ঝাড়খণ্ড থেকে পাচার হয়ে সুতি ও শমসেরগঞ্জের রাস্তা ধরে দেদার কয়লা আসছে। প্রতীকী ছবি।
একেই বলে চোরের উপর বাটপারি।
পাচারের কয়লার উপর তোলাবাজির অভিযোগ উঠেছে সুতি ও শমসেরগঞ্জে। স্থানীয় সূত্রে অভিযোগ, ঝাড়খণ্ড থেকে পাচার হয়ে সুতি ও শমসেরগঞ্জের রাস্তা ধরে দেদার কয়লা আসছে। আবার অভিযোগ, সেই বেআইনি কয়লা থেকেই একাধিক জায়গায় তোলা তুলছে এলাকার মস্তানরা। প্রতিবাদ করেও ফল না হওয়ায় এ বার নিজেদের অভিযোগ নিয়ে তাঁরা সরাসরি ভিডিয়োয় ছেড়েছেন সমাজ মাধ্যমে। যা নিয়ে তোলপাড় এলাকা। যদিও এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার। জঙ্গিপুরের পুলিশ সুপার ভি জি সতীশ পসুমার্থী বলেন, ‘‘সাইকেল করে কিছু কয়লা এ দিকে আসছে, তা আমার নজরে এসেছে। আমি দেখছি পুরো ব্যাপারটা। আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
স্থানীয় সূত্রে দাবি, এই পথে কয়লা পাচার অবশ্য নতুন কিছু নয়। খোলামুখ খনিগুলি থেকে কোটি কোটি টাকার কয়লা পাচার নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশে সিবিআই ও ইডি-র তদন্ত চলছে। তার মধ্যেই ট্রাক্টর, লছিমন ও সাইকেলে করে পাকুড়–ধুলিয়ান এবং বৈষ্ণবডাঙা, বহুতালি, লোকাইপুরের সড়ক পথ দিয়ে পাচারের কয়লা ঢুকছে।
কয়লা আসার মূল পথ ভাসাই পাইকরের ইসলামপুর ও সুতির বহুতালি–কানুপুর সড়ক পথ। ভোর হতেই সাইকেলে করে দেড় থেকে দু’কুইন্ট্যাল চোরাই কয়লা নিয়ে প্রায় শ’খানেক সাইকেল আসে এই পথ ধরে চাঁদপুরের পথে। লছিমন ভ্যান রিকশায় প্রায় ৭-৮ বস্তা কয়লা। আর ট্রাক্টরে দুই থেকে তিন টন।
অভিযোগ, শমসেরগঞ্জের পথে পুটিমারি ফিডার ক্যানাল সেতুর দু’পাড়ে, এবং সাজুর মোড়ে এক ধরম কাঁটা পাশে মোট তিন জায়গায় প্রকাশ্যে চলছে কয়লা থেকে তোলাবাজি। সুতিতে বৈষ্ণবডাঙায় এসে জমা সব সাইকেল। সেই কয়লা রাতের বেলায় চাপানো হচ্ছে ট্রাক্টরে। বহুতালি, লোকাইপুর হয়ে কয়লা বোঝাই ট্রাক্টর উঠছে আহিরণে লোহার সেতুতে। সাইকেল পিছু ৫০ টাকা করে, লছিমনে ১০০ টাকা আর ট্রাক্টরে ইচ্ছে মতো তোলা দিতে হয় বলে দাবি। তবে বিশেষ ছাড়ও রয়েছে। কোনও ব্যক্তি অপারগ বা বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন হলে তিন কুইন্ট্যাল পর্যন্ত তোলাবাজরা ছাড় দেয়।
সম্প্রতি সমাজ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োতে তৃণমূলেরই এক নেতা সরাসরি এক ব্যক্তির নাম করে এই তোলাবাজির অভিযোগ তুলেছেন সাজুর মোড়ে। সেই ভিডিয়োতে বেশ কিছু কয়লা পাচারকারীও মুখ খুলেছেন। তাঁদের অভিযোগ, ৫০ টাকা করে আদায় করা হচ্ছে প্রতিটি সাইকেলের কাছ থেকে।
পাচারকারীদের অভিযোগ, ঝাড়খণ্ডের হিরণপুর ছাড়িয়ে খোলামুখ খনি থেকে এই কয়লা নিয়ে আসেন তাঁরা। আগে এই কয়লা তাঁরা বিক্রি করতেন ইসলামপুরে। সেখানে প্রচুর সংখ্যায় আড়ত রয়েছে কয়লার। সেই আড়তদারেরা সাইকেল থেকে কয়লা কিনে রাস্তার পাশে জমা করে রাখে। দিনের শেষে সমস্ত কয়লা ট্রাক বা ট্রাক্টরে করে পাঠিয়ে দেয় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে নানা জায়গায়।
সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য অসিত দাস বলছেন, “সিবিআই যখন কয়লা পাচার নিয়ে কোটি কোটি টাকা দুর্নীতির তদন্ত করছে তখন এই এলাকায় প্রতিদিন শয়ে শয়ে কুইন্ট্যাল কয়লা আসছে এইভাবেই চোরা পথে। রক্ষকই ভক্ষক। তাই রোখার কেউ নেই।” তৃণমূলের জঙ্গিপুর সংগঠনের সভাপতি খলিলুর রহমান বলেন, ‘‘পাচারের খবর দল রাখে না। যারা এটা করছে, তা প্রশাসন দেখবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy