Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

স্বাস্থ্যকর্তাকে মারধরে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা

ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠক করতে গিয়ে তাঁকে মারধরের অভিযোগ উঠল মুর্শিদাবাদের বড়ঞা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার দুপুরে বড়ঞা গ্রামীণ হাসপাতালে এই ঘটনার পরে ওই স্বাস্থ্য আধিকারিক দীনেশ গায়েন জখম অবস্থায় ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন।

প্রহৃত দীনেশ গায়েন (বাঁ দিকে) ও অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা জালালউদ্দিন (ডান দিকে)।  —নিজস্ব চিত্র।

প্রহৃত দীনেশ গায়েন (বাঁ দিকে) ও অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা জালালউদ্দিন (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কান্দি শেষ আপডেট: ২২ অগস্ট ২০১৪ ০২:০৪
Share: Save:

ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠক করতে গিয়ে তাঁকে মারধরের অভিযোগ উঠল মুর্শিদাবাদের বড়ঞা ব্লক তৃণমূলের সভাপতি ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার দুপুরে বড়ঞা গ্রামীণ হাসপাতালে এই ঘটনার পরে ওই স্বাস্থ্য আধিকারিক দীনেশ গায়েন জখম অবস্থায় ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুপুর বারোটা নাগাদ ব্লক তৃণমূল সভাপতি জালালউদ্দিন ওরফে আফাজ প্রায় ২৫ জন অনুগামীকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়ে স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে হাজির হন। দীনেশবাবু তিন জন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের ডেকে বৈঠক শুরুও করেন। বৈঠক চলাকালীন হাসপাতালের আবর্জনা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন জালালউদ্দিন। কিন্তু হাসপাতালে দশ জন সাফাইকর্মী থাকার কথা থাকলেও মাত্র তিন জন রয়েছেন। তাঁদের এক জন অসুস্থ হয়ে পড়ায় কাজে আসছেন না। তাই হাসপাতালে আবর্জনা পরিষ্কার করা যাচ্ছে না বলে জানান ওই স্বাস্থ্যকর্তা। এরপরেই বচসা শুরু হয়।

অভিযোগ সেই সময় দীনেশবাবুকে ওই তৃণমূল নেতা বলেন, কী ভাবে হাসপাতাল পরিষ্কার রাখতে হবে, তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেই ঠিক করতে হবে। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, দীনেশবাবু তখন ওই তৃণমূল নেতাকে জানান, খুব কষ্ট করেই তাঁরা রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা দিচ্ছেন। তাঁর জায়গায় বসে কাজ করলে ওই তৃণমূল নেতা বুঝতে পারতেন, কী অবস্থায় তাঁদের কাজ করতে হচ্ছে। অভিযোগ, এরপরেই ওই তৃণমূল নেতা অকথ্য গালিগালাজ দিতে দিতে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে মারধর করেন। ওই নেতার অনুগামীরাও দীনেশবাবুকে মারধর করেন বলে অভিযোগ। ঘরে থাকা অন্য চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা তখন ওই তৃণমূলের নেতা ও তাঁর অনুগামীদের হাত থেকে দীনেশবাবুকে উদ্ধার করেন। জেলার পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীরের বক্তব্য, “ওই ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক তাঁকে মারধরের অভিযোগ করেছেন জালালউদ্দিনের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

জালালউদ্দিন বলেন, “অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ওই চিকিৎসকের সঙ্গে উত্তেজিত হয়ে কথা কাটাকাটি ছাড়া আর কিছুই হয়নি।” তাঁর দাবি, “আমি শুনেছি ওই চিকিৎসক মানসিক রোগী।” দীনেশবাবুর পাল্টা দাবি, “আমি যদি মানসিক রোগী হতাম, তা হলে সরকার আমাকে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের দায়িত্ব দিত না।” তাঁর বক্তব্য, “আমাকে এ দিন প্রচণ্ড মারধর করেছেন ওই তৃণমূল নেতা ও তাঁর অনুগামীরা।”

তবে জালালউদ্দিন জানান, ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত হলেই সব জানা যাবে। তৃণমূলের মুর্শিদাবাদ জেলার মুখপাত্র আশিস রায়চৌধুরী অবশ্য বলেন, “কোনও সরকারি কর্মীকে মারধর করা তৃণমূল সমর্থন করে না। যদি এমন কাজ হয়ে থাকে, তা হলে দল তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।”

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE