প্রথমে মিনিট পাঁচেক শুধুই ধুলোর ঝড়। ক্রমে গতি বাড়িয়ে তা পরিণত হল প্রবল ঝড়ে। সঙ্গে আকাশভাঙা বৃষ্টি। তাতেই তছনছ হয়ে গিয়েছে নদিয়া ও মুর্শিদাবাদের বিস্তীর্ণ অঞ্চল।
মন্দের ভাল একটাই। প্যাচপ্যাচে গরমের পরে ক্ষণিকের স্বস্তি।
মঙ্গলবার বিকেলে ঝড়ের দাপট নদিয়াতেই ছিল বেশি। কৃষ্ণনগর, নবদ্বীপ, রানাঘাট, ফুলিয়া, হাঁসখালি, শান্তিপুর, দত্তফুলিয়ায় ভেঙেছে অসংখ্য গাছ। উড়েছে ঘরের চাল। বিভিন্ন রাস্তায় গাছ ভেঙে যান চলাচল থমকে গিয়েছে। বীরনগরে রানাঘাট-কৃষ্ণনগর বাইপাস রাস্তায় গাছ ভেঙে পড়ায় যানবাহন চলাচল ব্যহত হয়েছে।
নদিয়ার আড়ংঘাটা রেলস্টেশনের কাছে গাছ ভেঙে পড়ে রানাঘাট-গেদে শাখায় ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়। ফুলিয়ায় গাছের ডাল ভেঙে দীর্ঘক্ষণ ব্যাহত হয় শান্তিপুর-রানাঘাট ট্রেন চলাচল। নবদ্বীপ-কৃষ্ণনগর রাজ্য সড়কে পান্থনিবাসের কাছে গাছ পড়ে যান চলাচল থমকে যায়। তার ছিঁড়ে খুঁটি উপড়ে বিস্তীর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। শক্তিনগর জেলা হাসপাতালেও অপারেশন থিয়েটার-সহ সব বিভাগ অন্ধকারে ডুবে যায়। বিকল হয়ে যায় জেনারেটর। বেশ কিছু ক্ষণ পরে ফের আলো আসে।
মিনিট কুড়ির ঝড়ে শুধু নদিয়াতেই অন্তত আট জন আহত হয়েছেন। শান্তিপুরে আহত পাঁচ জন। কৈখালির কাছে দত্তফুলিয়া-কৃষ্ণনগর রাজ্য সড়কে অটোর উপর গাছ পড়ে চালক-সহ তিন জন আহত হয়েছেন। রানাঘাট শহরে হোর্ডিং ভেঙে এক জন আহত হন। নোকারিতে রানাঘাট ২ ব্লক অফিসে একটি চায়ের দোকানে বসেছিলেন আট জন। একটি গাছ ভেঙে পড়লে চার জন আহত হন। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়েছে। ওই ব্লকেরই বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় টিনের চাল উড়ে গিয়ে বেশ কিছু পরিবার আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে।
শিলাবৃষ্টিতে ধান ও খেতের ফসলের ভাল ক্ষতি হয়েছে। মুর্শিদাবাদে ঝড়ের এতটা দাপট না থাকলেও দুপুরের পর থেকে বিভিন্ন এলাকায় মাঝারি থেকে হালকা বৃষ্টি হয়। কান্দি, ভরতপুর, বড়ঞায় নামে শিলাবৃষ্টি। তাতে বোরো ধানের বিপুল ক্ষতির আশংকা করেছেন এলাকার চাষিরা। জেলার শস্যভাণ্ডার কান্দিতে সমস্ত জমিতে বোরো ধান পেকে গিয়েছে। কিন্তু নিয়মিত বৃষ্টির কারণে চাষিরা পনেরো থেকে কুড়ি শতাংশ ধান সবে কাটতে পেরেছেন। এই অবস্থায় এ দিনের শিলাবৃষ্টিতে প্রচুর ধান নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। রানাঘাট ১ ব্লকের বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় আম এবং কলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ফুল চাষেরও ক্ষতি হয়েছে। যদিও কত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কৃষি দফতর সেই হিসেব এখনও করে উঠতে পারেনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy