Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
Coronavirus

ভাইরাসের দোসর ডেঙ্গি, ম্যালেরিয়াও

গত বছর ১ জুলাই পর্যন্ত নদিয়া জেলায় ১৯ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের সন্ধান মিলেছিল। এ বার একই সময় সেটা বেড়ে হয়েছে ৪৬ জন।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

সুস্মিত হালদার
শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০২০ ০০:১৭
Share: Save:

করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই স্বাস্থ্য দফতরের চিন্তা বাড়িয়ে ছড়াচ্ছে ডেঙ্গি। জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সন্ধান মিলতে শুরু করেছে। এবং গত বছর এই সময়ে ডেঙ্গি আক্রান্তে‌র সংখ্যা যা ছিল সেই তুলনায় এই বছর সংখ্যাটা সংখ্যাটা অনেকটাই বেশি বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে। সেই সঙ্গে দেখা দিয়েছে ম্যালেরিয়াও।

গত বছর ১ জুলাই পর্যন্ত নদিয়া জেলায় ১৯ জন ডেঙ্গি আক্রান্তের সন্ধান মিলেছিল। এ বার একই সময় সেটা বেড়ে হয়েছে ৪৬ জন। স্বাস্থ্যকর্তাদের অনেকেই মনে করছেন যে, প্রথম থেকে ডেঙ্গিকে নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে করোনার আবহে বিপজ্জনক অবস্থার মধ্যে পড়তে হতে পারে। গত বছর জেলায় মোট ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৭৮৯১ জন। এ বার প্রথম থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে তা অনেকটাই বেড়ে যাবে বলে আশঙ্কা।

তবে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ এ বছর কম। মঙ্গলবার জেলার বিএমওএইচ, সুপারদের নিয়ে বৈঠক করেন জেলাশাসক বিভু গোয়েল ও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানেই নির্দেশ দেওয়া হয় যে, এ বার থেকে কারও জ্বর দেখা দিলে তাঁকে এক সঙ্গে করোনা, ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া পরীক্ষা করতে হবে।

ডেঙ্গি-কথা

• জেলার উত্তর ২৪ পরগনা-ঘেঁষা অংশে প্রকোপ বেশি। বিশেষ করে হরিণঘাটা ও রানাঘাট -১ ও ২ ব্লকে
• ওই এলাকায় ন’টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে ‘পেরি-আর্বান’ গ্রাম পঞ্চায়েত হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে
• গত বছর এই সময়ের তুলনায় এ বছর ডেঙ্গি অনেক বেশি
• কারও জ্বর হলে এ বার থেকে একই সঙ্গে করোনা, ডেঙ্গি ও ম্যালেরিয়া পরীক্ষা হবে

গত কয়েক বছর ধরে নদিয়া জেলায় হরিণঘাটা ও রানাঘাট-১ ও ২ ব্লকে বেশ কয়েকটা গ্রাম পঞ্চায়েতে ডেঙ্গির প্রকোপ বেশি হচ্ছে। হাঁসখালি ব্লকেও দু’টি এলাকায় ও কল্যণী পুরসভা এলাকায় গত বছর ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দিয়েছিল। এ বারে সেখানে করোনা বেশি। তাই সেখানে করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গি মোকাবিলায় বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে। নদিয়া জেলায় ন’টি গ্রাম পঞ্চায়েতকে ‘পেরি-আর্বান’ গ্রাম পঞ্চায়েত হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলি হল যথাক্রমে হরিণঘাটা ব্লকের নগরউখরা-১ ও ২ গ্রাম পঞ্চায়েত, ফতেপুর গ্রাম পঞ্চায়েত, কাষ্টডাঙা -১ গ্রাম পঞ্চায়েত, রানাঘাট-১ ব্লকের পায়রাডাঙা, রানাঘাট-২ ব্লকের দেবগ্রাম ও বৈদ্যপুর-২ গ্রাম পঞ্চায়েত ও হাঁসখালি ব্লকের ময়ূরহাট-২ ও বগুলা-২ গ্রাম পঞ্চায়েত। সেখানে তিনশোটি বাড়ি পিছু একটা করে ইউনিট তৈরি করা হচ্ছে। তাতে এক জন করে সুপারভাইজারের অধীনে ১৪ জন করে ভিলেজ রিসোর্স পার্সন থাকবেন। সেখানে ৮ জনের চারটি টিম থাকবে। যাঁরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষা করবেন। ছ’জনের দুটো টিম মশার লার্ভা মারবে। ভিলেজ রিসোর্স পার্সনরা করোনার পাশাপাশি ডেঙ্গির সমীক্ষা করবেন। জেলায় গত বছর হরিণঘাটা ব্লকে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গি রোগীর সন্ধান মিলেছিল। ২০০৮ জন। এ বার সেখানে ৩ জন করোনা রোগীন সন্ধান মিলেছে। রানাঘাট -২ ব্লকে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা গত বছর ছিল ৭৪৯ ও রানাঘাট -১ ব্লকে ছিল ৬১৫ জন। এ বার সেখানে করোনা রোগীর সন্ধান মিলেছে যথাক্রমে ২৪ ও ৯ জন। কল্যাণী পুরসভায় গত বছর ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৭৫ জন। এ বার সেখানে ২০ জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে।

জেলার কর্তাদের দাবি, করোনার মতই উত্তর ২৪ পরগনা বেশ কয়েক বছর ধরে ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দিচ্ছে। বিশেষ করে নদিয়া সীমান্ত ঘেঁষা উত্তর ২৪ পরগনায় তা অনেকটা বেশি। ফলে করোনা হোক বা ডেঙ্গি-অন্য জেলার প্রভাব এসে পড়ে নদিয়ার এই এলাকাগুলিতে। জেলার এক স্বাস্থ্য কর্তার দাবি, “আনাজের হাট বা অন্য বিভিন্ন কারণে এই এলাকায় দুই জেলার মানুষ প্রতিনিয়ত যাতায়াত করেন। তাতে করোনা বা ডেঙ্গি সহজে সংক্রমিত হতে পারে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Dengue Malaria
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy