নিহত মাওবাদী নেতা চলপতি। — ফাইল চিত্র।
ছত্তীসগঢ়ে নিরাপত্তাবাহিনীর অভিযানে নিহত হয়েছেন অন্যতম মাওবাদী শীর্ষনেতা জয়রাম রামচন্দ্র রেড্ডি ওরফে চলপতি। গত কয়েক দশক ধরে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে আসছিলেন তিনি। কিন্তু কাল হল আট বছর আগে স্ত্রীর সঙ্গে তোলা একটি সেল্ফি! কী ভাবে একান্ত নিজস্বী প্রাণ কাড়ল মাওবাদী নেতার?
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালে অন্ধ্রপ্রদেশে মাওবাদী এবং নিরাপত্তাবাহিনীর সংঘর্ষে বাজেয়াপ্ত করা নানা সামগ্রীর মধ্যে একটি পরিত্যক্ত ফোনও ছিল। আর সেই ফোনেই ছিল চলপতি ও তাঁর স্ত্রী চৈতন্য ভেঙ্কট রবি ওরফে অরুণার একটি নিজস্বী। অরুণা ছিলেন অন্ধ্র-ওড়িশা বর্ডার স্পেশাল জ়োনাল কমিটি (এওবিএসজ়েডসি)-র ডেপুটি কমান্ডার। ওই ছবির সূত্র ধরেই মাওবাদী কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য চলপতি ও তাঁর স্ত্রীকে শনাক্ত করে পুলিশ। চলপতির ‘মাথার দাম’ নির্ধারিত হয় এক কোটি টাকা!
আপ্পারাও, রামু, জয়রাম-সহ নানা ছদ্মনাম থাকলেও মাওবাদী নেতা রামচন্দ্রের পরিচিত ছিল ‘চলপতি’ নামে। ছত্তীসগঢ়ের পাশাপাশি মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, তেলঙ্গানা, অন্ধ্রপ্রদেশে একাধিক নাশকতার মামলায় অভিযুক্ত ছিলেন ৬০ বছরের এই মাওবাদী নেতা। জন্ম অন্ধ্রপ্রদেশের চিত্তুর জেলার মদনাপল্লেতে। ছোটবেলা থেকে মেধাবী ছাত্র হিসাবে পরিচিত ছিলেন চলপতি। কিন্তু আশির দশকের গোড়ায় দশম শ্রেণিতে পড়ার সময়েই স্কুল ছেড়ে সিপিআইএমএল (পিডব্লিউজি)-র হাত ধরে ‘সশস্ত্র বিপ্লবে’ যোগ দেন। তার পর কয়েক দশকে শুধুই উত্থান দেখেছেন। হয়েছেন মাওবাদী কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। অভিযোগ, ২০০৮ সালে ওড়িশার নয়াগড়ে হামলার ‘মূল মাথা’ ছিলেন চলপতিই। ওই হামলায় প্রাণ গিয়েছিল ১৩ জন নিরাপত্তারক্ষীর। চলপতি ও তাঁর সঙ্গীরা মূলত বস্তার এলাকাতেই সক্রিয় ছিলেন। তবে পুলিশি প্রহরা বাড়তে থাকায় কয়েক মাস আগে ওড়িশা সীমানার কাছে অস্থায়ী ঘাঁটি গেড়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু শেষরক্ষা হল না।
গোপন সূত্রে খবর মিলেছিল, সীমানা এলাকার জঙ্গল থেকে হামলার ছক কষছে মাওবাদীরা। সেইমতো রবিবার রাত থেকে ওড়িশা-ছত্তীসগঢ় সীমানায় সিআরপিএফের কোবরা কমান্ডো, ওড়িশা পুলিশের মাওবাদী দমন বাহিনী এসওজি, ছত্তীসগঢ় পুলিশের ‘ডিস্ট্রিক্ট রিজ়ার্ভ গার্ড’ (ডিআরজি) বাহিনীর ধারাবাহিক যৌথ অভিযান শুরু হয়। সেখানেই গুলির লড়াইয়ে মৃত্যু হয় চলপতি এবং তাঁর সঙ্গীদের। ওই অভিযানে অন্তত ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। মাওবাদী কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হওয়ায় চলপতির সঙ্গে ৮-১০ জন ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী থাকার কথা। সম্ভবত, নেতাকে রক্ষা করতে গিয়ে তাঁদের সকলেই প্রাণ দিয়েছেন বস্তারের জঙ্গলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy