Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Death

নেশামুক্তি কেন্দ্রে যুবকের মৃত্যুতে প্রশ্ন

মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন গাঁজার নেশায় আসক্ত ছিলেন পেশায় ট্রাকচালক বিশ্বজিৎ।

বিশ্বজিৎ ধীবর

বিশ্বজিৎ ধীবর

নিজস্ব সংবাদদাতা 
সিউড়ি শেষ আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:৩১
Share: Save:

গাঁজার নেশা ছাড়াতে শুক্রবার রাতে নেশামুক্তি কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছিল যুবককে। দু’দিনের মাথায়, রবিবার সকালে মারা গেলেন ওই যুবক, বিশ্বজিৎ ধীবর (২৪)।

বীরভূমের সিউড়ির কড়িধ্যা পঞ্চায়েতের ছোড়া গ্রামের ওই ঘটনার পরে মৃতের পরিজনের দাবি, নেশামুক্তি কেন্দ্রে মারধরের জেরেই মারা গিয়েছেন তিনি। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় লিখিত অভিযোগ হয়নি। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, ‘‘সিউড়ি থানার আইসি ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট হবে।’’

মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন গাঁজার নেশায় আসক্ত ছিলেন পেশায় ট্রাকচালক বিশ্বজিৎ। তিনি সিউড়ি ২ ব্লকের কেন্দুয়া পঞ্চায়েতের পতণ্ডা গ্রামের বাসিন্দা।

পরিজনেরা জানান, শুক্রবার বাড়ি ফিরে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় অশান্তি করছিলেন বিশ্বজিৎ। একটি খড়ের পালুইয়ে আগুনও লাগিয়ে দেন। এরপরেই বিশ্বজিতের বাবা, পেশায় চাষি নীরেন্দ্রনাথবাবু ছোড়া গ্রামের ওই কেন্দ্রে ফোন করেন। রাত ১১টা নাগাদ কেন্দ্রের কর্মীরা এসে বিশ্বজিৎকে নিয়ে যান।

বিশ্বজিতের পরিজনেরা জানান, এ দিন সকালে কেন্দ্রের কর্মীরা ফোনে জানান শ্বাসকষ্টের জন্য তাঁকে সিউড়ি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কিছুক্ষণ পরেই তাঁরা ফের ফোনে বিশ্বজিতের মৃত্যুসংবাদ জানান। মৃতের পরিজনদের দাবি, তাঁরা জানতে পেরেছেন শনিবার বিশ্বজিৎ ওই কেন্দ্রে একটি দরজা ভেঙে ফেলেন। তার পরেই তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়। দেহের মাথায়, হাতে, পিঠে আঘাতের চিহ্নই মারধরের প্রমাণ। মৃতের ভাই বিমল বলেন, ‘‘দাদার শ্বাসকষ্ট কোনও দিন হয়নি। হঠাৎ করে শ্বাসকষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় কী করে? মারধর করেই ওকে ওরা মেরে ফেলেছে।’’ তাঁরা পুলিশে অভিযোগ জানাবেন বলেও জানিয়েছেন পরিজনেরা।

অশোকনগর, নিউ ব্যারাকপুর, পর্ণশ্রী, মহেশতলা— রাজ্যের একাধিক জায়গায় এর আগে নেশামুক্তি কেন্দ্রে পিটিয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে। এমন একাধিক ঘটনার পর তৎপর হয় মানবাধিকার কমিশনও। কলকাতার বেশ কিছু কেন্দ্রে গিয়ে সব খতিয়ে দেখে পুলিশকে রিপোর্টও দিতে বলেছিল কমিশন। প্রশাসনের একাংশের দাবি, জেলায় কেন্দ্রগুলিতে নজরদারির দায়িত্ব সমাজকল্যাণ দফতরের।

সিউড়ির ওই কেন্দ্রের মালিক গালিব আলি খান সম্প্রতি পথ দুর্ঘটনায় মারা যান। তাঁর ভাগ্নে আপাতত কেন্দ্রটি দেখাশোনা করেন। তাঁর দাবি, ‘‘ওখানকার পরিকাঠামো ভাল ছিল। ওই রাতে কী ঘটেছে বলতে পারব না। সন্ধ্যার আগেই আমি বাড়ি ফিরে যাই।’’ কেন্দ্র সূত্রে খবর, শনিবার রাতে অশান্তি শুরু করায়

বিশ্বজিতের হাত-পা গামছা দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছিল। ভোরের দিকে তিনি নিস্তেজ হয়ে যান। তবে হাসপাতালে আনার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছিল বলে জানান বীরভূম স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক হিমাদ্রি আড়ি।

অন্য বিষয়গুলি:

Death Suri Rehabilitation Center
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE