(বাঁ-দিকে থেকে উপরে) সরিফুল ইসলাম, শুভাশিস ঘোষ, অনিরুদ্ধ দত্ত (ডান দিকে নীচে) কিশলয় সরকার, জিষ্ণু বিশ্বাস ও দেবশুভ্র চক্রবর্তী।
একেবারে চমকেই গিয়েছে জঙ্গিপুরের গঙ্গাপ্রসাদ গ্রাম। গাঁয়ের ছেলেটা পড়াশোনায় বরাবরই ভাল। তা বলে একেবারে উচ্চ মাধ্যমিকে পঞ্চম!
বাড়িতে বাবা-মা, দুই ভাই আর এক বোন। বাবা রফিকুল ইসলাম গ্রামীণ চিকিৎসক। বর্ধমানের এক আবাসিক স্কুল থেকে মাধ্যমিক দিয়েছিল সরিফুল ইসলাম। উচ্চ মাধ্যমিক দেয় হুগলির পাণ্ডুয়া শশীভূষণ সাহা হাইস্কুল থেকে। ৪৮৬ পেয়ে সে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। তবে তার মনখারাপ, পদার্থবিদ্যায় এক নম্বর কাটা গিয়েছে। ওই বিষয় নিয়েই ভবিষ্যতে গবেষণা করতে চায় সে।
পদার্থবিদ্যা নিয়ে গবেষণা করতে চায় পঞ্চম স্থানে থাকা আর এক জন, বহরমপুর জেএন অ্যাকাডেমির ছাত্র শুভাশিস ঘোষও। পেয়েছে ৪৮৬। গণিতে আর পদার্থবিদ্যায় একশোয় একশো। কদবেলতলার শিক্ষক দম্পতি তপনকুমার ঘোষ ও মিতা ঘোষের একমাত্র সন্তান শুভাশিস জয়েন্ট এন্ট্রান্স দিয়ে ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে সুযোগ পেয়েছে ঠিকই। কিন্তু সে পদার্থবিদ্যা নিয়ে পড়তে চায়। ভবিষ্যতে কলেজে পড়াতে চায় সে।
কল্যাণীর স্প্রিংডেল হাইস্কুলের অনিরুদ্ধ দত্তও পেয়েছে ৪৮৬। রাজ্যে পঞ্চম সে-ও। উত্তর ২৪ পরগনার কাঁচরাপাড়ার এই ছেলেও পড়তে চায় পদার্থবিদ্যা নিয়েই। ছকে বাঁধা পথে ডাক্তারি বা ইঞ্জিনিয়ারিং সে পড়তে চায় না। দিন কয়েক আগে মোবাইল কিনেছে সে। অনিরুদ্ধের কথায়, ‘‘স্মার্টফোন পড়াশোনার অভ্যাসটাই নষ্ট করে দেয়। তাই এত দিন মোবাইল ব্যবহার করিনি।’’
চাকদহ রামলাল একাডেমীর ছাত্র কিশলয় সরকার ৪৮৫ পেয়ে আছে ষষ্ঠ স্থানে। গণিতে ৯৯, পদার্থবিদ্যায় ১০০। তবে সে খুশি নয়। মাধ্যমিকে ত্রয়োদশ স্থানে ছিল কাঁঠালপুলির ছেলেটি। তার বাবা উৎপল সরকার দরাপপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। মা শম্পা সরকার রানাঘাট আনুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। কিশলয়ের মতে, আরও বেশি নম্বর পাওয়া উচিত ছিল। তারা ফের নম্বর খতিয়ে দেখার আবেদন জানাচ্ছে। তার ইচ্ছে, গণিত নিয়ে গবেষণা করবে।
৪৮৩ পেয়ে রাজ্যে অষ্টম স্থানে রয়েছে কৃষ্ণনগর কলেজিয়েট স্কুলের ছাত্র জিষ্ণু বিশ্বাস। মাধ্যমিকেও সে দশম স্থানে ছিল। রাধানগরের জিষ্ণুর বাবা বোধিপ্রিয় বিশ্বাস ও মা চন্দ্রা সাহা বিশ্বাস শিক্ষকতার সঙ্গে জড়িত। দিদি প্রণতি চিকিৎসক। ফলে বাড়িতে পড়াশোনার পরিবেশ ছোট থেকে সে পেয়েছে। এ বার কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়তে চায় সে।
অষ্টম স্থানে রয়েছে বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজ স্কুলের ছাত্র, শহরের স্বর্ণময়ী এলাকার দেবশুভ্র চক্রবর্তীও। মোট ৪৮৩ নম্বরের মধ্যে গণিতে একশোয় একশো। পদার্থবিদ্যা আর রসায়নে ৯৭। উচ্চ মাধ্যমিকের টেস্ট পরীক্ষার আগে খাদ্যনালীর সংক্রমণে মারা গিয়েছিলেন তার বাবা, মদনপুর হাইস্কুলের শিক্ষক দেবব্রত চক্রবর্তী। পেনশন চালু হয়নি। কিন্তু মা শুভ্রা চক্রবর্তী আর্থিক কষ্ট ছেলেকে বুঝতে দেননি। ছ’জন গৃহশিক্ষক ছিলেন। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ পেয়েও সে যাচ্ছে না। তার ইচ্ছে, পদার্থবিদ্যা নিয়ে গবেষণা করবে।
কল্যাণীর স্প্রিংডেল হাইস্কুলের অনুশ্রী মজুমদার ৪৮২ পেয়ে রাজ্যে নবম। বাবা উত্তমকুমার মজুমদার পূর্ত দফতরের কর্মী। অর্থনীতিতে ১০০ পাওয়া অনুশ্রীর ইচ্ছা, ভবিষ্যতে ওই বিষয়েই গবেষণা করবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy