শুভ্রাংশু রায়।
সম্প্রতি নেটমাধ্যমে তাঁর একটি পোস্ট বিতর্ক এবং জল্পনা তৈরি করেছে। অতঃপর মুকুল রায়ের পুত্র শুভ্রাংশুর কলার টিউনের গান নিয়েও জল্পনা শুরু হল রাজ্য বিজেপি-তে। বীজপুরের প্রাক্তন বিধায়ক শুভ্রাংশুকে ফোন করলেই শোনা যাচ্ছে, কর্ণ জোহর পরিচালিত রণবীর কপূর-অনুষ্কা শর্মা অভিনীত ‘অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল’ ছবির বিখ্য়াত গান ‘আচ্ছা চলতা হুঁ, দুয়াঁও মে ইয়াদ রাখনা’।
এই গান কি তাঁর বর্তমান দলকে কোনও বার্তা? প্রসঙ্গ শুনেই সোমবার ফোন কেটে দিয়েছেন শুভ্রাংশু। উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে কর্ণের পরিচালিত ছবিটিতে অরিজিৎ সিংহের গাওয়া গানটি খুবই জনপ্রিয় হয়েছিল। কিন্তু এতদিন পর কেন শুভ্রাংশু তাঁর কলার টিউনে এই গানটি ডাউনলোড করলেন, তা নিয়ে স্বভাবতই জল্পনা তৈরি হয়েছে। বিধানসভা ভোটে বিজেপি-র সামূহিক বিপর্যয়ে রেহাই পাননি শুভ্রাংশুও। বাবা মুকুল জিতলেও তিনি হেরেছেন। তার পর থেকেই তাঁর কথাবার্তা নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। সেই সময়েই এই কলারটিউন।
জনপ্রিয় ধারনা হল, সাধারণত ব্যক্তিবিশেষ তাঁর মানসিক অবস্থা অনুযায়ী মোবাইলের কলারটিউন সেট করে থাকেন। যাতে নিজের মুখে না বলেও মনোভাবটি জানানো যায়। একই ভাবে নিজেদের নেটমাধ্যমেও অনেকে তাঁদের ‘বার্তা’ জানিয়ে থাকেন। তবে সবসময়েই সকলে যে তা করেন, এমনও নয়। তবু অনুসন্ধিৎসু এবং উৎসাহীরা দুইয়ে দুইয়ে চার করেই বিষয়টি দেখেন। মুকুলপুত্রের ক্ষেত্রেও তেমনই করা হচ্ছে। প্রথমে তাঁর ‘আত্মসমালোচনা’ সংক্রান্ত ফেসবুক পোস্ট এবং তার পর ‘চলতা হুঁ’ কলার টিউন বিজেপি-র সঙ্গে শুভ্রাংশুর দূরত্বের ইঙ্গিত দিচ্ছে বলেই রাজনীতির কারবারিদের ধারনা। যদিও এর কোনও সমর্থন কোনও সূত্রে পাওয়া যায়নি।
২০১১ সালে তৃণমূলের প্রতীকে প্রথমবার বিধায়ক হন তৎকালীন তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমাণ্ড মুকুলের পুত্র। ২০১৬ সালেও তিনি জিতেছিলেন ওই আসন থেকেই। কিন্তু ২০১৭ সালের ৩ নভেম্বর মুকুল বিজেপি-তে যোগ দিতেই সমীকরণ বদলাতে শুরু করে। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের পর পিতার হাত ধরে দিল্লিতে গিয়ে বিজেপি-তে নাম লেখান শুভ্রাংশু। এবারের ভোটে বীজপুর থেকে বিজেপি-র প্রার্থী হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তৃণমূল প্রার্থী সুবোধ অধিকারীর কাছে পরাজিত হন।
এমনিতে যাবতীয় বিতর্ক থেকে নিজেকে সবসময় দূরেই রাখেন মুকুলপুত্র। কিন্তু সেই শুভ্রাংশুই ২৯ মে রাতে নিজের ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘জনগণের সমর্থন নিয়ে আসা সরকারের সমালোচনা করার আগে আত্মসমালোচনা করা বেশি প্রয়োজন।।’ তাঁর এমন ফেসবুক পোস্টের ইশারা যে রাজ্য বিজেপি-র নেতৃত্বের প্রতি, তা বুঝতে কারও অসুবিধা হয়নি। যদিও নেটমাধ্যমে নিজের ওই পোস্ট প্রসঙ্গেও কোনও কথা বলতে চাননি তিনি। বিজেপি-র কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মুকুলের পুত্রের এমন পোস্ট রাজ্য বিজেপি-র অন্দরে প্রত্যাশিত ভাবেই অস্বস্তির পরিবেশ তৈরি করেছিল। যদিও বিজেপি-র রাজ্য নেতৃত্বের তরফে বলা হয়েছে, নেটমাধ্যমে দল চলে না। শুভ্রাংশুর যা বক্তব্য, তা দলের অন্দরে বললেই তিনি ভাল করবেন। শুভ্রাংশুর পিতা কৃষ্ণনগরের উত্তরের বিজেপি বিধায়ক মুকুলও ছেলের অবস্থান নিয়ে মৌনীই রয়েছেন।
দলের অভ্যন্তরীণ অস্বস্তি কাটাতে মুকুলপুত্রের পোস্টকে খুব বেশি পাত্তা দিতে চাননি রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেছেন, ‘‘কারও ব্যক্তিগত মতামত হতেই পারে। কে কি পোস্ট করল তাতে যায় আসে না।’’ তৃণমূল শিবির আবার এমন ঘটনাকে বিজেপি-র ভাঙন বলেই কটাক্ষ করেছে। তৃণমূলের রাজ্যসভার তথা মুখপাত্র সাংসদ সুখেন্দুশেখর রায় বলেন, ‘‘বিজেপির অনেকেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। তাঁদেরও ওঁর মতনই মনে হয়েছে। ক-জন যোগদান করবেন আমি জানি না। তবে অনেকেই যোগদান করেছেন এটা বলতে পারি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy