সমবায় ব্যাঙ্ক।—ফাইল চিত্র।
নোটবন্দির পর পার হয়ে গিয়েছে একটা বছর। নগদ লেনদেন কমাতে প্রতি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের অন্তত একটি শাখা খোলার লক্ষ্য রাখা হয়েছিল।
কিন্তু মাস দুয়েক আগে অর্থ দফতরের প্রকাশিত তালিকায় দেখা যাচ্ছে, এখনও এ রাজ্যের কয়েকশো পঞ্চায়েত এলাকায় ব্যাঙ্কের কোনও শাখা নেই। সেই সমস্যা মেটাতে এ বার ময়দানে নামানো হচ্ছে রাজ্য সমবায় ব্যাঙ্ককে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে বিভিন্ন জেলার কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কগুলি ব্যাঙ্কবিহীন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় শাখা খুলতে উদ্যোগী।
৬ ডিসেম্বর রাজ্য ও জেলা স্তরের সমবায় আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। দফতরের এক কর্তা জানান, ওই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী ব্যাঙ্কবিহীন গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে ব্যাঙ্ক খোলার বিষয়ে আলোচনা করেন। সমবায় দফতরের কর্তারা তাঁকে জানান, প্রত্যন্ত এলাকাতে শাখা খুলতে তাদের কোনও অসুবিধা হবে না। এর পরেই জারি হয় নির্দেশিকা। তাতে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ঠ জেলার জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলে কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কগুলি বিভিন্ন পঞ্চায়েতে তাদের শাখা খুলবে। মূলত পঞ্চায়েত ভবনের অন্দরেই খুলতে হবে শাখা। কোনও পঞ্চায়েতে জায়গা না থাকলে, সে ক্ষেত্রে পঞ্চায়েতই সুবিধামতো জমির ব্যবস্থা করে দেবে।
রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ইতিমধ্যে জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক তাদের শাখা খোলার কাজ শুরুও করে দিয়েছে। নদিয়ার ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় কোনও ব্যাঙ্কের শাখা নেই। জেলা প্রশাসন ও জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্কের কর্তারা আলোচনা করে স্থির করেছেন, তার মধ্যে ৭টি পঞ্চায়েতে সমবায় ব্যাঙ্কের শাখা খোলা হবে। এ মাসের ১৭ তারিখ রানাঘাটের তারাপুরে প্রথম শাখার উদ্বোধন হবে বলে সমবায় দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। ওই দিন সমবায়মন্ত্রীর উপস্থিত থাকার কথা। তেহট্টের নাজিরপুরেও অতি দ্রুত শাখা খোলা হবে। নদিয়ার জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত বলেন, ‘‘শাখা খোলার ব্যাপারে জেলা কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক খুব উৎসাহী। ওরা দ্রুত কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।’’
সরকারি হিসেবে, মুর্শিদাবাদের ৪২টি পঞ্চায়েত এলাকায় কোনও ব্যাঙ্কের শাখা নেই। ওই জেলার কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাঙ্ক ১০টি শাখা খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতিমধ্যে ৫টি শাখা খোলার কাজ প্রায় শেষের মুখে। ব্যাঙ্কহীন গ্রাম পঞ্চায়েতে শাখা খোলা নিয়ে অবশ্য একটা চাপা বিতর্কও তৈরি হয়েছে। বহু বছর ধরে গ্রামের কৃষি সমবায় সমিতিগুলি ব্যাঙ্কের মতো কাজ করে চলেছেন। এ বার সেখানে ব্যাঙ্ক শাখা খুললে তাঁদের গুরুত্ব কমবে। সেই জন্য তাঁরা ক্ষুব্ধ। রাজ্য সমবায় দফতরের সেন্ট্রাল জোনের জয়েন্ট রেজিস্ট্রার মহম্মদ ইনাসউদ্দিন অবশ্য সমিতিগুলির ক্ষোভ নিয়ে কোনও মন্তব্য না করে জানান, আসলে কথা হল এ বার সব গ্রামের মানুষ ব্যাঙ্কের ছাতায় তলায় আসবেন। এটাই সব থেকে বড় কথা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy