জ্যোৎস্না বাগের মেয়ের সঙ্গে বিধায়ক উত্তরা সিংহ হাজরা। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
শৌচালয় নেই। মেয়ের বিয়ে আটকে যাচ্ছে। বিধায়ককে ফোন করে শৌচালয়ের ব্যবস্থা করলেন মা। গড়বেতা গ্রাম পঞ্চায়েতের বনকাটা সংসদের খিরিয়া গ্রামের ঘটনা। মহিলার ফোন পেয়ে মঙ্গলবার গ্রামে এসে বিধায়ক শৌচালয়ের নির্মাণের আশ্বাস দিলেন। ভরসা পেল মা, মেয়ে-সহ গোটা পরিবারই।
গড়বেতার বিধায়ক তথা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ হাজরাকে রবিবার ফোন করে জ্যোৎস্না বাগ বলেছিলেন, ‘‘দিদি, বাড়িতে শৌচালয় নেই। বিএ পাশ করেছে মেয়ে। তাঁর বিয়ের ব্যবস্থা করছি। কিন্তু মেয়ের বিয়ে ভেঙে যাচ্ছে বাড়িতে শৌচালয় না থাকায়। আপনি যদি একটা কিছু ব্যবস্থা করে দেন।’’ মঙ্গলবার বিধায়ক গড়বেতায় এসে সটান চলে যান খিরিয়া গ্রামে ওই মহিলার বাড়িতে। সঙ্গে ছিলেন গড়বেতা ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি সেবাব্রত ঘোষ, ভূমি কর্মাধ্যক্ষ অসীম সিংহ রায়, দুলাল ভট্টাচার্য-সহ পঞ্চায়েতের কয়েকজন সদস্য। জ্যোৎস্না বাগের কাছ থেকে সব কথা শুনে বিধায়ক বাড়ির সামনের একটি স্থানে শৌচালয় নির্মাণ করে দেওয়ার জন্য স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রতিনিধি ও দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দেন। জ্যোৎস্নার মেয়ে অন্বেষা গতবছরই গড়বেতা কলেজ থেকে বিএ পাশ করেছেন। তাঁকে কাছে টেনে বিধায়ক বলেন, ‘‘দ্রুতই হবে শৌচালয়। নির্মল বাংলায় প্রতিটি পরিবারে শৌচালয় আছে, তোমাদেরও হবে।’’
জ্যোৎস্না নিরক্ষর। তাঁর স্বামী জয়দেব বাগের সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন। তিনি দিনমজুরি করেন। তাঁদের এক ছেলে ও এক মেয়ে। দুই ছেলেমেয়েই স্নাতক। বিএ পাশ করে ছেলেও দিনমজুরের কাজ করেন। আর মেয়ে অন্বেষার বিয়ে দেওয়ার তোড়জোড় চলছে। বিধায়কের সামনে জ্যোৎস্না বলেন, ‘‘বছর চারেক আগে পঞ্চায়েতে ৯০০ টাকা জমা দিয়েছিলাম সরকারি প্রকল্পে শৌচালয় নির্মাণের জন্য। নিজেদের জায়গাও ঠিক করি। কিন্তু প্রতিবেশীদের বাধায় শৌচালয় নির্মাণ করা যায়নি।’’
অভিযোগ, প্রতিবেশী নিমাই বাগ ও তাঁর ছেলে তৃণমূল কর্মী রাজকুমার বাগ জ্যোৎস্নাদের শৌচালয় নির্মাণে বাধা দেন। রাজকুমার বলেন, ‘‘আমাদের বাড়ির সামনে শৌচালয়ের চেম্বার করার চেষ্টা করলে আমরা বারণ করি। ওঁরা নিজেদের জায়গায় করলে আপত্তি কিছু নেই।" বিধায়ক উত্তরা বলেন, ‘‘ওই মহিলা শৌচালয় না থাকায় মেয়ের বিয়ে আটকে যাচ্ছিল বলে ফোন করেছিলেন। আমি তাঁদের বাড়িতে গিয়ে জায়গা চিহ্নিত করে এসেছি, খুব শীঘ্রই শৌচালয় নির্মাণ করে দেওয়া হবে।’’ শৌচালয় নির্মাণের আশ্বাসে কলেজ উত্তীর্ণ অন্বেষা বলেন, ‘‘বিধায়কের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব। শৌচালয় প্রত্যেক বাড়িতে থাকা উচিত।’’
সেলুলয়েডে (‘টয়লেট এক প্রেমকথা’ সিনেমায়) বিয়ের পরে স্ত্রীর জন্য শৌচালয় বানাতে পরিবারের সঙ্গে লড়েছিলেন স্বামী। আর বাস্তবে মেয়ের বিয়ের জন্য বিধায়কের কাছ থেকে শৌচালয় চাইলেন মা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy