ক্ষমা চেয়ে পোস্টার। সোমবার বেথুয়াডহরিতে। —নিজস্ব চিত্র।
দুর্নীতি, স্বজনপোষণ, উন্নয়নমূলক কাজে বাধা সৃষ্টির জন্য বিজেপি নিয়ন্ত্রিত বেথুয়াডহরি ১ পঞ্চায়েতকে দায়ী করে পদত্যাগপত্র জমা দিলেন কংগ্রেস সদস্য। এর জন্য ফেস্টুন লাগিয়ে গ্রামের মানুষের কাছে তিনি ক্ষমাও চেয়েছেন। নাকাশিপাড়া ব্লক অফিসে ইস্তফার আর্জি জানিয়েছেন ৯৮ নম্বর সংসদে কংগ্রেসের টিকিতে জেতা প্রিয়া লাহা (সাহা)।
সোমবার সকালে এলাকার কিছু ছোট ফেস্টুন লোকের নজরে আসে। তাতে লেখা, ‘‘গ্রামবাসী আপনারা আমাকে আশীর্বাদ করে জিতিয়েছেন। আপনাদের পরিষেবা দিতে পারছি না, কারণ বর্তমান পঞ্চায়েত আমাকে আমার সংসদে কোনও কাজ করতে দিচ্ছে না। তাই আমি আপনাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করছি।’’ নীচে লেখা পঞ্চায়েত সদস্যের নাম।
স্থানীয় বাসিন্দা দীনবন্ধু বিশ্বাস বলেন, ‘‘এটা সত্যিই যে এই সংসদে চোখে পড়ার মতো কাজ হয়নি। আলোর সমস্যা নিয়ে পঞ্চায়েত সদস্যকে বারবার বলেছি, কিন্তু কাজ হয়নি। তবে এটা আমরা ভাল ভাবে দেখছি না। পঞ্চায়েতের সদস্যকে গ্রাম পঞ্চায়েত থেকে সাহায্য করা হবে, এটাই স্বাভাবিক।’’
প্রিয়ার অভিযোগ, এলাকার নানা সমস্যা নিয়ে পঞ্চায়েতের কাছে বারবার লিখিত আর্জি জানিয়েছেন। তাতে কাজ হয়নি। আলোর সমস্যা, নর্দমার উপরে স্ল্যাব ভাঙা থাকার কথা জানিয়েছেন। কোনও কাজ হয়নি। উল্টে এলাকার মানুষ তাঁকে ভুল বুঝছেন। তাই সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে তিনি পদত্যাদ করতে চাইছেন।
এই গ্রাম পঞ্চায়েতের মোট আসন ২৪টি। বিজেপি পেয়েছে ১৭টি, তিনটি কংগ্রেস, তৃণমৃল দু’টি, সিপিএম ও নির্দল একটি করে। ফলে বিজেপি পরিচালিত ওই পঞ্চায়েতে বিরোধী দলের মর্যাদা পায় কংগ্রেস। একটি আসন চলে গেলে সেই জায়গাটা চলে যেতে পারে। তাই কংগ্রেস নেতৃত্বও এই নিয়ে চিন্তিত।
বিরোধী দলনেতা, কংগ্রেসের পুলক সিংহ রায়ের মতে, ‘‘যেখানে আমরা বিরোধী দল আর উনি আমাদের সদস্য, ওঁর আমাদের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল। দলকে না জানানো দলবিরোধী কাজ বলেই আমার মনে হয়। ওই সংসদের মানুষের সঙ্গেও বেইমানি করা হবে।’’
কংগ্রেসের ব্লক সভাপতি আনিসুর রহমানও বলেন, ‘‘উনি আমায় কিছুই জানাননি। উনি যখন দলের টিকিটে জিতেছেন, ওঁর কর্তব্য ছিল দলকে বলে কাজ করা। আমরা জানতে পারলে দলগত ভাবে ব্যবস্থা নিতাম।’’
বেথুয়াডহরি ১ পঞ্চায়েতের প্রধান পার্থ ঘোষের দাবি, ‘‘পদত্যাগ করা বা না করা ওঁর ব্যাক্তিগত ব্যাপার, তা নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। তবে পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে উনি যে সব অভিযোগ এনেছেন, তা ভিত্তিহীন। সব সংসদেই কমবেশি কাজ হয়েছে। ওঁর সংসদে রাস্তা হয়েছে, নর্দমা সাফ হয়েছে, আলো লাগোনো হয়েছে। আলোর সমস্যা থাকলে ফের লাগানো হবে।’’ তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘পঞ্চায়েতের নির্দিষ্ট পদ্ধতি থাকে, দরপত্র করে কাজ করতে হয়। তার জন্য সময় লাগে। ওঁর সঙ্গে বা ওই এলাকার মানুষের সঙ্গে আমাদের তো শত্রুতা নেই যে কাজ দেব না!’’
নাকাশিপাড়ার বিডিও কল্লোল বিশ্বাস বলেন, ‘‘ওই পঞ্চায়েত সদস্য পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন ঠিকই। শুনানির দিন দেওয়া হয়েছে। তার পরে বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy