মোমিনের বাড়ির সামনে ভিড়।
আবারও এনআইএর হানা ডোমকলে। রবিবার বিকেলে ডোমকল মহকুমার রানিনগর থানার নজরানা গ্রামে হানা দিয়ে আব্দুল মোমিন মণ্ডল নামের এক যুবককে গ্রেফতার করে তারা। এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় পনেরো দিন ধরে দু’দফায় জেরা করার পরেই মোমিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার সঙ্গে আল-কায়দা জঙ্গি সংগঠনের যোগসূত্র পাওয়া গেছে বলেও দাবি করেছে এনআইয়ের কর্তারা।
আব্দুল মোমিনের পরিবারের দাবি, ডোমকলে শ্বশুরবাড়ি এলাকার রায়পুর গ্রামে একটি শিশু মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করে কোনক্রমে দিন চলে তার। কোনও রকমের অবৈধ কার্যকলাপের সঙ্গে তার কোনও যোগাযোগ নেই। এমনকি তার বাড়ি থেকে কোনও নথি পাওয়া যায়নি বলেও দাবি করছে তার পরিবার। প্রায় মাস দেড়েক আগে ডোমকল মহকুমা এলাকায় এক রাতে অভিযান চালিয়ে ছ’জনকে গ্রেফতার করেছিল এনআইএ। তা ছাড়াও এলাকার তিনজন যুবককে একইসঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছিল কেরল থেকে। পরে জলঙ্গির নওদাপাড়া থেকে আরও এক যুবককে গ্রেফতার করেছিল তারা। মমিনকে নিয়ে জঙ্গি সন্দেহে মোট ১১ জনকে গ্রেফতার করল কেন্দ্রীয় ওই গোয়েন্দা সংস্থা।
এলাকার মানুষের দাবি, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই তালিকায় আরও লম্বা হবে। এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে, দিন ১৫ থেকে এলাকায় ঘাঁটি গেড়ে প্রায় কুড়ি জনকে তারা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। দিল্লির একটি এনজিও-র সহায়তায় চলা জলঙ্গির একটি বেসরকারি স্কুলের দিকে নজর আছে তাদের। এদের মধ্যে মোমিনকে প্রথম গ্রেফতার করা হল। মোমিনের পরিবারের দাবি, রবিবার বিকেল চারটে নাগাদ তাদের বাড়িতে পুলিশ ও এনআইএর দু’টি গাড়ি এসেছিল। গাড়ি থেকে জনা আটকে পুলিশ ও এনআইএ অফিসার সরাসরি বাড়িতে ঢুকে মোমিনকে গ্রেফতার করে। গোটা বাড়ি তল্লাশি চালায় তারা। এরপর রানিনগর থানায় নিয়ে গিয়ে সেখান থেকেই ফোন মারফত জানিয়ে দেওয়া হয় মোমিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মোমিনের বৌদি আয়েশা বিবি বলেন, ‘‘সব মিলিয়ে মাসে হাজার পাঁচেক টাকা আয় হয় ওর। তাতেই দুই সন্তান আর স্ত্রীকে নিয়ে মোমিন সংসার চালাতে হিমশিম খায়। জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িয়ে থাকলে ওর সংসারের এমন হাল হত না। কোন চক্রান্তের শিকার হয়েছে মোমিন।’’মোমিনের ছোট বোন সাগরা বিবি বলছেন, ‘‘অনেক কষ্ট করে একটি বেসরকারি ব্যাঙ্ক থেকে ৮০ হাজার টাকা ঋণ করে দিয়েছি ভাইকে। এখন কিভাবে কী হবে কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না।’’ পরিবারের সদস্যদের মতই নজরানা গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, মমিনের মত শান্ত স্বভাবের ছেলের জুড়ি মেলা ভার। এর আগে যে ১০ জনকে গ্রেফতার হয়েছে তারাও প্রতিবেশীদের নজরে শান্ত স্বভাবের। কোনও ঝামেলায় থাকেনি তারা।
এলাকায় আগের যারা গ্রেফতার হয়েছে তাদের সঙ্গে মিল বলতে একটাই খুঁজে পাচ্ছেন পুলিশ কর্তারা। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলছেন, "যারা এর আগে এনআইএ-র হাতে গ্রেফতার হয়েছে, তাদের কখনও কোনও দুষ্কর্মের সঙ্গে জড়িয়ে থাকতে দেখা যায়নি। সকলের মধ্যে মিল বলতে এরা সবাই খুব শান্ত এবং চাপা স্বভাবের।’’রানিনগরের কালীনগর গ্রাম থেকে এর আগে গ্রেফতার হয়েছিল আবু সুফিয়ান এবং মুর্শিদ হাসান। এদের বাড়ি থেকে কিমি পাঁচেক দূরে নজরানা গ্রামের বাড়ি মোমিনের। ফলে তাদের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক আছে কিনা সেটাও খতিয়ে দেখছে এনআইএ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy