অভিষেকের সভার ৬ দিন পর রানাঘাটে সভা করে তাঁকে নিশানা করলেন শুভেন্দু। —ফাইল চিত্র।
নদিয়ার রানাঘাটে মাত্র ৬ দিন আগেই সভা করে গিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার পাল্টা রানাঘাটে ফ্রেন্ডস ক্লাবের মাঠে সভা করে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত অভিষেককেই নিশানা করে গেলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। গত ১৭ ডিসেম্বরের সভা থেকে পঞ্চায়েত ভোট অবাধ করতে দলের নেতা-কর্মীদের কড়া বার্তা দিয়েছিলেন অভিষেক। জানিয়ে দেন, তাঁর দলের কোনও নেতার বিরুদ্ধে ভোটের সময় ‘জারিজুরি’র অভিযোগ উঠলে তাঁকে এক ঘণ্টার মধ্যে দলছাড়া করবেন। সেই রানাঘাটে দাঁড়িয়ে শুভেন্দুর চ্যালেঞ্জ, ‘‘সুষ্ঠু ভোট হলে পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলই নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।’’ সেখানেই অভিষেকের নাম না করে শুভেন্দুর কটাক্ষ, ‘‘চোর এসেছে ডাকাত তাড়াতে।’’
বিগত পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে বার বার শাসক দলকে আক্রমণ করে আসছিল বিরোধীরা। ২০১৬ সালে রাজ্যে দ্বিতীয় বার ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল। সেই সময় তাদের আসন সংখ্যা ছিল ২১১। এর বছর দুয়েকের মধ্যে ২০১৮ সালে পঞ্চায়েত ভোটের আগেই রাজ্যের ২০ হাজারের বেশি আসনে জয়ী হয় তারা। পঞ্চায়েতের তিনটি স্তর মিলিয়ে প্রায় ৩৪ শতাংশ আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পেয়েছিলেন শাসকদলের প্রার্থীরা। যা রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোটের ইতিহাসে ‘রের্কড’। তবে বিরোধীরা অভিযোগ করে, শাসকদলের ‘গা-জোয়ারি’র ফসল ওই ফল। অভিযোগ যে পুরোপুরি বায়বীয় নয়, তা তৃণমূলের অনেক নেতার ‘স্বীকারোক্তি’তেই স্পষ্ট। অভিষেক নিজেই বলেছেন, ‘‘কোথাও কোনও জোরজবরদস্তি করে পঞ্চায়েত দখল করা চলবে না। বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েত করতে হবে, এমন কোনও কথাও নেই। পঞ্চায়েত ভোট সুষ্ঠু এবং অবাধ হতে হবে।’’ শুক্রবার অভিষেকের কথার রেশ টেনে শুভেন্দুর কটাক্ষ, ‘‘বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় লুট করে পঞ্চায়েত ভোট জিতেছেন ২০১৮ সালে। এ বারের পঞ্চায়েতে যদি মানুষ নিজের ভোট নিজে দিতে পারে, কমিশন যদি বিচারব্যবস্থা তৈরি করে দেয়, তৃণমূল নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে।’’ একই সঙ্গে আবাস যোজনা নিয়ে চলা বিতর্কে প্রসঙ্গে নন্দীগ্রামের বিধায়কের বার্তা, ‘‘বিজেপি মিথ্যা কথা বলে না। বিরোধী দলনেতাও বলে না। আপনারা আগামী পঞ্চায়েতে ভোটে বিজেপিকে জয়যুক্ত করলে ২০২৪ সালের আগে যোগ্যরা প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর পাবেন। সেখানে ধর্ম কিংবা দল দেখা হবে না।’’
গত ১৭ ডিসেম্বর রানাঘাটে দাঁড়িয়ে নদিয়ার তাতলা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান পার্থপ্রতিম দাসকে পদত্যাগের বার্তা দিয়েছিলেন অভিষেক। তিনি জানিয়ে দেন, যাঁর সঙ্গে মানুষের কোনও যোগাযোগ নেই, তাঁকে মানুষও প্রধান বলে মানবে না। শুক্রবার সেই প্রসঙ্গ তুলে তৃণমূলকে খোঁচা দেন শুভেন্দু। তাঁর কথায়, ‘‘এখানে এসে বলছেন প্রধান (পঞ্চায়েত) চোর! কত চোরকে ধরবেন!’’ এর পর অভিষেককে নিশানা করে শুভেন্দু বলেন, ‘‘তৃতীয় বারের সরকার গড়ার প্রথম বারই হোঁচট খেয়েছে তৃণমূল। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী নন্দীগ্রামে আমার কাছে হেরেছেন। তাঁকে আমরা রেগুলার চিফ মিনিস্টার বলি না। বলি কম্পার্টমেন্টাল চিফ মিনিস্টার। আর তাঁর আলোয় যিনি আলোকিত তাঁকে আমি হালি নেতা বলি। তিনি দাবি করেন, এক পয়সা খান না। তবে তিনি কী খান? তিনি কয়লা খান। বালি খান... তিনি সর্বভুক।’’
মতুয়া অধ্যুষিত জেলা নদিয়া এসে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর বিরোধিতা করেছিলেন অভিষেক। আর শুক্রবার সেখান থেকে শুভেন্দু জানালেন, তিনি আবার নদিয়ায় আসবেন। সে দিন ধানতলায় সভা করে শুধু সিএএ নিয়েই বলবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy