Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪
Bharat Jodo Nyay Yatra

একটুর জন্য মিস হ্যাটট্রিক! বহরমপুরে অরুণের ছানাবড়া চোখে দেখলেও চেখে দেখতে পারলেন না রাহুল

রাহুল আসবেন, এই আশায় সকাল থেকেই দোকান সাজিয়ে তোলার কাজে ছিলেন অরুণ। দুপুরের মধ্যে সেজেও উঠেছিল বহরমপুরের টেক্সটাইল মোড়ের মিষ্টির দোকানটি।

বিপুল জনস্রোতের চাপে দোকানের কাছেও ঘেঁষতে পারলেন না রাহুল।

বিপুল জনস্রোতের চাপে দোকানের কাছেও ঘেঁষতে পারলেন না রাহুল। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
বহরমপুর শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২৩:৫৩
Share: Save:

এ বার এলেই হ্যাটট্রিক! বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এই কথাটাই অরুণ দাসের মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। প্রথম বার প্রণব মুখোপাধ্যায়ের হাত ধরে দোকানে এসেছিলেন ছোট্ট রাহুল গান্ধী। চেখে দেখেছিলেন বহরমপুরের প্রসিদ্ধ ছানাবড়া। তার স্বাদে এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে, পরেও একবার মুর্শিদাবাদে এসে দোকানে ঢুঁ মেরে গিয়েছিলেন। অরুণ একপ্রকার নিশ্চিতই ছিলেন, এ বারও ছানাবড়া খেতে আসবেন রাহুল। কিন্তু হ্যাটট্রিকের স্বপ্ন পূরণ হল না দোকানির। বিপুল জনস্রোতের চাপে দোকানের কাছেও ঘেঁষতে পারলেন না কংগ্রেস নেতা। দূর থেকে অরুণের দোকানটি দেখেছেন বটে, কিন্তু ছানাবড়া চেখে দেখা হল না।

রাহুল আসবেন, এই আশায় সকাল থেকেই দোকান সাজিয়ে তোলার কাজে ছিলেন অরুণ। দুপুরের মধ্যে সেজেও উঠেছিল বহরমপুরের টেক্সটাইল মোড়ের মিষ্টির দোকানটি। রজনীগন্ধা আর গোলাপের গন্ধে চারদিক ম-ম করছিল। অভ্যর্থনা জানানোর জন্য দু’টি ডালায় প্রস্তুত ছিল লাল গোলাপের পাপড়ি। সংবর্ধনা জানাতে দোকানে রাখা ছিল তেরঙা উত্তরীয় আর ফুলের তোড়া। অরুণও সেজেছিলেন সবুজ নেহরু জ্যাকেটে। তাঁর স্ত্রীর পরনে ছিল মুর্শিদাবাদি সিল্কের শাড়ি। ঘড়ির কাঁটায় ঠিক ৭টা বেজে ২ মিনিট। টেক্সটাইল মোড়ে পৌঁছয় রাহুলের ‘ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা’। তত ক্ষণে গোটা এলাকা ঘিরে ফেলেছেন নিরাপত্তারক্ষীরা। দড়ি দিয়ে ভিড় আটকাচ্ছেন কংগ্রেস কর্মীরা। ছানাবড়া হাতে নিয়ে সস্ত্রীক দোকানের সামনে এসে দাঁড়িয়েছিলেন অরুণও। সেই সময়েই দেখলেন, ইশারায় কিছু একটা রাহুলকে বললেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। রাহুল তাকালেনও। কিন্তু গাড়ি থেকে থিকথিকে ভিড় ঠেলে তাঁর পক্ষে দোকানে আসা যে সম্ভব নয়, তা অরুণও বিলক্ষণ বুঝেছিলেন!

হ্যাটট্রিক না হওয়ায় হতাশ অরুণ বলেন, ‘‘খুব আশায় ছিলাম যে, রাহুলজি এক বার হলেও দোকানে আসবেন। সকাল থেকে খোঁজ নিয়েছি, কখন রাহুলজির কনভয় আসবে। প্রায় তিন ঘণ্টা পর কনভয় এসেছিল। তাই হয়তো আর সময় করে উঠতে পারেননি।’’ অরুণ জানান, প্রথম বার যখন প্রণববাবুর হাত ধরে এসেছিলেন রাহুল, সাধারণ ক্রেতাদের মতো দোকানের বেঞ্চে বসে তৃপ্তি করে মিষ্টি খেয়েছিলেন। পরের বার আট-নয় কেজির ছানাবড়া তুলে দিয়েছিলেন তাঁর হাতে। রাহুল যে প্লেটে মিষ্টি খেয়েছিলেন, সেটিও বার করে এনে দেখান অরুণ। তিনি বলেন, ‘‘এ বার রাহুলজির জন্য সাত কিলোগ্রামের পেল্লাই ছানাবড়া তৈরি করেছিলাম!’’ তবে রাত পর্যন্ত হাল ছাড়তে নারাজ ছিলেন দোকানি। তিনি জানান, স্থানীয় কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তাঁর দোকানের ছানাবড়া যাতে কোনও ভাবে কংগ্রেস নেতাদের হাত দিয়ে রাহুলের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়, সেই চেষ্টা করেছেন। যদিও তা সম্ভব হয়েছে কি না, তা রাত পর্যন্ত জানা যায়নি।

অরুণের মতো হতাশ হতে হয়েছে সনৎ হাঁসদাকেও। মালদহ থেকে মাত্র তিন ঘণ্টায় নিজের হাতে আঁকা রাহুলের প্রতিকৃতি নিয়ে টেক্সটাইল মোড়ে হাজির হয়েছিলেন কলেজ পড়ুয়া। ভেবেছিলেন, নিজের হাতেই সেই ছবি রাহুলকে দেবেন। কিন্তু নিরাপত্তা বেষ্টনী ঠেলে আর কংগ্রেস নেতার কাছে পৌঁছতে পারেননি সনৎ। ইংরেজি স্নাতকের ছাত্র বলেন, ‘‘মাত্র তিন ঘণ্টায় ছবিটা এঁকেছিলাম। দিতে পারলে খুবই খুশি হতাম। কিন্তু তা ভাগ্যে ছিল না। কংগ্রেস নেতাদের বলে দেখি, যদি কোনও ভাবে পৌঁছে দেওয়া যায়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Bharat Jodo Nyay Yatra Congress Rahul Gandhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE