জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে বাস। —নিজস্ব চিত্র
একটি পথ দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নিল কলকাতা বন্দর এলাকার মোমিনপুর। একের পর এক বাসে আগুন ধরিয়ে দিল উত্তেজিত জনতা। ভাঙচুর চালানো হল একাধিক বাসে। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি করা হল। পরিস্থিতি সামলাতে পাল্টা পুলিশকে লাঠি চালাতে হয়। ঘ্ণ্টা দুয়েকের চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে কলকাতা পুলিশের বিশাল বাহিনী।
ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার দুপুর পৌনে একটা নাগাদ, মোমিনপুরের কাঁটাপুকুর মর্গ লাগোয়া রিমাউন্ট রোডে। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, মোমিনপুরে দিকে যাচ্ছিল দু’টি বেসরকারি বাস। নিজেদের মধ্যে রেষারেষি করছিল দু’টি বাসই। সেই সময় সামনে ছিল একটি মোটরবাইক। একটি বাস ওই মোটরবাইকে ধাক্কা মারলে চালক ছিটকে পড়ে যান। তাঁকে পিষে দিয়ে যায় পিছনে থাকা বাসটি। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ওই মোটর সাইকেল আরোহীর। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে মৃত যুবকের নাম অনিল বর্মা (৩২)। তিনি স্থানীয় ইজেসি ডক জংশন রোডের বাসিন্দা। পেশায় ট্রেলার চালক।
কাশ্মীরে নেট বন্ধ কেন, ৭ দিনের মধ্যে পর্যালোচনা চায় সুপ্রিম কোর্ট আরও পড়ুন
এর পরেই এলাকার কয়েকশো মানুষ জমায়েত হন। পুলিশের দাবি, উত্তেজিত জনতা মৃতদেহ আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। তার মধ্যেই ওই জনতার একাংশ পর পর তিনটি বাসে অগ্নিসংযোগ করে। ভাঙচুর চালায় রাস্তায় থাকা অন্য বাসে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ তোলার চেষ্টা করলে বাধা দেয় জনতা। শুরু হয় পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট বৃ্ষ্টি। প্রথমে পুলিশকে খানিকটা পিছু হটতে হয়। কয়েক মিনিটের মধ্যেই ডিসি বন্দরের নেতৃত্বে অতিরিক্ত বাহিনী পৌঁছয় ঘটনাস্থলে। অতিরিক্ত বাহিনী নিয়ে পৌঁছন অন্য দুই ডিসি পদ মর্যাদার আধিকারিক। তাঁরা বিক্ষোভকারীদের সরে যেতে অনুরোধ করলে ফের শুরু হয় ইটবৃষ্টি। তখন পাল্টা লাঠি চালিয়ে মারমুখী জনতাকে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। তত ক্ষণে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকল বাহিনী। তবে দমকল বাসের আগুন নেভানোর আগেই কার্যত পুড়ে ছাই হয়ে যায় বাস গুলির বেশির ভাগটাই।
দেখুন ভিডিয়ো:
দুর্ঘটনায় নিহতের দেহ উদ্ধার করে এসএসকেএম হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃত যুবক ওই এলাকারই বাসিন্দা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আসার পর বাসে আগুন লাগানো এবং ভাঙচুরের ঘটনায় দোষীদের চিহ্নিত করা শুরু করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে খবর, দু’টি আলাদা মামলা শুরু করা হবে। একটি বাস চালকদের বিরুদ্ধে বেপরোয়া বাস চালানোর অভিযোগে এবং মৃত্যু ঘটানোর জন্য। অন্যটি অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে যাঁরা বাসে ভাঙচুর করেছেন এবং আগুন দিয়ে অশান্তি পাকিয়েছেন।
তবে প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে এবং সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তদন্তকারীদের দাবি, বাসের রেষারেষি নয়। বিনা হেলমেটে পিছনে আরও দুই যুবককে নিয়ে পাশের গলি থেকে বেরিয়ে আসেন তিনি। হঠাৎ করে বাইকটি বাসের সামনে চলে আসে। পিছনের দু’জন অন্যদিকে পড়ে যান। তাঁরা অক্ষত থাকলেও বাসের তলায় চলে যান ওই যুবক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy