Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
কাঠগড়়ায় প্রেমিক

বিয়ের আগে গায়ে আগুন, মৃত্যু তরুণীর

বিনপুর থানার শিলদা এলাকার ছোটশুকজোড়া গ্রামের বাড়িতে শুক্রবার বিকেলে অগ্নিদগ্ধ হন মানা দাস (২০)। তিনি শিলদা কলেজের বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।

মানা দাস। নিজস্ব চিত্র

মানা দাস। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলদা শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৮ ০০:৩৪
Share: Save:

সাত দিন বাদে ছিল বিয়ে। তার আগেই পুড়ে মৃত্যু হল কলেজ পড়ুয়া এক তরুণীর। এই ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মৃতার প্রেমিকের বিরুদ্ধে।

বিনপুর থানার শিলদা এলাকার ছোটশুকজোড়া গ্রামের বাড়িতে শুক্রবার বিকেলে অগ্নিদগ্ধ হন মানা দাস (২০)। তিনি শিলদা কলেজের বিএ দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। শনিবার ভোরে মানার মৃত্যু হয়। তাঁর বাবা নবদ্বীপ দাস জানালেন, মানার সঙ্গে স্থানীয় যুবক রাজেশ চন্দের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। রাজেশ ও তাঁর পরিবার মানাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দিয়েছেন বলে অভিযোগ নবদ্বীপবাবুর। মানার মৃত্যুকালীন জবানবন্দি না মেলায় পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।

রাজেশের বাবা কলকাতায় কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা বাহিনীতে কর্মরত। মানার বাবা নবদ্বীপ দাসের অভিযোগ, পাঁচ বছর সম্পর্কের পরে সম্প্রতি রাজেশ জানিয়ে দেন, মানাকে বিয়ে করতে পারবেন না। মানার সম্মতি নিয়ে নবদ্বীপবাবু অন্যত্র মেয়ের বিয়ের ঠিক করেন। আগামী ২৭ এপ্রিল দিন বিয়ের ঠিক হয়েছিল। নবদ্বীপবাবুর অভিযোগ, গত ১৮ এপ্রিল রাজেশের ফোন পেয়ে মানা বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। রাতে মেয়ে বাড়ি না ফেরায় তিনি বিনপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। ১৯ এপ্রিল বিকেলে মানা ফিরে আসেন। নবদ্বীপবাবুর দাবি, বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে রাজেশ বেশ কয়েকবার মানার সঙ্গে সহবাস করেছিলেন। এমনকী ১৮ তারিখও মানার উপর শারীরিক নির্যাতন চালান রাজেশ। বিয়ের পরেও সম্পর্ক না রাখলে মানার স্বামীকে সব জানিয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো হয়।

মেয়ের কাছে সব শুনে রাজেশের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানানোর প্রস্তুতি নেন নবদ্বীপবাবু। শুক্রবার পুলিশে অভিযোগ দায়ের করবেন বলে মানাকে জানিয়েও দেন তিনি। এরপরই শুক্রবার বিকেলে মানা গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে নেয় বলে নবদ্বীপবাবুর দাবি। নবদ্বীপবাবু বলেন, “ঘটনার পরে বিনপুর থানায় ও প্রশাসনিক মহলে মেয়ের জবানবন্দি নেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছিলাম। কিন্তু শুক্রবার রাতে বিনপুর থানার পুলিশ যখন হাসপাতালে এসে পৌঁছয় তখন আর মানা কথা বলার মতো অবস্থায় ছিল না।’’

রাজেশ অবশ্য মানার সঙ্গে সম্পর্কের কথা মানকে নারাজ। ফোনে তিনি জানান, পোর্টট্রাস্টে চুক্তিভিত্তিক কাজের প্রশিক্ষণ নিতে তিনি এখন কলকাতায় আছেন। রাজেশের কথায়, “আমার পরিবার মানাকে মেনে নিয়ে চায়নি এটা ঠিক। তবে আমি স্থায়ী চাকরি করি না বলে মানার বাবাও আমার সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিতে চাননি। উনি জোর করে অন্যত্র মানার বিয়ে ঠিক করেছিলেন। গত বুধবার মানা কলকাতায় এসে ফোন করে দেখা করতে চেয়েছিল। দেখা করিনি। ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হচ্ছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

marriage Young girl
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE