টিটি খেলোয়াড় সুনীল দত্ত।
নতুন বছরের শুরুতেই বিষণ্ণ রেলশহর। বৃহস্পতিবার রাতে প্রয়াত হলেন টেবিল টেনিস খেলোয়াড় সুনীল দত্ত। বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর। চিকিত্সকেরা জানিয়েছেন, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই তাঁর মৃত্যু হয়। সুনীলবাবুর আকস্মিক প্রয়াণে ভেঙে পড়েছেন তাঁর স্ত্রী মিলুদেবী ও মেয়ে টেবিল টেনিস খেলোয়াড় এরিনা। শোকস্তব্ধ রেলশহরের ক্রীড়া দুনিয়াও।
বাবা রেলকর্মী হওয়ায় খড়্গপুরেই রেলের রবীন্দ্র ইনস্টিটিউটে টেবিল টেনিসে হাতেখড়ি সুনীল দত্তের। মাত্র ১৯ বছর বয়সে খেলার কোটায় রেলে চাকরিতে যোগ দেন। পুরাতনবাজারে ছিল বাড়িতে। ১৯৭৮ সালে রাজ্য টেবিল টেনিসে জয়ী হয়েছিলেন তিনি। ইন্টার রেলওয়ে টেবিল টেনিসে ব্রোঞ্জ পান সুনীলবাবু। বিলিয়ার্ডসেও দক্ষ ছিলেন তিনি। জেলা টেবিল টেনিস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক হওয়ার পাশাপাশি মেদিনীপুর স্পোর্টসম্যান রিক্রিয়েশন ও স্পোর্টিং ক্লাবেরও কোচ ছিলেন। তাঁর হাতেই টেবিল টেনিসের জগতে এসেছে বহু নবীন প্রতিভা। সুনীলবাবুর ছাত্রী টেবিল টেনিস খেলোয়াড় শ্রীপর্ণা নন্দের কথায়, “স্যারের কাছে অনেক কিছু শিখেছি। এখন অনেককে প্রশিক্ষণ দিই। তবে অনেক শেখা বাকি থেকে গেল।”
২০১৩ সালে গুজরাতে গাঁধী ধামে টেবিল টেনিসে কোরিয়ান কোচের সহকারী কোচ ছিলেন সুনীল দত্ত। গত বছরের ১৯-২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাজ্য ৮০ তম টেবিল টেনিস চ্যাম্পিয়ানশিপে যোগ দেন তিনি। তাঁর ঘনিষ্ঠ টেবিল টেনিস খেলোয়াড় তথা বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যার অধ্যাপক সত্যজিত্ সাহা বলছিলেন, “সুনীলের যে কোনও খেলায় আগ্রহ আমাদের উজ্জীবিত করত। ওঁর মৃত্যুতে টেবিল টেনিস জগতে মস্ত ক্ষতি হয়ে গেল।”
সুনীলবাবু নিজের একমাত্র সন্তান এরিনাকে টেবিল টেনিসের তারকা বানানোর স্বপ্ন দেখতেন। বাবার অনুপ্রেরণায় এরিনাও কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের জাতীয় স্তরে টেবিল টেনিস প্রতিযোগিতায় তিন বার স্বর্ণপদক পেয়েছে। বাবা হঠাত্ চলে যাওয়ায় বিপর্যস্ত এরিনা। তার কথায়, “আমার প্রেরণা হারিয়ে গেল।”
শুক্রবার দুপুরে রেল হাসপাতাল থেকে বোগদায় সুনীলবাবুর অফিস হয়ে দেহ পৌঁছয় বাড়িতে। সন্ধ্যায় হরিশচন্দ্র শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। শেষযাত্রায় হাজির ছিলেন সুনীলবাবুর ছাত্রছাত্রী, গুণমুগ্ধরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy