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী, গোয়েন্দা সংস্থার ভূমিকা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে তুঙ্গে বিতর্ক। সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য হিমাংশু দাস বলেন, ‘‘মোদী ভাই আর দিদি ভাইয়ের সেটিং। সবটাই ওঁরা ঠিক করে ফেলছেন। তাই অপরাধীরা জামিন পেয়ে যাচ্ছেন।’’

সিপিএমের তোলা অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তৃণমূলের জেলা (কাঁথি) সভাপতি পীযূষকান্তি পন্ডা বলেন, ‘‘এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধিরা বলতে পারবেন।’’ আর দক্ষিণ কাঁথির বিজেপি বিধায়ক অরূপ কুমার দাস বলছেন, ‘‘দেশে প্রচুর মামলার তদন্তের চাপ বাড়ছে। তাই হয়তো চার্জ গঠনে দেরি হয়েছে। কিন্তু অপরাধীরা ছাড়া পাবে না।’’

অন্য বিষয়গুলি:

NIA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy