Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

স্বাস্থ্য বিমার নজরদারিতে এ বার নতুন অডিট টিম

রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা প্রকল্প নিয়ে প্রায়ই বেসরকারি নার্সিংহোম-হাসপাতালগুলোর পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ ওঠে। আর এই অভিযোগের ভিত্তিতে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে এ বার জেলায় অডিট টিম গঠন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে এ নিয়ে তৎপরতাও শুরু হয়ে গিয়েছে। চারজন সদস্যের এই টিমের নেতৃত্বে থাকবেন প্রকল্পের ডিস্ট্রিক্ট ইমপ্লিমেন্টিং অফিসার তথা জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারঙ্গি।

বরুণ দে
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৪ ০১:০৮
Share: Save:

রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা প্রকল্প নিয়ে প্রায়ই বেসরকারি নার্সিংহোম-হাসপাতালগুলোর পরিষেবা নিয়ে অভিযোগ ওঠে। আর এই অভিযোগের ভিত্তিতে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে এ বার জেলায় অডিট টিম গঠন করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে এ নিয়ে তৎপরতাও শুরু হয়ে গিয়েছে। চারজন সদস্যের এই টিমের নেতৃত্বে থাকবেন প্রকল্পের ডিস্ট্রিক্ট ইমপ্লিমেন্টিং অফিসার তথা জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারঙ্গি। তিনিই হবেন এই কমিটির মেম্বার কনভেনর তথা টিম লিডার। বাকি তিনজন সদস্যের মধ্যে থাকবেন একজন সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার, একজন সার্জেন এবং অন্যজন এসিএমওএইচ। সিনিয়র মেডিক্যাল অফিসার এবং সার্জেনকে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত হতে হবে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, রাজ্য থেকেই জেলাস্তরে অডিট টিম গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই নির্দেশ সৌম্যশঙ্করবাবুকে জানিয়েও দিয়েছেন রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা প্রকল্পের ডিস্ট্রিক্ট নোডাল অফিসার বিশ্বরঞ্জন মুখোপাধ্যায়। সৌম্যশঙ্করবাবু বলেন, “নির্দেশ মতো অডিট টিম গঠন করা হচ্ছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।”

ওই দল সূত্রে জানা গিয়েছে, কোনও নার্সিংহোম কিংবা হাসপাতাল পরিদর্শনের দু’দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে হবে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে। তারপর সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে পদক্ষেপ করা হবে। জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “স্বাস্থ্য বিমা যোজনায় প্রায়ই বেসরকারি নার্সিংহোম-হাসপাতালগুলোর পরিষেবা নিয়ে মাঝেমধ্যে কিছু অভিযোগ ওঠে। অবশ্য অভিযোগ উঠলেই তা খতিয়ে দেখে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়।” তিনি বলেন, “জেলায় অডিট টিম গঠনের ফলে নজরদারি আরও বাড়বে। বিমার আওতায় যাঁরা রয়েছেন, তাঁরা পরিষেবার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যায় পড়ছেন কি না, পড়লে কী সমস্যা, টিমের সদস্যরা পরিদর্শনের সময় তাও খতিয়ে দেখবেন।” দারিদ্র্যসীমা রেখার নীচের বসবাসকারীরাই রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা প্রকল্পের সুবিধে পেতে পারেন। তবে, আগে তাঁদের কার্ড করাতে হবে। একটি পরিবারে একটিই কার্ড হয়। এতে পরিবার পিছু ৫ জন সদস্য বিমার আওতায় চলে আসেন। বছরে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত ছাড় মেলে। গোটা রাজ্যে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার আওতায় এসেছে ৩ কোটি ৬৯ লক্ষ ৯৩ হাজার ৭৭৪টি পরিবার (গত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত)। প্রকল্পের সুফল পেয়েছেন ৬৭ লক্ষ ৬১ হাজার ৫৮৩ জন। পশ্চিম মেদিনীপুরের ৪ লক্ষ ৫০ হাজার ১০১টি পরিবার প্রকল্পের আওতায় রয়েছে।

আগে জেলা হাসপাতাল এবং মহকুমা হাসপাতাল থেকেই স্বাস্থ্য বিমা যোজনার সুবিধে মিলত। মাস দুয়েক হল জেলার আরও সাতটি গ্রামীণ হাসপাতাল এবং একটি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকেও সুবিধে মিলতে শুরু করেছে। এই সব হাসপাতাল-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে রোগী ভর্তিও শুরু হয়েছে। তালিকায় রয়েছে সবং গ্রামীণ হাসপাতাল, বেলদা গ্রামীণ হাসপাতাল, চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতাল, গড়বেতা গ্রামীণ হাসপাতাল, কেশিয়াড়ি গ্রামীণ হাসপাতাল, খড়িকামাথানি গ্রামীণ হাসপাতাল (নয়াগ্রাম), বেলপাহাড়ি গ্রামীণ হাসপাতাল। বাগদা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র (মোহনপুর)।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, অনেক আগে থেকেই এই সমস্ত গ্রামীণ হাসপাতাল এবং ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসার উদ্যোগ শুরু হয়। কারণ উপভোক্তারা চাইছিলেন, ব্লকস্তরেও যেন প্রকল্পের সুফল মেলে। সেই মতো রাজ্যের মাধ্যমে কেন্দ্রে প্রস্তাব পাঠানো হয়। প্রস্তাব মঞ্জুরও হয়। আগে পশ্চিম মেদিনীপুরের চারটি সরকারি হাসপাতাল থেকে স্বাস্থ্য বিমা যোজনার সুবিধে মিলত। সব মিলিয়ে ২৬টি বেসরকারি নার্সিংহোম-হাসপাতাল প্রকল্পের আওতায় রয়েছে। অন্য দিকে, ১২টি সরকারি হাসপাতাল-স্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রকল্পের আওতায় রয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

barun dey medinipur health policy audit
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE