Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

হাসপাতাল তৈরিতে রাজ্যের সাহায্য চাইলেন অভিজিৎ

নিজের সংসদীয় এলাকায় হাসপাতাল গড়তে রাজ্য সরকারের সাহায্য চাইলেন জঙ্গিপুরের কংগ্রেস সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। সোমবার রঘুনাথগঞ্জের দেউলিতে নিজের বাড়িতে অভিজিৎবাবু জানান, কেন্দ্রে পূর্বতন ইউপিএ সরকারের আমলেই কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রক বি ড়ি শ্রমিকদের জন্য নবগ্রাম ও সাগরদিঘিতে দু’টি ২৫ শয্যার হাসপাতাল গড়ার অনুমোদন দিয়েছেন। কিন্তু হাসপাতাল দু’টি গড়তে অন্তত ২০ একর জমির দরকার।

রঘুনাথগঞ্জে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

রঘুনাথগঞ্জে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রঘুনাথগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৪ ০৪:১৫
Share: Save:

নিজের সংসদীয় এলাকায় হাসপাতাল গড়তে রাজ্য সরকারের সাহায্য চাইলেন জঙ্গিপুরের কংগ্রেস সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। সোমবার রঘুনাথগঞ্জের দেউলিতে নিজের বাড়িতে অভিজিৎবাবু জানান, কেন্দ্রে পূর্বতন ইউপিএ সরকারের আমলেই কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রক বি ড়ি শ্রমিকদের জন্য নবগ্রাম ও সাগরদিঘিতে দু’টি ২৫ শয্যার হাসপাতাল গড়ার অনুমোদন দিয়েছেন। কিন্তু হাসপাতাল দু’টি গড়তে অন্তত ২০ একর জমির দরকার। তিনি বলেন, “সেই জমির ব্যবস্থা করে দেওয়ার জন্য সাংসদ হিসেবে সাহায্য চেয়ে রাজ্য সরকারের কাছে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু এখনও তার কোনও উত্তর মেলেনি।” তিনি জানান, হাসপাতাল দু’টির ক্ষেত্রে পরিকাঠামো তৈরি-সহ যাবতীয় আর্থিক খরচ বহন করবে কেন্দ্রীয় সরকার।

রাজনীতিতে আসার আগে কেন্দ্রীয় সংস্থা ‘সেইল’য়ের আধিকারিক ছিলেন অভিজিৎবাবু। তিনি জানান, বিশেষ প্রজেক্ট ইউনিট হিসেবে ‘সেইল’কে রাজি করিয়ে পিপিপি মডেলে ১০০ কোটি টাকা বিনিয়োগে জঙ্গিপুরে একটি ইস্পাত কারখানা গড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। মহারাষ্ট্র থেকে তিনটি সংস্থা এ ব্যাপারে আগ্রহও দেখিয়েছিল। এতে জঙ্গিপুরের প্রায় সাড়ে ৪ শো যুবকের কর্মসংস্থান করা যেত। এর জন্য ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে নিজের জমি দিলে তাকে এই সংস্থার একজন অংশীদার করে নেওয়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, “আশা করেছিলাম জঙ্গিপুরের বিড়ি কারখানার মালিকেরা এ ব্যাপারে এগিয়ে আসবেন। কিন্তু নিজেদের ব্যবসার বাইরে ইস্পাত শিল্পে বিনিয়োগে তাঁদের আগ্রহ দেখা যায়নি।”

বিড়ি শিল্পই জঙ্গিপুরে কর্মসংস্থানের প্রধান জায়গা। সে শিল্পও সঙ্কটে রয়েছে। তাই বিড়ি মালিকদেরও বিকল্প অন্য শিল্পের কথা ভাবতে হবে বলে অভিজিৎবাবু জানিয়েছেন। যদিও অরঙ্গাবাদের এক বিড়ি কারখানার মালিক জাকির হোসেন বলেন, “শুধু ইস্পাত শিল্প কেন, জঙ্গিপুর এলাকায় যে কোনও শিল্পের শরিক হতে আমি আগ্রহী। কিন্তু এই ধরণের কোনও প্রস্তাব আমার কাছে আসেনি। অভিজিৎবাবু যদি চান তাহলে আমি তাঁকে সবরকমভাবে সাহায্য করতে প্রস্ত্ুত।” তা ছাড়া ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক চার লেন হওয়ায় যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নতি ঘটেছে। তাই শুধুমাত্র রাস্তাঘাট তৈরির জন্য নয়, যে ভাবেই হোক জঙ্গিপুরে শিল্পদ্যোগীদেরও নিয়ে আসতে হবে। এ কাজটা সহজ হয় রাজ্য সরকারের সহযোগিতা পেলে।

তবে পুর্বতন সাংসদ প্রণব মুখোপাধ্যায় জঙ্গিপুরে ফুড পার্ক গড়ে তোলার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তা নিয়ে কার্যত হতাশ বর্তমান সাংসদ প্রণবপুত্র। তাঁর কথায়, “জঙ্গিপুর সহ গোটা মুর্শিদাবাদ জেলাতেই প্রায় ২ লক্ষ টন আম ও লিচু হয়। প্রচুর পরিমাণে সব্জি হয়। সেগুলি ঠিক মতো সংরক্ষণ করে যাতে চাষিরা লাভবান হতে পারে সেদিকে খেয়াল রেখেই ফুড পার্ক গড়ার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু একটি সংস্থা ফুড পার্ক গড়তে এগিয়ে গিয়েও শেষ পর্যন্ত আর ইচ্ছুক নন বলে জানায়। এ ব্যাপারে রাজ্যের পূর্বতন খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রী সুব্রত সাহার সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনাও হয়েছিল আমার। কিন্তু এখন তো সুব্রতবাবু আর সে দায়িত্বে নেই। তাই জঙ্গিপুরে ফুড পার্ক নিয়ে খুব একটা আশার আলো দেখা যাচ্ছে না।’’ মিঠিপুরে পদ্মা ভাঙনের কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়াতেও উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “কেন্দ্রীয় জল সম্পদ মন্ত্রকের এক প্রতিনিধি দল লালগোলা, জঙ্গিপুর, সুতি এলাকার গঙ্গা, পদ্মার ভাঙন পরিদর্শন করে গিয়ে ১৮ টি জায়গায় ভাঙন রোধের জন্য ৫৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছেন। সামনে বর্ষা। সব জায়গায় দ্রুত কাজ শেষ করতে না পারলে কাজের কাজ কিছু হবে না। কিন্তু কয়েকটি জায়গায় নানা বাধা বিপত্তির জন্য কাজ করা যাচ্ছে না। সাংসদের পক্ষে তো এসব বিপত্তি দূর করা সম্ভব নয়। তাই রাজ্য সরকারকে এ ব্যাপারে কার্যকরী ভূমিকা নিতে হবে। জঙ্গিপুরে হাসপাতাল তৈরি সহ বিভিন্ন বিষয়ে রাজ্য সরকার সব রকম ভাবে সাহায্য করবে বলে আশ্বস্ত করেছেন তৃণমূলের জঙ্গিপুর লোকসভা কেন্দ্রের সভাপতি ও বিধায়ক ইমানি বিশ্বাস। তিনি বলেন, ‘‘উন্নয়নের প্রশ্নে কোনও রাজনীতি নেই। যে কোনও প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা করব। তবে বিড়ি শ্রমিকদের জন্য নতুন হাসপাতাল গড়ার চেয়ে ধুলিয়ান ও নিমতিতায় যে হাসপাতাল দুটি রয়েছে সেগুলির পরিকাঠামোর উন্নয়নে জোর দেওয়া দরকার। কারণ দু’টি হাসপাতালই কার্যত বন্ধ।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE