একশো দিনের কাজের অগ্রগতিতে সন্তুষ্ট নন জেলাশাসক। তাই শনি-রবি ছুটির দু’দিনেও অফিস খোলা রেখে প্রকল্প অনুমোদনের কাজ চলল সবংয়ে।
একশো দিনের কাজে প্রতিটি পঞ্চায়েতে ২০ হাজার শ্রমদিবস সৃষ্টির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের ৩২টি পঞ্চায়েত তা পূরণ করতে পারেনি। এর মধ্যে সবং ব্লকেই রয়েছে ৬টি পঞ্চায়েত। গত ৫ জুন জেলা পরিষদের বৈঠকে নতুন জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে। ১৭ জুন ফের বৈঠক ডেকেছেন তিনি। তার আগে একশো দিনের কাজে গতি আনতে শনি ও রবিবার সবং ব্লকের অফিসগুলির ছুটি বাতিল করে কাজ চলল জোরকদমে।
একশো দিনের কাজে আশানুরূপ ফল করতে পারেনি সাঁকরাইল, গরবেতা-৩, পিংলার মতো আরও কিছু ব্লক। জেলায় এখন একমাত্র সবং পঞ্চায়েত সমিতিই রয়েছে কংগ্রেসের দখলে। একশো দিনের কাজে সেই সবং ব্লকের ১৩টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬টি পিছিয়ে পড়ায় শাসক তৃণমূল সমালোচনাও শুরু করে দিয়েছে। পরিস্থিতি সামলাতে শনিবারই সবং ব্লক অফিসের সভাগৃহে ব্লকের সব এক্সিকিউটিভ অ্যাসিস্ট্যান্ট ও নির্মাণ সহায়কদের নিয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন বিডিও ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। ছিলেন এলাকা থেকে নির্বাচিত জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূলের অমূল্য মাইতি, পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী দলনেতা হিমাংশু সাউ। বিডিও বিকাশ মজুমদার বলেন, “জেলাশাসক ১৭ জুন বৈঠক ডেকেছেন। তার আগে যাতে একশো দিনের কাজের কিছুটা অগ্রগতি হয়, সেই চেষ্টা করছি। তাই দ্রুত অনুমোদন দিয়ে কাজ শুরু করতেই শনি ও রবিবার অফিস খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি মাসেই জেলা সফরে আসার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাই কাজের ক্ষেত্রে প্রতিটি ব্লককে সতর্ক করেছেন জেলাশাসক। আগামী ১৭ জুন ফের বৈঠক ডেকে কাজের অগ্রগতির কতটা হল তার মূল্যায়ন করবেন জেলাশাসক। একশো দিনের কাজে পিছিয়ে থাকা প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতের সংসদপিছু অন্তত ৪টি করে কাজ শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সবং ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বলপাই, নারায়ণবাড়, সবং, দণ্ডরা, সার্তা, নওগা এই ৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত একশো দিনের কাজে পিছিয়ে রয়েছে। এর মধ্যে শুধু বলপাই পঞ্চায়েত রয়েছে তৃণমূলের দখলে। বাকি পাঁচটিতেই ক্ষমতাসীন কংগ্রেস। তাই কংগ্রেসকেই কাঠগড়ায় তুলছে তৃণমূল। সবংয়ের তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের সদস্য অমূল্য মাইতি বলেন, “আমাদের সরকার উন্নয়নের জোয়ার আনতে চাইছে। কিন্তু এই ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতি উন্নয়নমূলক কাজই করছে না। পঞ্চায়েত সমিতির গা-ছাড়া মনোভাবে বঞ্চিত হচ্ছেন গরিব মানুষ।” অভিযোগ নস্যাৎ করে ব্লক কংগ্রেস সভাপতি তথা সবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অমল পণ্ডা বলেন, “অনেক ব্লকই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি। তবু সবং নিয়ে রাজনৈতিক কারণে ইচ্ছাকৃত হইচই করা হচ্ছে।” পিছিয়ে পড়ার কারণ হিসেবে অমলবাবুর ব্যাখ্যা, একশো দিনের প্রকল্পে ১৭৩ টাকা মজুরি পায় শ্রমিকেরা। কিন্তু মাঠে ধান পড়ে থাকায় শ্রমিকেরা চাষের কাজে বেশি মজুরিতে কাজ করেছেন। তাই এই কাজে আগ্রহ ছিল না। তবে পরিস্থিতি এমন হওয়া যে বাঞ্ছনীয় নয় তা স্বীকার করে নিয়েছেন অমলবাবু। তাঁর কথায়, “ওই গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির কিছু ত্রুটি তো ছিলই। এখন ছুটি বাতিল করে কাজ হচ্ছে। ১৭ তারিখের মধ্যে প্রকল্প অনেকটা এগিয়ে যাবে বলে আশা করছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy